শিরোনাম
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ, বদিউল বললেন, ‘বিবেচনায় রয়েছে’ বান্দরবানে নৌকা বাইচ দিয়ে ক্রীড়া মেলা শুরু রাঙ্গামাটিতে সাফজয়ী পাহাড়ের তিন কন্যাকে উষ্ণ সংবর্ধনা পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, মামলার প্রস্তুতি শেখ মুজিব দেশে ফ্যাসিবাদের জনক : মির্জা ফখরুল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীর হাতে পিটুনি নেতাদের বাঁচার উপায় বাতলে দিলেন তারেক রহমান দেশে মাদক ঢুকছে নতুন রুটে, পাচার হচ্ছে ট্রেনেও নামে-বেনামে দেওয়া হয় গায়েবি মামলা,দণ্ডিত বিএনপি নেতাদের নির্বাচনী দুয়ার খুলছে

কেউ বলতে পারবে না ভোট রাতে হয়েছে—বিজয় সমাবেশে শেখ হাসিনা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১৫৭ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এবারের নির্বাচন নিয়ে কেউ বলতে পারবে না যে, রাতে ভোট দিয়েছে, দিনের ভোট রাতে দিয়েছে, ভোট কারচুপি হয়েছে, তা কিন্তু বলার কোনো ক্ষমতা নেই। এবার অত্যন্ত স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেটা আপনারা দেখেছেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। এবার অত্যন্ত স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় উপলক্ষে গতকাল বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের বিজয় সমাবেশে সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

নির্বাচনের পর প্রথম বিজয় সমাবেশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জনসমুদ্রে রূপ নেয়। জনসমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে সব বাধা, ভয়ভীতি উপেক্ষা করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার জন্য দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে, এ নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শত বাধা, ভয়ভীতি, অগ্নিসন্ত্রাস সবকিছু উপেক্ষা করে জনগণ নির্বাচন করেছে, নিজের ভোট দিয়েছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষ ভোট দিয়েছে। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসায় কেউ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। জনগণের শক্তিই যে বড় শক্তি, সেটা এ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণ হয়েছে। ২০০৯ সালের পর প্রতিটি নির্বাচনে মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। কারণ, জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে এই আওয়ামী লীগ। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যদি সরকারে না আসত তাহলে কিন্তু এই দেশ আর এগোতে পারত না। আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব; যে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ শিক্ষাদীক্ষা এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে স্মার্ট হবে। ইনশা আল্লাহ উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব। আমরা আপনাদের সেবা করার সুযোগ পেয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব ইনশা আল্লাহ।

৭ জানুয়ারির নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এবারের নির্বাচন নিয়ে কেউ বলতে পারবে না যে রাতে ভোট দিয়েছে, দিনের ভোট রাতে দিয়েছে, ভোট কারচুপি হয়েছে, এসব বলার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, অনেকেরই অনেক রকম স্বপ্ন আছে। অনেকেই এ নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়েছিল কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনে মানুষ যাতে ভোট দিতে না আসে সেটা ঠেকাতে চেয়েছিল কিন্তু তারপরও ৪১ দশমিক ৮ ভাগ ভোট পড়েছে। এটা সোজা কথা নয়। এ কারণে এককভাবে আওয়ামী লীগ এবং এর সমমনা দল যখন নির্বাচন করেছে তখন আরেকটি দল নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। আর এবারের নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠার সুযোগ নেই। কারণ অত্যন্ত স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবার অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেটা আপনারাই দেখেছেন।

নির্বাচন নিয়ে সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, অবাক লাগে যখন মিলিটারি ডিক্টেটররা জনগণের ভোট কারচুপি করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসত, তখন সেই নির্বাচন নিয়ে যারা কথা বলত না, আর আজকে যখন আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি, জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি তখনই আমাদের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বিশাল এ জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি আবু আহম্মেদ মন্নাফী, উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এ মান্নান কচি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মেজবাহুল ইসলাম সাচ্চু, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ। জনসভা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম। জনসভায় দেশের বরেণ্য শিল্পী মমতাজ বেগম ও ফকির শাহাবুদ্দিনের কণ্ঠে দেশের গান উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর এটাই ছিল আওয়ামী লীগের প্রথম কোনো বড় সমাবেশ। এ কারণে মানুষের স্রোত নামে জনসভায়। নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর এ জনসভাকে ঘিরে বিজয়ের উৎসবে মেতে ওঠে সর্বস্তরের মানুষ। বেলা আড়াইটায় জনসভার সময় নির্ধারিত থাকলেও দুপুর ১২টার পর থেকেই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে মিছিলের ঢল নামে। মহাবিজয়ের আনন্দে বাদ্যবাজনার তালে তালে নেচেগেয়ে, বর্ণিল পোশাক পরে হাজার হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত হতে থাকেন জনসভায়। ঢাকা মহানগরীর ১৫টি আসনসহ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সব থানা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন থেকে বড় বড় শোডাউন করে জনসভায় যোগ দেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণ।

বিকাল ৪টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসভাস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগেই বিশাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান উপচিয়ে শাহবাগ, টিএসসি মোড় হয়ে দোয়েল চত্বর, মৎস্যভবন হয়ে হাই কোর্ট, প্রেস ক্লাবসহ পুরো এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালেও অজস্র মিছিল আসতে দেখা যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে। মাঠে জায়গা না পেয়ে হাজার হাজার নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষকে রেকর্ড করে টানা পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনতে আশপাশের এলাকার সামনে টানানো মাইকের নিচে জটলা করতে দেখা যায়। তবে তীব্র জনস্রোতের কারণে এ এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, এবার অত্যন্ত স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেটা আপনারা দেখেছেন। নির্বাচন কমিশন আইন করে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছি। সেই নির্বাচন কমিশনকে আমরা নির্বাচন পরিচালনা করতে দিয়েছি। কোনোরকম হস্তক্ষেপ আমরা করিনি, সহযোগিতা করেছি। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, প্রশাসন থেকে শুরু করে সবকিছু নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত ছিল। যেন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়। আমরা কখনো হস্তক্ষেপ করিনি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সশস্ত্র বাহিনীসহ যারা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।

নির্বাচন বন্ধ করতে চলা নানা ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভনেত্রী বলেন, অনেকেরই অনেক রকম স্বপ্ন আছে, অনেকেই নির্বাচন বন্ধ করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে। নির্বাচনে মানুষ যাতে ভোট দিতে না আসে, নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল, তারপরও ৪১ দশমিক ৮ ভাগ ভোট পড়েছে। এটা সোজা কথা নয়! আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সমমনা দল যখন নির্বাচন করেছে আরেকটি দল তখন নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় নির্বাচন কমিশনকে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সর্বতো সহযোগিতার জন্য সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও ধন্যবাদ জানান প্রত্যেকটা জিনিস পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে তুলে আনার জন্য। ফলে মানুষের মাঝে সচেতনতা বেড়েছে।

আওয়ামী লীগের এমপিদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করেছি এবং আজকে পার্লামেন্টারি পার্টির সভায় আমাকে সর্বসম্মতিক্রমে তাদের নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্যদের প্রতি তাঁর ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এখন রাষ্ট্রপতির কাছে তিনি চিঠি দেবেন, কেননা সরকার গঠন করার জন্য অনুমতি নিতে হবে এবং এরপর সরকার গঠন করব। এ সমাবেশের পরেই তিনি বঙ্গভবনে যাবেন বলেও উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে দেশি-বিদেশি কিছু গোষ্ঠীর অপতৎপরতার সমালোচনা করে বলেন, আজকে আমরা মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি। গণতন্ত্রকে সুসংহত করেছি। দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের ধারা আছে বলে মানুষের ভাগ্যের উন্নতি হয়েছে। সবদিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের ও বাইরের কিছু দালাল শ্রেণির লোক আছে, আমাদের উন্নয়ন তাদের ভালো লাগে না। মনে হয়, অনির্বাচিত কেউ এলে তাদের ভালো লাগে। আমি জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই, তারা ভোট দিয়ে আমাদের সমর্থন জুগিয়েছে।

সব ভয়ভীতি ও বাধা উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ২০১৩-১৪ সালের মতো এবারও তারা (বিএনপি) ধ্বংসাত্মক কাজ শুরু করেছে। ভোট বর্জনের জন্য লিফলেটও বিতরণ করেছে। আমরা বাধা দিইনি। কিন্তু জনগণ শত বাধাবিপত্তি ও অগ্নিসন্ত্রাস এবং ভয়ভীতি মোকাবিলা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে, তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।

জনগণের সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি ফিরে আসি ’৮১ সালে এমন একটি দেশে, যেখানে আমার বাবা-মায়ের হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে মন্ত্রী বানায়, ক্ষমতায় বসায়। একদিকে খুনি আরেকদিকে যুদ্ধাপরাধী, তারা ক্ষমতায়। সে সময় আমি দেশে ফিরে আসি। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছি। এতটুকু বলতে পারি, আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। মানুষের জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছি।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির ভাগ্য গড়ার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর পুরো জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের কোনো কিছু ছিল না। থাকার ঘর ছিল না, বাড়ি ছিল না, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল এ দেশের মানুষ। সেই জাতির জন্য, তাদের ভাগ্য গড়ার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেন।

তিনি বলেন, পাকিস্তানি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছিলেন এই বাংলাদেশে; সবার আগে ছুটে এসেছিলেন এই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, যেখানে তিনি ভাষণ দিয়েছিলেন। এ দেশে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষার কোনো কিছু ছিল না। প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত। একবেলা খাবার পেত না, দিনের পর দিন না খেয়ে তাদের জীবন কাটাতে হয়েছে। সেই মানুষদের মুক্তির জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, এ দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কী কী কাজ করা দরকার, একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশকে কীভাবে তিনি গড়ে তুলবেন সেসব বিষয়ে জাতির পিতা সেই ভাষণেই উল্লেখ করেছিলেন, যে ভাষণ তিনি এ জায়গায় দাঁড়িয়ে দিয়েছিলেন। এ ভাষণ যখন শুনি, আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই। দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। সেখানে তাঁকে (বঙ্গবন্ধু) ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হতো না। সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নভাবে রাখা হয়েছিল তাঁকে। এমনকি একটি পত্রিকাও তাঁর জন্য রাখা হয়নি। বঙ্গবন্ধুর ফাঁসির হুকুম হয়ে গিয়েছিল। সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে লন্ডন হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু। দেশে পা রেখেই ছুটে যান বাংলার জনগণের সামনে। ১০ জানুয়ারি এখানেই তিনি ভাষণ দেন। সেই ভাষণে একটি দেশের ভবিষ্যৎ, উন্নয়ন, সব পরিকল্পনা, দুঃখী মানুষের হাসি ফোটানোর পরিকল্পনা, মহান মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ সেটা তিনি তুলে ধরেছিলেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions