ডেস্ক রির্পোট:- শুষ্ক মৌসুম এলেই কমে যায় কাপ্তাই লেকের পানি। এর সঙ্গে বেড়ে যায় হালদা ও কর্ণফুলী নদীর পানিতে লবণাক্ততা। এ সময় চট্টগ্রাম ওয়াসাও তুলনামূলক কম পানি উত্তোলন করতে পারে। ফলে কমছে পানি উৎপাদন। এর প্রভাব পড়ছে বাসা-বাড়িতে। গত বছরের এপ্রিল-মে মাসেও ওয়াসার পানিতে অসহনীয় মাত্রায় লবণ পানি মিলেছিল। এবার গ্রীষ্ম মৌসুমের আগেই লবণাক্ত পানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
জানা যায়, কাপ্তাই লেক থেকে পানি ছাড়ার ৫টি ইউনিট আছে। এর মধ্যে ৪টি বন্ধ। ফলে তৈরি হয় সংকট। কাপ্তাই লেকে স্বাভাবিক অবস্থায় পানি থাকে সর্বোচ্চ ১০৯ ফুট। চলতি মার্চে পানি থাকার কথা ৯২ দশমিক ৬৮ ফুট। কিন্তু বর্তমানে পানি আছে ৮৩ দশমিক ৬১ ফুট। পানি কম থাকায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে একটি মাত্র ইউনিট চালু আছে। এতে বঙ্গোপসাগরের লবণ পানি জোয়ারের সময় কর্ণফুলী নদী হয়ে হালদায় প্রবেশ করছে। হালদা নদীতে লবণ পানির কারণে ওয়াসার দুটি প্রকল্পে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ওয়াসার এ দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে পানি উৎপাদন হয় দৈনিক প্রায় ৫০ কোটি লিটার। কিন্তু হালদা নদীতে লবণ ও কর্ণফুলী নদীর পানির স্তর কমে যাওয়ায় বর্তমানে পানি উৎপাদন হচ্ছে দৈনিক প্রায় ৪৮ কোটি লিটার। তাছাড়া মোহরা ও শেখ রাসেল পানি শোধনাগারে উৎপাদিত পানিতে লবণের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে আগামীতে পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, কাপ্তাই লেক থেকে পানি কম ছাড়া হচ্ছে। ফলে হালদার পানিতে মাত্রাতিরিক্ত লবণ পাওয়া যাচ্ছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিলিটার পানিতে সর্বনিম্ন ৪০ থেকে সর্বোচ্চ ২১০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণ পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় জোয়ারের সময় মোহরা পানি শোধনাগার ও মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি শোধনাগারে ৫ ঘণ্টা পানি উৎপাদন বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এতে ওয়াসার পানি উৎপাদন কিছুটা কমেছে। এছাড়া কর্ণফুলী নদীর পানির স্তর কমে যাওয়ায় কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প-১ এবং ২ এর উৎপাদনও কিছুটা কমেছে। সংকট কাটাতে রেসনিংয়ের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। জানা যায়, ওয়াসা বর্তমানে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-১ থেকে দৈনিক ১৪ কোটি লিটার, শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার-২ থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার, মোহরা পানি শোধনাগার থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার, শেখ রাসেল পানি শোধনাগার থেকে দৈনিক ৯ কোটি লিটার এবং গভীর নলকূপ থেকে দৈনিক ৪ কোটি লিটার দৈনিক মোট ৪৫ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে। নগরে বর্তমানে পানির চাহিদা প্রায় ৫৫ কোটি লিটার। কিন্তু লবণাক্ততার কারণে উৎপাদন আরও কমিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে ওয়াসার আবাসিক সংযোগ ৭৮ হাজার ৫৪২টি ও বাণিজ্যিক সংযোগ ৭ হাজার ৭৬৭টি। ৭৭০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে ওয়াসা পানি সরবরাহ করে। তবে অধিকাংশ লাইনই পুরোনো।বাংলাদেশ প্রতিদিন