ডেস্ক রিরোট:- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ১৫০ শয্যার বার্ন ইউনিট প্রকল্পের বিষয়টি আগামীকাল (আজ) প্র্রি–একনেক মিটিংয়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। গতকাল শনিবার সকালে চমেক হাসপাতালের নিচতলায় আইসিইউ ও আইসোলেশন ওয়ার্ড উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন এই চট্টগ্রামে যেন একটা বার্ন ইউনিট হয়। আমরা কাজ মোটামুটি গুছিয়ে নিয়ে এনেছি। চায়নিজদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। আগামীকাল (আজ) প্রি–একনেক মিটিংয়ে বার্ন ইউনিটের বিষয়টি তোলা হবে। এরপর ডিপিপি পাঠানো হবে। ডিপিপি পাস হলেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। সবাই সাহায্য করলে দ্রুত ১৫০ শয্যার বার্ন ইউনিটের কাজ শুরু হবে। পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট হলে চট্টগ্রামে আগুনে পোড়া রোগীরা উন্নত চিকিৎসা পাবে। এখান থেকে অনেক রোগী ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যায়। এ বার্ন ইউনিটে অত্যাধুনিক আইসিইউ, এইচডিইউ ও অপারেশন থিয়েটার (ওটি) সুবিধা থাকবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মুমূর্ষু রোগীদের জীবন বাঁচাতে আইসিইউ ইউনিট ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। আমি এই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। এটি উদ্বোধন করতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। চট্টগ্রাম মেডিকেলে আইসিইউ ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। আগামীতে সারা দেশে স্বাস্থ্য খাতে আইসিইউ সেবা আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমি চাই প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষ সেবা পাক। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আমার যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। তাই দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার পরিবর্তন ঘটাতে চাই।
আইসিইউ ও আইসোলেশন ওয়ার্ড উদ্বোধন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও কঙবাজার মেডিকেল কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর হাসপাতালের নির্মাণাধীন ক্যান্সার–কিডনি ও হৃদরোগ ভবন এবং ভেনম রিসার্চ সেন্টার পরিদর্শন করেন। এছাড়া মন্ত্রী চমেক হাসপাতাল প্রশাসন, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। শেষে চমেকের শহীদ শাহ আলম বীরউত্তম মিলনায়তনে শিক্ষক–শিক্ষার্থী ও ডাক্তারদের সাথে আলোচনা সভায় যোগ দেন।
সভায় তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ আমাকে ডাক্তার বানিয়েছে। এই কলেজ ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়িয়েছি। তাই মেডিকেলের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমি আপনাদের কাছে সহযোগিতা চাই। আপনারা সবাই সহযোগিতা করলে আমি প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দায়িত্ব সফলভাবে পালন করতে পারব।
তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ডাক্তারদের তুলনায় আমাদের দেশের ডাক্তারদের মান কোনো অংশেই কম নয়। বরং বিদেশি ডাক্তারা যেখানে ব্যর্থ হয় সেখানে আমাদের দেশীয় ডাক্তাররা সফল। দরকার শুধু প্রচেষ্টা ও একাগ্রতা। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান যদি বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার হতে পারে, আপনাদের সহযোগিতায় এদেশের স্বাস্থ্যসেবাও এক নম্বরে উঠে আসবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রোগী মারা গেলেই ডাক্তারদের ওপর হামলা হয়। ডাক্তারকে পুলিশে নিয়ে যায়, ক্লিনিক–হাসপাতালে ভাঙচুর হয়। এটা হতে দেওয়া যাবে না। এটা বন্ধে আগামীতে উদ্যোগ গ্রহণ করব। তবে কোনো ডাক্তার যদি দায়িত্বে অবহেলা করে, রোগীর সেবা দিতে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যায়, তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না। চমেকের শিক্ষার্থী ও নার্সিং শিক্ষার্থীদের দেশকে ভালোবেসে সেবা করার জন্য নিজেদের তৈরি করার আহ্বান জানান তিনি।