ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর বিপন্ন ভাষা বইয়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৩৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- দ্বিভাষিক অভিধান ও অনূদিত বইয়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর ভাষা। বিপন্ন ঘোষিত ঠার, কোচ ও ঢাকাইয়া উর্দুর দ্বিভাষিক অভিধান প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী চাকমা, মারমা, ককবরক, গারো, কুড়মালি ও সাদরি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (আমাই) অনুষ্ঠানে এসব প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসবের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার একটি মিথস্ক্রিয়া তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ প্রসঙ্গে ছয়টি ভাষায় অসমাপ্ত আত্মজীবনীর অনুবাদের মুখবন্ধে আমাইয়ের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ বলেন, এই অনুবাদের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার ইতিহাস ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির বয়ান ও ঘটনাপ্রবাহ নৃগোষ্ঠীর ভাষায় রূপান্তরিত হওয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ভাষাটির অবয়বগত, প্রকাশগত এবং ভাবগত বিকাশ ঘটবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার যেমন মিথস্ক্রিয়া তৈরি হবে, তেমনি বাঙালি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মানসিক ঐক্যবন্ধনও দৃঢ় হবে।

আমাই-সংশ্লিষ্টরা জানান, বেদেদের ঠার ভাষা, উর্দুসদৃশ ঢাকাইয়া উর্দু ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের কোচ ভাষা বর্তমানে বিপন্ন ভাষার তালিকায় রয়েছে। ফলে এই ভাষাগুলো যেন হারিয়ে না যায়, সে জন্য বাংলা ভাষায় এসব ভাষার অভিধান তৈরি করা হয়েছে। ২০১১ সালে ঠার ভাষার লোকসংখ্যা ছিল এক থেকে দুই লাখ। এটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা। অন্যদিকে নৃগোষ্ঠী কোচের ভাষার নামও একই। এটি চীনা-তিব্বতি পরিবারভুক্ত ভাষা। ১৯৯১ সালে এ ভাষাভাষীর লোকসংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৬৩১ জন এবং ২০১১ সালে ছিল ১৬ হাজার ৯০৩ জন। অন্যদিকে রাজধানীর পুরান ঢাকার কিছু লোক উর্দু ভাষার মতো ভাষায় কথা বলে, যা ঢাকাইয়া উর্দু নামে পরিচিত।

সাদরি ভাষায় অসমাপ্ত আত্মজীবনী অনুবাদ করেন যোগেন্দ্রনাথ সরকার। অসমাপ্ত আত্মজীবনীর সাদরি ভাষায় লেখ্যরূপ ‘নিশিরাল নিজেকজীউক্যার কাহিনী’। চাকমা ভাষায় অনুবাদের মূল্যায়নকারী ছিলেন চাকমা ভাষা বিশেষজ্ঞ আনন্দ মোহন চাকমা। মারমা ভাষার অনুবাদের মূল্যায়নকারী ছিলেন হ্লাসিংথোয়াই মারমা। কুড়মালি ভাষার মূল্যায়নকারী ছিলেন ডাক্তার নির্মল চন্দ্র মাহাতো ও কুড়মালি কবি সুনীল মাহাতো। করবরক ভাষার মূল্যায়নকারী বসুন্ধরা ত্রিপুরা। গারো ভাষার ছিলেন মাথুরা বিকাশ ত্রিপুরা।

ছয়টি নৃভাষায় অসমাপ্ত আত্মজীবনী অনুবাদ ব্যবস্থাপনা পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন আমাইয়ের ইউনেসকো ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুর রহিম। সদস্যসচিব ছিলেন আমাইয়ের উপপরিচালক নিগার সুলতানা। সদস্য হিসেবে ছিলেন উপপরিচালক মিজানুর রহমান, নাজমুন নাহার ও সংগীতা রুদ্র।

সার্বিক বিষয়ে আমাইয়ের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ বলেন, বিপন্ন মাতৃভাষার মধ্যে বেদেদের ভাষা ঠার, ঢাকাইয়া উর্দু ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের কোচ ভাষার ওপর দ্বিভাষিক অভিধান প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশগামীদের জন্য বহুভাষী পকেট অভিধান (৫ বইয়ে ১৬ ভাষা), জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী ছয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় অনুবাদ এবং মাতৃভাষার ওপর বিশ্বকোষ প্রস্তুত করা হয়েছে। যার মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০২২ সালে জনশুমারির তথ্য অনুযায়ী, দেশে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর সংখ্যা ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৮ জন। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ বাস করে চট্টগ্রাম বিভাগে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাস করে রাজশাহী বিভাগে ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশ। জনসংখ্যার মধ্যে পুরুষ ৪৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ ও নারী ৫০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।খবরের কাগজ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions