ডেস্ক রির্পোট:- আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানে ক্যাম্পাসের ভেতরে ইফতার পার্টি আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১১ মার্চ) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্টার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলকে আসন্ন রমজান মাসে ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টির আয়োজন না করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।
তবে দেশ-বিদেশ বিভিন্ন সমালোচনার মুখে পড়ে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ইফতার পার্টি ইস্যুতে ফের বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রশাসন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতি বছর রমজান মাসে ইফতার পার্টি আয়োজনে বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্থিক সহায়তা করা হতো। তবে এ বছর পবিত্র রমজান মাসে সরকারিভাবে বড় করে ইফতার পার্টি উদযাপন না করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ কমাতে এবারের রমজানে সংশ্লিষ্ট কাউকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট যে কেউ নিজেদের অর্থায়নে ইফতার পার্টির আয়োজন করতে পারবে।
এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে এখনও প্রতিবাদ। আবার বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে এর প্রতিবাদে গণ-ইফতার কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও লেখক অধ্যাপক ডা. আসিফ নজরুল নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টি বন্ধের নোটিশ প্রথমে বিশ্বাস করিনি। এখন মনে হচ্ছে, এমন নোটিশ দেয়ার সাহস এরা পায় কোথা থেকে? আমি নিজে ইফতার পার্টি খুব একটা পছন্দ করি না। কিন্তু জানি যে, এটা আমার সাংবিধানিক অধিকার, ধর্মীয় অধিকার তো অবশ্যই। ইফতার পার্টি বন্ধ ঘোষণার তীব্র নিন্দা করছি। যেই থাকুন এই ঘোষণার নেপথ্যে অবিলম্বে এসব উস্কানিমূলক কাজ বন্ধ করুন। আমার আহ্বান আরও বেশি বেশি ইফতার পার্টি করেন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। তবে সেখানে অপচয় যেন না হয়, মাইকের ব্যবহার যেন না নয়, আর গরীব যেন বঞ্চিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। সবাইকে পবিত্র রামাদানের শুভেচ্ছা।
ওয়াহিদ আলম নামে একজন লিখেছেন, ইফতার পার্টি বন্ধ করার এমন সাহস তারা পায় কোথায়। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে সব জায়গায় ইফতার পার্টি হবে এটাই নিয়ম। কারণ মুসলমান হিসেবে আমরা যেকোনো জায়গায় ইফতার করতে পারি। যারা বাড়াবাড়ি করবে তাদের প্রতিরোধ করা হবে।
সাঈদ নামে একজন লিখেছেন, কনসার্টে ওরা নিষেধাজ্ঞা দেয় না, কিন্তু ইফতার মাহফিলে ওরা নিষেধাজ্ঞা দেয়। আসলে তারা এসব কাজের নিষেধাজ্ঞা দেয় না। তারা চায় এ দেশে যাতে ইসলামের আইন প্রতিষ্ঠা না হয়। এখন তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করলে ভবিষ্যতে এর মাশুল দিতে হবে। যারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাদের খুঁজে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
মো. আবছার হুজুর নামে নামে একজন লিখেছেন, কে কাকে নিয়ে কোথায় ইফতার আয়োজন করবে এটা রাষ্ট্র বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঠিক করে দেওয়ার কে? ইফতার এই জনপদের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের সাথে মিশে থাকা একটি পরিভাষা। মনে রাখতে হবে, সবকিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নেই। তাহলে মুসলিম জনতা আপনাদের এ দেশে থাকতে দিবে না।
তাহের শেখ নামে নামে একজন লিখেছেন, ওরা ইসলাম ও মুসলিমদেরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে নানান ঘটনার মধ্য দিয়ে। দিন শেষে ওরাই জিতে যায়, আর আমরা সয়ে যাওয়া জাতিতে পরিণত হচ্ছি।
নাজমুল হাসান প্লাবন নামে একজন লিখেছেন, মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা ৯২% মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে নয়, আমরা ইন্ডিয়া বা ইসরাইলে বসবাস করছি।
মো. মাঈনুদ্দিন আনিস নামে একজন লিখেছেন, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবশ্যই এ দেশে ইফতার পার্টি হবে ইনশাআল্লাহ। যারা এর প্রতিবাদ করবে তাদের প্রতিরোধ করা হবে।
নুর জাহিদ বাবলু নামে একজন লিখেছেন, মনে হচ্ছে এ দেশটা ভারতীয় অঙ্গরাজ্য। এখন যদি তারা জিতে চায় তাহলে তারা ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা দিবে এ দেশে মসজিদ বন্ধ করতে হবে।
জয়নাল আবেদীন জয় নামে একজন লিখেছেন, কোনো এক প্রতিষ্ঠানে ভোর বেলা কনসার্ট হয়! সেটাতে কোনো সমস্যা হয় না। আর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে মুসলমানদের মৌলিক বিষয়গুলোতে বাধা। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আরা যারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তাদের উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনতে হবে।