আন্তর্জাতিক ডেস্ক:- মায়ানমারে বাধ্যতামূলক সামরিক বাহিনীতে যোগদানের আদেশ দেশটির তরুণরা প্রত্যাখ্যান করছে। অনেকেই জান্তা বাহিনীতে যোগদান এড়াতে পালিয়ে বিদ্রোহী গণতন্ত্রপন্থি গোষ্ঠীগুলোতে যোগদানের পরিকল্পনা করছে। আবার অনেকে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
গতকাল সোমবার সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, মায়ানমারে এমন পরিস্থিতির সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে গণতন্ত্রপন্থি পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) ও কারেন্নি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্সের (কেএনডিএফ) মতো বিদ্রোহী বাহিনীগুলো। কেএনডিএফের যোদ্ধা ২৭ বছর বয়সী জন পাও ‘দিস উইক ইন এশিয়া’-তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তরুণদের বিদ্রোহী বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল, বহু তরুণই জান্তা বাহিনীতে যোগদান এড়াতে আত্মগোপনে যাচ্ছেন। কেউ কেউ পালিয়ে পাশের দেশগুলোতেও যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া দেশটিতে অবস্থিত থাই দূতাবাসের সামনে ভিসা প্রত্যাশীদের দীর্ঘ সারিও দেখা গেছে।
জান্তা সরকার এরই মধ্যে বর্তমান রাজধানী শহর নেইপিদো ও সাবেক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্য থেকে সেনাবাহিনীতে যোগদানে সক্ষম ব্যক্তিদের নামের তালিকা চেয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এপ্রিল থেকেই নতুন ব্যাচের সামরিক প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার কথা। জান্তা বাহিনীর লক্ষ্য, প্রতি মাসে ৫ হাজার জনকে সামরিক প্রশিক্ষণে পাঠানো। পঞ্চম ব্যাচ থেকে মেয়েদেরও অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
এদিকে কারেন রাজ্যের মায়াওয়াদ্দি শহরতলির বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল শোয়ে কোকোতে কাজ করা কর্মীদের থেকে কর আদায় শুরু করেছে কারেন বর্ডার গার্ড ফোর্স (বিজিএফ)। গতকাল মিয়ানমার নাউয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।
এর আগে গত মাসে বিজিএফের পক্ষ থেকে দেওয়া এক ঘোষণায় জানানো হয়, তারা আর জান্তা সরকারের কাছ থেকে বেতন বা অন্যান্য আর্থিক সহায়তা নিচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে, আয়ের বিকল্প উৎস হিসেবেই কর আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
শোয়ে কোকো বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাকা ক্যাসিনোর এক কর্মচারী জানিয়েছেন, সেখানে কমপক্ষে ২৪টি কোম্পানির শত শত কর্মী কাজ করেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে শ্রমিকদের উদ্দেশে দেওয়া বিজিএফের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখন থেকে প্রত্যেককে ৮ হাজার ৮৯১ থাই বাথ (২৪৮ ডলার) আরবান ডেভেলপমেন্ট ফান্ডে কর হিসেবে দিতে হবে।
তবে এই ইস্যুতে সেখানকার কোম্পানিগুলোর প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। বিজিএফের আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্যও প্রকাশ করেনি গণমাধ্যম। সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট/ মায়ানমার নাউ