ডেস্ক রির্পোট:- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, বিদায়ী বছর মানবাধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্রের কোনো মনোযোগ ছিল না। মানবাধিকারের প্রসঙ্গ এলেই সরকার আত্মরক্ষামূলক কথা বলেছে।
আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৩: এমএসএফের পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ‘খুবই খারাপ’ উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, মানবাধিকারের কথা তুললে সরকার বিরক্ত হচ্ছে। যারা মানবাধিকারের কথা বলছেন তাদের বৈরিতার জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ রাষ্ট্র ও মানবাধিকার কর্মীদের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে৷
দেশের গত এক বছরের মানবাধিকার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব মানবাধিকারের প্রতি সম্মান করা, সুরক্ষা দেওয়া এবং মানবাধিকারবোধ বাস্তবায়ন করা৷ এই বছরে এসব ব্যাপারে রাষ্ট্র মনোযোগী ছিল না৷ যখনই মানবাধিকারের কথা উঠেছে, তারা আত্মরক্ষামূলক কথা বলেছে৷
মানবাধিকার সুরক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান করা হয়নি৷ মানবাধিকারবোধ সঞ্চারে বুদ্ধিবৃত্তিক পদক্ষেপ নেয়নি৷ সরকারের আচরণ দেখলে মনে হয়, মানবাধিকারের বিষয়গুলো তারা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না৷ মানবাধিকারের কথা শুনলেই সরকার অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ৭ আন্তর্জাতিক সংগঠন, ৫ সুপারিশ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ৭ আন্তর্জাতিক সংগঠন, ৫ সুপারিশ
সুলতানা কামাল বলেন, সরকার মনে করছে, শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন হলেও যথেষ্ট৷ মানুষের মন-মানসিকতা, মানবাধিকারবোধ উন্নয়নে যেন তাদের দায়িত্ব নেই।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমস্যা সমাধানের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেইমানবাধিকার লঙ্ঘনের সমস্যা সমাধানের কোনো ইচ্ছা সরকারের নেই
তিনি জানান, চলতি বছরে নির্বাচনী সহিংসতার ১৩৮টি ঘটনায় ১০জন নিহত হয়েছেন৷ মুখোশ পরে গুপ্ত হামলার ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ১৫টি ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন৷ এসময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক অপহরণের অভিযোগ এসেছে ৮৯টি৷
এ বছরে পুলিশ হেফাজতে ১৭ জন, কারা হেফাজতে ১৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে অজ্ঞাতনামা ৩৫২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে ৬২টি৷ এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৬৩ জন৷ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২৭ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩২ জন৷
এ বছর সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা কমে এসেছে৷ গত বছর এ সংখ্যা ছিলো ৮১, এ বছর তা নেমে এসেছে ৬৩-তে।