শিরোনাম
খাগড়াছড়িঃ সংঘাত থেকে শুরু হোক শান্তির পদযাত্রা। আওয়ামী লীগ জাপাসহ ১১ দলের কার্যক্রম বন্ধ চেয়ে রিট মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে ২৫২ এসআইকে অব্যাহতির প্রসঙ্গ পার্বত্য টাস্কফোর্সে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তারা বহাল তবিয়তে কোন জাদুতে সওজের কাজ বাগাল অনভিজ্ঞ এনডিই,প্রাক-অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক পদোন্নতির হাওয়া বইছে প্রশাসনে, এসএসবির টেবিলে ৮৫০ নথি সাবেক ডিএমপি কমিশনার ফারুকের ৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ! বিশ্বের বহু পলাতক স্বৈরশাসক টাকা দিয়ে রাজনীতিতে ফিরেছে,হাসিনার শক্তি পাচারের টাকা পর্যটকদের জন্য আগামী ১ নভেম্বর থেকে রাঙ্গামাটি ও ৫ নভেম্বর থেকে খাগড়াছড়ি খুলে দেওয়া হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৭৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ভোটে থেকেও নেই ৬৮ প্রার্থী

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ২২৭ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামে ভোটের মাঠে নেই ২৮ জন প্রার্থী। আর ৪০ জন প্রার্থী ভোটে থেকেও নেই। অর্থাৎ ৬৮ জন প্রার্থী ভোটে থাকলেও মাঠে নিষ্ক্রিয়। প্রচার-প্রচারণায় ভোটে সরব রয়েছেন অন্তত ৩৭ জন প্রার্থী। অন্যদের কালেভদ্রে মাঠে দেখা গেছে। নির্বাচনী এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে প্রার্থীদের এমন চিত্র জানা গেছে।

নির্বাচন কমিশনের তালিকায় চট্টগ্রামের ১৬ আসনে প্রার্থী আছেন ১২৫ জন। ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। চালাচ্ছেন প্রচারণা ও গণসংযোগ। কিন্তু বেশিরভাগ আসনেই আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে স্বতন্ত্রের আড়ালে আওয়ামী লীগই। দুটি আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

ভোটের মাঠে ধর্মভিত্তিক ইসলামী দল ও কিংসপার্টি খ্যাত দলগুলোর প্রার্থী বেশি রয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামভিত্তিক তরিকতপন্থী ইসলামী দলগুলো এবার সবকটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগ ও শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চাপে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন কিংসপার্টির প্রার্থীরা। অনেক দলের প্রার্থীদের এখন মাঠে দেখা যাচ্ছে না।

 

বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনএফ) চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এবার নির্বাচন করছেন চট্টগ্রাম-৮ ও ঢাকার দুটি আসন থেকে। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম-৮ আসনে কিছু পোস্টার দেখা গেলেও প্রচার-প্রচারণায় তেমন সরব ছিলেন না তিনি।

 

বিএনএফ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ভোটাররা মনে করলে ভোট দেবে। না করলে দেবে না। দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য আমরা প্রার্থী দিয়েছি। আর্থিক সামর্থ্যরে অভাবে দলের প্রার্থীরা জোরালো প্রচারণা চালাতে পারছেন না। তবে কম-বেশি প্রচারণা চালাচ্ছেন।’

 

ভোটের মাঠে ১২৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। এরমধ্যে ১৪টি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রয়েছে। আর দুটি আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ১৬ আসনে আওয়ামী লীগ ও জোট প্রার্থীদের বিপরীতে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন অন্তত ১৪ জন। ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগ দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চাপে ছোট দল বা কিংসপার্টির প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় অনেকটা ¤্রয়িমাণ হয়ে পড়েছে।

 

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-৮ আসনে প্রার্থী আছেন ১০ জন। এরমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম ও নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য বিজয় কুমার চৌধুরী কিষাণ এবং জাপা প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠের প্রচারণা তুঙ্গে। মোমবাতি ও চেয়ার প্রতীকের প্রার্থীর প্রচার কিছুটা দেখা গেলেও অন্যরা সক্রিয়ভাবে মাঠে নেই।

 

চট্টগ্রাম-১২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীকে ঘিরে প্রচারণার শুরু থেকেই উত্তাপ চলে আসছে। আওয়ামী লীগের শক্ত দুই প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারণায় রয়েছেন মোমবাতি প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা এম এ মতিন। এছাড়া নোঙর, লাঙ্গল, ট্রাক প্রতীকের প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানার মাঠে রয়েছে। গণসংযোগে জোরালোভাবে মাঠে নেই। সোনালী আঁশ ও ডাব প্রতীকের প্রার্থী মাঠেই নেই।

 

চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে প্রার্থী আছেন আটজন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মিতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন জাসদ প্রার্থী। অন্য ৫ প্রার্থীর পোস্টার থাকলেও মাঠে সক্রিয় নেই।

 

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে প্রার্থী আছেন ৭ জন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলীয় প্রার্থী মাহবুব উর রহমান রুহেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণা তুঙ্গে রয়েছে। লাঙ্গল, টেলিভিশন, হাত (পাঞ্জা) প্রতীকের প্রার্থী মাঠে নেই বললেই চলে।

 

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে নয়জন প্রার্থীর মধ্যে চার প্রার্থীকে ঘিরে প্রচার-প্রচারণা জমজমাট রয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী হোসাইন মুহাম্মদ আবু তৈয়ব ও সুপ্রিম পার্টির শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদকে ঘিরে প্রচারণা জমে উঠেছে। চেয়ার ও মোমবাতির প্রচারণা থাকলেও অন্যরা ভোটের মাঠে সেভাবে সক্রিয় নেই।

 

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল জব্বার চৌধুরী প্রচারণায় উত্তেজনা চলে আসছে। ফুলের মালা প্রতীকের প্রার্থীকে মাঝে-মধ্যে মাঠে দেখা গেলেও অন্যদের মাঠে সক্রিয়ভাবে দেখা যায়নি।

 

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেবের প্রচার-প্রচারণা ঘিরে সহিংসতা লেগে রয়েছে। এ আসনে ৭ প্রার্থীর মধ্যে চারজনের প্রচার-প্রচারণা মাঠে নেই। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী মুহাম্মদ সোলাইমান কাসেমী বলেন, ‘নিয়মিত জনগণের কাছে গিয়েছি। আমার যোগ্যতা দেখে ভোটাররা সাড়া দিয়েছেন। তারা আমাকে ভোট দেবে।’

 

ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী মুহাম্মদ আলী হোসাইন বলেন, ‘জনগণ যে আশা করছে, তার কোন নিশ্চয়তা নেই। যদি মানুষ ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে তাহলে আমি নিশ্চিত জনগণ আমাকে ভোট দেবে।’

 

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান ও আবদুল্লাহ কবির লিটনকে ঘিরে তিন ধারায় বিভক্ত আওয়ামী লীগ। তিনজনই প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ডাব প্রতীকের প্রার্থী মাঠে নেই। আম, বেঞ্চ ও মিনার প্রতীকের প্রার্থীদের জোরালোভাবে দেখা যায়নি।

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের বেশিরভাগ আসনে প্রার্থী রয়েছে ইসলামী ফ্রন্টের মোমবাতি প্রতীকের। রয়েছে চেয়ার প্রতীকের। তরিকতপন্থী এসব দল ছাড়াও তরিকত ফেডারেশন, সুপ্রিম পার্টি, লাঙ্গল, তৃণমূল বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী রয়েছে। এসব দলের বেশির ভাগ প্রার্থীই ভোটের মাঠে নেই। তবে অখ্যাত অনেক প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানার নির্বাচনী এলাকায় চোখে পড়লেও প্রার্থীদের উপস্থিতি দেখেনি ভোটাররা।

 

চট্টগ্রামের-১৬ আসনের মধ্যে চার আসনে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী দলীয় প্রার্থী রয়েছে। তিন মন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটির এক সভাপতির আসনে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন নৌকার প্রার্থীরা। চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম-৯ (বাকলিয়া-কোতোয়ালী) আসনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও ৬ (রাউজান) আসনে এ বি এম ফজলে করিম নির্ভার রয়েছেন।

 

চট্টগ্রাম-৯ আসনে ন্যাপের প্রার্থী মিটল দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমি ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছি। কিন্তু আমার পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। তাই কম দেখা যাচ্ছে।’

 

কথা হয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একাধিক প্রার্থী, প্রার্থীর এজেন্ট ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে। তারা বলেন, ১৬ আসনে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অনেকেই নিজেদের পছন্দের স্বতন্ত্র বা অন্য দলের ব্যানারে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছেন। কেউ কেউ নিকটাত্মীয় বা সহকর্মীদের দাঁড় করিয়েছেন। নির্বাচনী মাঠে এসব প্রার্থীদের কোনো অবস্থান নেই। এমনকি নির্বাচনী এলাকায় অনেকের পোস্টারও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পোস্টার-ব্যানার দেখা গেলেও অনেকেই মূল প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। প্রচারণা চালাচ্ছেন।পূর্বকোণ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions