এবার আসনপ্রতি ইসির ব্যয়ের রেকর্ড

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ১১৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে এবারই প্রথম প্রিজাইডিং-পোলিং অফিসারসহ নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের দুদিনের সম্মানী ভাতা দেয়া হবে। এর ফলে আগের নির্বাচনের তুলনায় এবারে ব্যয় হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ।

প্রাথমিকভাবে নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা খরচের কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচনের ব্যয় দু হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন।

ইতোমধ্যেই সরকার এই জন্য সাতশ কোটি টাকার বেশি ছাড় করেছে, যা নির্বাচন কমিশন জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে বরাদ্দ দিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেছেন, কর্মকর্তাদের দুদিনের সম্মানির সাথে প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপকরণে দাম বৃদ্ধির কারণে স্বাভাবিকভাবেই এবার ব্যয় বাড়ছে। পোলিং এর সাথে জড়িত কর্মকর্তারা এবারের নির্বাচনে একদিনের বদলে দুদিনের সম্মানী পাবেন।

তবে বেসরকারি পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান জানিপপের চেয়ারম্যান প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিমউল্ল্যাহ বলছেন সব দল না আসায় এ নির্বাচনে ঝুঁকি বেশি এবং সে কারণেই ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জড়িত কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত প্রণোদনা দেয়ায় ব্যয় বেড়ে গেছে।

কমিশনের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারসহ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দেশ জুড়ে প্রায় নয় লাখ কর্মকর্তা নির্বাচনের কাজ করবেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি-সহ তাদের সমমনা ও মিত্র দলগুলো এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

একজন ম্যাজিস্ট্রেটের জন্যই ব্যয় হবে ৫০ হাজার:-

ইতোমধ্যে যে সব জায়গায় নির্বাচনের খরচ নির্বাহের জন্য নির্বাচন কমিশন টাকা ছাড় দিয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা এবার একদিনের বদলে দুদিনের সম্মানী ভাতা পাবেন।

একদিনের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার চার হাজার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার তিন হাজার ও পোলিং অফিসার দুই হাজার করে টাকা পাবেন। এছাড়া যাতায়াত ভাড়ার জন্য তারা সবাই অতিরিক্ত জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে পাবেন।

এছাড়াও প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোট প্রদানের গোপন কক্ষ ও বেষ্টনীর জন্য প্রতিটি কক্ষের জন্য আটশ টাকা করে দেয়া হবে।

প্রায় বারো কোটি ভোটারের এবারের নির্বাচনে সারা দেশে তিনশ সংসদীয় আসনের মোট কেন্দ্র থাকবে ৪২ হাজারেরও বেশি।

এছাড়াও ব্যালট পেপার আনা-নেওয়া, রিটার্নিং অফিসারের সহায়ক কর্মকর্তাদের যাতায়াত ছাড়াও সারা দেশে যে সব ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনের দিন কাজ করবেন তারাও ভাতা পাবেন।

ম্যাজিস্ট্রেট বা ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা সম্পন্ন কর্মকর্তারা নির্বাচনের আগে ও পরের দুই দিনের সহ মোট পাঁচ দিনের জন্য দিনে জনপ্রতি নয় হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। এছাড়া স্টাফ ভাতা হিসেবে তারা প্রতিজন প্রতিদিনের পাবেন আরও এক হাজার টাকা।

অর্থাৎ একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মানী বা নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের জন্য ভাতা দিতে নির্বাচন কমিশনের ব্যয় হবে ৫০ হাজার টাকা।

অশোক কুমার দেবনাথ আগেই বলেছিলেন যে এবার ভোটার সংখ্যা বাড়ার কারণে সারা দেশে ভোটকেন্দ্রও বেড়েছে এবং সে কারণে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যয়ও বাড়বে।

আগের নির্বাচনগুলোতে খরচ কেমন ছিল? নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল সাতশ কোটি টাকার মতো। যদিও পরে তা কিছুটা বেড়েছিলো। ওই নির্বাচন বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশ নিয়েছিলো।

এর আগে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিলো বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল। সে নির্বাচনের জন্য মোট খরচ হয়েছিলো প্রায় ২৬৫ কোটি টাকা।

আর ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের জন্য ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা।

কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন ব্যবস্থাপনা ও নির্বাচনী নানা উপকরণের খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ার কারণেই ক্রমশ নির্বাচনের খরচ বাড়ছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions