আন্তর্জাতিক ডেস্ক:- অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের তিন বছর হওয়ার আগেই পরাজয়ের শঙ্কা গ্রাস করেছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার। বিরোধী বাহিনীগুলোর হামলার জেরে একের পর এক এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে সামরিক বাহিনী।
দেশটির থিংক ট্যাংক ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির (আইএসপি) তথ্যানুযায়ী, এরই মধ্যে ৪৩ শতাংশের বেশি এলাকা বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এ ছাড়া থাইল্যাণ্ডভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানিয়েছে, সারা দেশের ৩৩টি শহর নিয়ন্ত্রণ এখন বিদ্রোহীদের হাতে। অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য তাদের সরঞ্জামসহ বিদ্রোহী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর দূরবর্তী যেসব ঘাঁটি রয়েছে- সেগুলোতে রসদ পাঠানোও এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বিদ্রোহীরা রসদবাহী গাড়িতে হামলা করছে। ভরসা ছিল কেবল হেলিকপ্টার। তাও ইদানীং গুলি করে ভূপাতিত করা হচ্ছে।
সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে বড় সংকট হলো তাদের যোদ্ধারা আর লড়তে চাইছে না। অনেক সেনাই প্রতিবেশী ভারতে পর্যন্ত পালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সেনার সংখ্যা ৬০০ জন ছাড়িয়েছে।
সম্প্রতি শান রাজ্যে পরাজিত ছয় জেনারেলের সঙ্গে বিদ্রোহীদের একসঙ্গে পানীয় পানের ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। যে ভিডিওতে তাদের চেহারায় অপমানবোধের চেয়ে স্বস্তিই বেশি ফুটে উঠেছে। তবে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করার পর ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। অন্যদের সতর্ক করতেই তাদের এ সাজা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ ঘটনা স্পষ্ট করেছে যে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে পড়েছে। এ অবস্থায় নতুন করে সেনা সংখ্যা বাড়ানোও জান্তা সরকারের জন্য কঠিন।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার প্রতি চীনের যে দৃঢ় সমর্থন ছিল- তাও এখন কিছুটা শিথিল হয়ে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। তিনটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী চীনের সঙ্গে সীমান্তের বেশির ভাগ এলাকাই এখন নিয়ন্ত্রণ করে, বাণিজ্যিক ও নিরাপত্তাজনিত কারণেই তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হচ্ছে বেইজিংয়ের। সম্প্রতি বিদ্রোহী ও সামরিক বাহিনীর মধ্যকার আলোচনায় মধ্যস্থতাও করেছে তারা। যেখানে কার্যত চীনকে নিরপেক্ষ ভূমিকায় দেখা গেছে। সূত্র: বিবিসি