ডেস্ক রির্পোট:- দখলদার ইসরাইলের নৃশংস হামলার মধ্যে অধিকৃত গাজায় দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। এ অবস্থায় গাজার ফিলিস্তিনিরা ‘দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে বলে হুঁশিয়ার করেছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ সংস্থা-ইউএনআরডব্লিউএ।
সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলে, ‘গাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সাহায্য নিয়ে যতোটা সম্ভব বেশি লোকের কাছে পৌঁছাতে পারতে হবে ইউএনআরডব্লিউএ-কে।’ সংস্থাটি বলছে, এই পরিস্থিতিতে গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তা বিতরণ করাই হচ্ছে ‘সবচেয়ে কার্যকর এবং নিরাপদ উপায়। গাজা উপত্যকায় সহায়তার নিরাপদ, নিরবচ্ছিন্ন এবং টেকসই প্রবেশাধিকার এখন জীবন ও মৃত্যুর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ ইসরাইলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এদিকে, গাজা উপত্যকার অনাহার মানবসৃষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারনি। সোমবার কায়রোতে অনুষ্ঠিত একটি সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। গাজা উপত্যকায় টানা ৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, সেখানকার এক-তৃতীয়াংশ বা কমপক্ষে ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। ফলে সেখানে মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতির জন্য ইসরাইলকে ব্যাপক চাপ দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মহল।
কায়রোতে মিসরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরি সঙ্গে একটি সংবাদ সম্মেলনে লাজারনি বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকায়ক্ষুধার প্রভাব ছড়িয়ে পড়া এবং দুর্ভিক্ষের প্রভাবকে রুখতে ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে ছোটার একটি প্রতিযোগিতায় নেমেছি আমরা।’ তিনি বলেন, সঠিক রাজনৈতিক সদিচ্ছার মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান করা এবং একে বিপরীতমুখী করা যেতে পারে। একইসঙ্গে গাজায় সীমান্ত ক্রসিংয়ের মাধ্যমে খাবারের ‘বন্যা’ বইয়ে দেয়া যেতে পারে। জাতিসংঘের এই সংস্থার প্রধান আরও বলেছেন, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামলা করা সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে ধ্বংসের লক্ষ্যে গাজায় বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করে ইসরাইল। এই হামলার সময় ইউএনআরডব্লিউএর ১৫০টিরও বেশি স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লাজারিনি বলেন, ‘আমরা এটিও জানি যে আটক হওয়া অনেক কর্মী অত্যন্ত কঠিন তদন্ত, দুর্ব্যবহার এবং অপমানের মধ্য দিয়ে গেছেন।’
গাজার সীমান্তবর্তী রাফাহ শহরে লাজারনির প্রবেশের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়। এ বিষয়ে জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমি আজ রাফাহ যেতে চেয়েছিলাম। তবে আমাকে এক ঘন্টা আগে জানানো হয়, সেখানে আমার প্রবেশ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।’ তার এই প্রত্যাখ্যানের সঙ্গে মিসরীয় সরকারের কোনও দায় ছিল না বলে স্পষ্ট করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শউকরি। তিনি বলেছেন, ‘আপনাকে ইসরাইলি সরকার প্রত্যাখ্যান করেছিল। এরকম উচ্চ পদে অধীনস্ত প্রতিনিধির প্রবেশের প্রত্যাখ্যান একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ।’ সূত্র : রয়টার্স।