চট্টগ্রাম:- তিনদিন পর এস আলম গ্রুপের চিনি পরিশোধন কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। এ সময় এস আলম সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষের প্রতি গলিত চিনির রাসায়নিক তরল নদীতে না ফেলার নির্দেশ দেন।
এ দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানায়, এই দূষণের ফলে নদীরতীরে শনাক্ত করা ৬০০ প্রজাতির উদ্ভিদ হুমকির মুখে পড়বে।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনাদের (কারখানা কর্তৃপক্ষ) প্রতি আমরা একটা নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা বলতে পরিবেশ অধিদপ্তর, কলকারখানা পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, বিএসটিআইসহ আরও কয়েকটি সংস্থা।
নির্দেশনাটা হচ্ছে, এখানে কারখানা থেকে চিনির যে লাভাটা নদীতে গিয়ে পড়ছে, সেটা যেন আর না পড়ে। এটা আমরা আর কোনোভাবে অ্যালাউ করব না। কারখানার পাশেই প্রচুর জায়গা আছে। এখানে গভীর গর্ত করে বর্জ্যগুলো স্টোর করে রাখা যাবে।’
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, পরিবেশকে অক্ষুণ্ন রেখে কারখানার পোড়া বর্জ্য কারখানার ভেতরেই গভীর গর্ত করে সংরক্ষণ করতে হবে। এসব বর্জ্য নদীতে পড়লে বিভিন্ন জলজ প্রাণী অক্সিজেনের অভাবে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে এখনই ব্যবস্থা নিতে বলছি। এখন থেকে নদীতে যেন কারখানার কোনো তরল পানি না পড়ে।’
এদিকে চিনিকল থেকে কর্ণফুলী নদীতে নির্গত বর্জ্যে শুধু মাছসহ জলজ প্রাণী নয়, প্রায় ৬০০ প্রজাতির জলজ-স্থলজ উদ্ভিদও হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এস আলমের পোড়া চিনিকলের বিষাক্ত তরল কর্ণফুলীতে, ভেসে উঠছে মাছএস আলমের পোড়া চিনিকলের বিষাক্ত তরল কর্ণফুলীতে, ভেসে উঠছে মাছ
চিনিকলের আগুনে ভয়াবহ দূষণের পর আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেলের নেতৃত্বে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি টিম কর্ণফুলী নদীর দূষণ কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। অধ্যাপক রাসেল বলেছেন, ‘নদীতীরে শনাক্ত করা ৬০০ প্রজাতির উদ্ভিদই হুমকির মুখে পড়বে।’
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘অপরিশোধিত চিনির কাঁচামাল পড়েছে। এটির প্রভাব বাজারে পড়বে না। গোডাউন কিংবা অন্যান্য কারখানায়ও পর্যাপ্ত চিনির মজুদ রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে। রমজানের বাজারে দাম বৃদ্ধির মতো ক্রেতাদের আশঙ্কা পাওয়ার মতো কোন হুমকি নেই।’
এ দিকে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমানের নেতৃত্বে গঠন করা কমিটির সদস্যরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
গত ৪ মার্চ পৌনে ৪টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনি পরিশোধন কারখানার আগুন লাগে।