মেহেদী হাসান পলাশ:- গত ১২ মার্চ, ২০২৪ তারিখে প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের চেয়ারম্যান নাথান বমের উপদেষ্টা লালএংলিয়ান বমের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। এ সাক্ষাৎকারে লালএংলিয়ান বম বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেন। বিস্তারিত আলোচনার সুবিধার্থে তার এ সাক্ষাৎকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশটুকুর দিকে আলোকপাত করা যেতে পারে:
‘প্রবা : শান্তি আলোচনা সফল হলে কেএনএফ কি সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধ করবে?
লালএংলিয়ান বম : চুক্তি হলে কেএনএফ অবশ্যই সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধ করবে।
প্রবা : আলাদা রাজ্য গঠনের দাবি উত্থাপন করেছিলেন? এখন ‘কুকি-চিন টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলর’ বা কেটিসি গঠনের নতুন দাবি উপস্থাপন করেছেন কেন?
লালএংলিয়ান বম : শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর আমরা বুঝতে পেরেছি, আলাদা রাজ্য গঠনের দাবি বাংলাদেশের সংবিধানের পরিপন্থি। কেএনএফ রাষ্ট্র ও সরকারের প্রতি আনুগত্যশীল। তাই পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি থেকে কেএনএফ সরে এসেছে। নতুন দাবি ‘কুকি-চিন টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলর’ গঠন। এর মধ্যে বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলার সাতটি উপজেলায় পৃথক স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।
প্রবা : স্বায়ত্তশাসন দাবির মাধ্যমে কি কেএনএফ পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাইরে থাকতে চাইছে?
লালএংলিয়ান বম : হ্যাঁ। তবে এই সাত উপজেলায় কুকি-চিন সম্প্রদায় ছাড়াও অন্য সম্প্রদায় ও ভাষাভাষীর মানুষ আছে। কেএনএফ সব জনগোষ্ঠী নিয়েই সরকারের সরাসরি অধীনে থেকে শান্তিতে বসবাস করতে চায়।
প্রবা: কেএনএফ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে বিশ্বাস করে কি না?
লালএংলিয়ান বম : অবশ্যই করে। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতি আস্থা আছে বলেই পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি থেকে সরে এসেছে কেএনএফ।’
এ সাক্ষাৎকারের সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে কেএনএফের পক্ষ থেকে পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসন ক্ষমতা সম্পন্ন স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবী থেকে সরে এসে কুকি-চিন টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার দাবী প্রকাশ যেটি ইতোপূর্বে দু’দফা সরাসরি আলোচনায় প্রকাশিত শর্তাবলীতে উল্লিখিত হয়নি। অর্থাৎ স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য প্রতিষ্ঠার দাবি থেকে সরে এসেছে কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ। তাদের মতে, বাংলাদেশের সংবিধানে স্বতন্ত্র রাজ্য প্রতিষ্ঠার কোন বিধান না থাকায় তারা এই দাবি সংশোধন করে কুকিচিন টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল বা কেটিসি প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে। এটি এই অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ডেভলপমেন্ট বলে আমার ধারণা। একটি অসংবিধানিক দাবি থেকে সরে আসার জন্য আমি কেএনএফ নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানাই এবং একই সাথে কুকি-চিন টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল বা কেটিসি প্রতিষ্ঠার দাবিটি বিবেচনাযোগ্য বলে মনে করি।
এখন সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই কেটিসি কিভাবে প্রতিষ্ঠা সম্ভব এবং তার আওতা, কার্যক্রম ও টার্মস এন্ড কন্ডিশনগুলো নির্ধারণ করা। কেননা এই কেটিসি কি সরাসরি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, নাকি আঞ্চলিক পরিষদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে অথবা আঞ্চলিক পরিষদের প্যারালাল একটি সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে; এই প্রতিষ্ঠান কি ভূখণ্ড ভিত্তিক হবে, নাকি জাতি গোষ্ঠী ভিত্তিক হবে- সেসব বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা প্রয়োজন। শান্তিচুক্তির আগে যে ভুলগুলো হয়েছিল, যে ভুলের কারণে শান্তিচুক্তি পরবর্তীকালে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভিন্ন রূপে অশান্তি ফিরে এসেছে এবং যে সমস্ত ভুলের কারণে শান্তিচুক্তি বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হয়েছে ও শান্তিচুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের পথে অন্তরায় সৃষ্টি হয়েছে; সেই একই ভুল যেন কেটিসি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে না হয় সে বিষয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা প্রয়োজন।
এ কথা অনস্বীকার্য যে, শান্তিচুক্তির মাধ্যমে সন্তু লারমাকে তিন পার্বত্য জেলার প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে তিন পার্বত্য জেলার প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। বলতে গেলে এটা ছিল শান্তিচুক্তির গোড়ার গলদের অন্যতম। কারণ সন্তু লারমা যেমন পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল জনগোষ্ঠীর নির্বাচিত বা মনোনীত বা সমর্থিত নেতা ছিলেন না কখনোই। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি বা জেএসএস একইভাবে তিন পার্বত্য জেলার সার্বজনীন সংগঠন হিসেবে সকল জনগোষ্ঠীর কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না কখনোই। ফলে এই শান্তিচুক্তি কখনোই পার্বত্য চট্টগ্রামের আপামর জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেনি। এবং একই সাথে তা একটি নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর শোষণের হাতিয়ার হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বেড়েছে শোষণ বৈষম্য ও বঞ্চনা। কেএনএফ সেই বৈষম্য ও বঞ্চনার উপজাত সৃষ্টি।
এতদ্বসত্ত্বেও শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি হয়েছে এবং শুরু থেকে অদ্যাবধি এর প্রধান হিসেবে জেএসএস সভাপতি সন্ত লারমা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে সন্তু লারমা বিগত ২৫ বছর প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছেন। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন ও উপজাতীয় শরণার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক ট্রাস্কফোর্স প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানগুলো শান্তিচুক্তির মাধ্যমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আঞ্চলিক পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন করা হয়েছে। একই সাথে পুলিশ ও প্রশাসনেও অফিসিয়ালি সন্তু লারমার অ্যাডভাইজারি ভূমিকা রয়েছে। এসবের মাধ্যমে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সন্তু লারমার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে, প্রস্তাবিত কেটিসিকে সরকার যদি স্বীকৃতি দিতে চায় তাহলে তাকে কি আঞ্চলিক পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন বা সুপারভিশন এর আওতায় রাখা হবে? কুকি-চিন ভুক্ত জনগোষ্ঠীর সাথে চাকমা সম্প্রদায়ের বর্তমান যে সম্পর্ক এবং কেএনএফের সাথে জেএসএসের যে সম্পর্ক তাতে এই ধরনের ভাবনা অনেকটা অলীক। কুকি-চীন জনগোষ্ঠী কখনোই চাকমা জনগোষ্ঠী, সন্তু লারমা বা জেএসএস এর নিয়ন্ত্রণে যেতে চাইবে না। কাজেই কেটিসি কখনোই আঞ্চলিক পরিষদের নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান বা অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান বা কোন ছায়া প্রতিষ্ঠান হতে চাইবে না।
এক্ষেত্রে সরকার যদি কেটিসিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনা করতে চায় কেএনএফ তাতেও রাজি হবে বলে মনে হয় না। কেননা বেশিরভাগ সময়েই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে যে সমস্ত মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী দায়িত্বপ্রাপ্ত হন তারা হয় চাকমা সম্প্রদায়ের, অথবা অতীতে কখনো জনসংহতি সমিতির বা এর অঙ্গ সংগঠনের সাবেক বা গোপন বা প্রকাশ্য সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী। ফলে সন্তু লারমার প্রতি তাদের এক ধরনের গভীর আনুগত্য রয়েছে। এটি কেএনএফ নেতৃবৃন্দের প্রবল আপত্তির জায়গা। এ কারণেই কেএনএফ পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতার বাইরে থাকার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে উক্ত সাক্ষাৎকারে।
এখন কেটিসি যদি একটি আঞ্চলিক সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সাথে তার সংঘাত অনিবার্য। কেননা এই রূপে যদি সরাসরি কেটিসি পরিচালিত হয় তা আঞ্চলিক পরিষদের প্যারালাল একটি সংগঠন হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াবে। এটি কখনোই সন্তু লারমা মেনে নেবেন না। এটি তার ক্ষমতা ও নেতৃত্বকে খর্ব ও চ্যালেঞ্জ করবে। তাছাড়া এ ধরনের প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান শান্তি চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের আইনি জটিলতা সৃষ্টি করবে। তবে শান্তিচুক্তি সংশোধন করে এ জটিলতার নিরসন করা সম্ভব। কিন্তু সন্তু লারমা তাতে রাজি হবেন বলে মনে হয় না।
এছাড়াও কুকি-চিন জনগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের যে সাতটি উপজেলাকে কেটিসির আওতাভুক্ত করতে চাইছেন। টেরিটেরিয়াল কাউন্সিল হিসেবে তারা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি এবং বান্দরবানের রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলাগুলোকে কেটিসির আওতাভুক্ত করতে চাইছেন। কিন্তু এই অঞ্চলের অধিকাংশ জনগণ কুকি-চিন জনগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রিত কোন প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ মেনে নেবে বলে মনে হয় না। কারণ শান্তিচুক্তি নিয়ে তাদের যে অভিজ্ঞতা সেই অভিজ্ঞতার আলোকে তারা আরেকটি একক জাতিগোষ্ঠী নিয়ন্ত্রিত বা প্রাধান্যযুক্ত কোনো আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের আওতায় যেতে রাজি হবেন বলে মনে হয় না। অন্যদিকে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বরকল, জুড়াছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলা মূলত চাকমা অধ্যুষিত। চাকমারাও কোনভাবেই আঞ্চলিক পরিষদ ছেড়ে কেটিসির নিয়ন্ত্রণে থাকতে রাজি হবে না। আবার বান্দরবানের রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় কুকি-চিন জাতিভুক্ত জনগোষ্ঠী থাকলেও সেখানে বিপুল পরিমাণ চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী বসবাস করে। সংখ্যা বিচার করলে সমন্বিতভাবে উক্ত অঞ্চলগুলোতে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই চাকমা মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের সাথে জেএসএসের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তারাও কেটিসির নিয়ন্ত্রণে যেতে রাজি হবে এমন কোনো লক্ষণ দৃশ্যমান নয়। বিদ্যমান অবস্থায় কেটিসি প্রতিষ্ঠা পার্বত্যাঞ্চলে একটি নতুন দ্বন্দ্বমুখর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে। সরকার নতুন করে আরেকটি অশান্তির বীজ পার্বত্য চট্টগ্রামে বপন করতে চাইবে কিনা সেটি কেবল সময়ই বলে দিতে পারে।
একই কেএনএফ যে ছয়টি জাতি গোষ্ঠীকে কুকি-চীন জাতিভুক্ত বলে তাদের সংগ্রামের সমর্থক বলে দাবি করছে, তারা কতটা কেএফএফকে সমর্থন করে তাও মীমাংসিত বিষয় নয়। গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, ছয়টি প্রান্তিক জাতি গোষ্ঠীর কথা বলা হলেও কেএনএফ মূলত বম জাতি গোষ্ঠী অধ্যুষিত একটি সংগঠন। যেমন জেএসএস একটি চাকমা অধ্যুষিত সংগঠন। কাজেই কুকি-চিনের দাবিকৃত অন্য পাঁচটি সম্প্রদায় বা জাতিগোষ্ঠী কুকি জাতীয়তাবাদের প্রতি কতটা একাত্ম বা অনুগত এবং কেএনএফের নেতৃত্বের প্রতি কতটা আস্থাশীল সেটি এখনো প্রমাণিত নয়। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ ছাড়া শুধুমাত্র একটি জাতিগোষ্ঠীর দাবির ভিত্তিতে বাকি অন্য সকল জাতি গোষ্ঠীর ভালো-মন্দ ও ভাগ্য নির্ধারণের ভার কেটিসির উপর অর্পণ করা বিজ্ঞজনোচিত সিদ্ধান্ত হবে না।
এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতে পারে, এতসব জটিলতা, প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কেএনএফের দাবীকৃত কেটিসি বা কুকি-চিন টেটোরিয়াল কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা আদৌ সম্ভব? উত্তর হচ্ছে, দু’পক্ষের সদিচ্ছা থাকলে সবকিছুই সম্ভব। এটি উক্ত অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যেমন জরুরী একই সাথে শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রান্তিক জাতিগোষ্ঠী সমূহের মাঝে যে বৈষম্য ও বঞ্চনার সৃষ্টি হয়েছে তার নিরসনে এ ধরণের উদ্যোগ জরুরী বলেও সংশ্লিষ্টদের অভিমত। বর্তমানে নির্মাণাধীন বিপুল পরিমাণ সীমান্ত সড়কের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে জনজীবনে অভূতপূর্ব পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এই সড়ক নেটওয়ার্কের পার্বত্য চট্টগ্রামের যোগাযোগ, কৃষি, অর্থনৈতিক ও জীবনমানের যে বিপুল উন্নয়ন ঘটতে চলেছে তা অর্থবহ করতে হলে এ অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। তাছাড়া সীমান্তবর্তী প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে যে ধরণের বিচ্ছিন্নতাবাদ ও খণ্ডিত জাতীয়তাবাদ ও ইনসার্জেন্সী মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে দুরে রাখতে হলে বঞ্চিত ও শোষিত মনোভাবাপন্ন জনগোষ্ঠীর ক্ষোভ নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। তবে তার পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সাথে বিস্তারিত আলোচনা সাপেক্ষে সংবিধানের আওতায় জাতীয় সার্বভৌমত্ব, কর্তৃত্ব ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিশ্চিত করা জরুরী।
♦ লেখক: চেয়ারম্যান, সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও সম্পাদক, পার্বত্যনিউজ।