জায়গা মসজিদের, ভাড়া দেন কৃষক লীগ নেতা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৩৪৫ দেখা হয়েছে

চট্টগ্রাম:- চার বছর আগে শেষ ইজারার মেয়াদ। তবু দখল ছাড়েননি। পরিশোধ করেননি ইজারা বাবদ বকেয়া প্রায় ১০ লাখ টাকা। উল্টো সেই জায়গা আরেকজনের কাছে ভাড়া দিয়েছেন। চট্টগ্রাম নগরীর সরকারি মসজিদ ‘জমিয়তুল ফালাহ’র জায়গা দখল করে এভাবে নার্সারি ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে মুসল্লি কল্যাণ সংস্থার নামে মসজিদের একটি কক্ষ দখল ও দানবাক্সের প্রায় ৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বদিউল আলমের বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মসজিদের জায়গায় এমন জবরদখল ঠেকাতে ইতিমধ্যে কয়েক দফা পদক্ষেপ নিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। কিন্তু নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে এ দুই নেতা জায়গা ছাড়ছেন না। জায়গা দখলমুক্ত ও ইজারার টাকা আদায় করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন গত বছরের অক্টোবরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর দুই দফায় চিঠি দিয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের প্রথম দিনও উচ্ছেদ চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত এক মাসেও এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি জেলা প্রশাসন। আদায় করা যায়নি দানবাক্স থেকে লুট হওয়া টাকাও।

এ বিষয়ে নগরের বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএমএন জমিউল হিকমা বলেন, ‘ডিসি স্যার আমার কাছে মসজিদের জায়গা, কক্ষ দখল এবং মসজিদের দানবাক্সের ৯ লাখ টাকা লুট সম্পর্কে তথ্য চেয়েছিলেন, আমরা জানিয়েছি। এখন উচ্ছেদের ব্যবস্থা করবে জেলা প্রশাসন। এর বেশি আমি জানি না।’

ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সাল থেকে মসজিদ কমপ্লেক্সের ৩৮ হাজার বর্গফুটের খালি জায়গা ইজারা নিয়ে আরণ্যক নার্সারি গড়ে তোলেন শফিকুল ইসলামের বড় ভাই মো. মাহবুবুর রহমান। ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর তাঁর ইজারার মেয়াদ শেষ হয়। মসজিদের ভাড়া বাবদ বকেয়া ৫ লাখ ২৫ টাকা পরিশোধ না করেই চলে যান মাহবুব। এরপর তার ভাই শফিক নেন জায়গার দখল। নার্সারি কবজায় নিয়ে রঞ্জ বাবু নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে তিনি ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু মসজিদকে এক টাকাও দেননি। বকেয়া পরিশোধের জন্য ১৯টি তাগাদাপত্র দেয় কর্তৃপক্ষ। তাতেও ফল আসেনি।

এ বিষয়ে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ কমপ্লেক্সের প্রকল্প পরিচালক বোরহান উদ্দিন মো. আবু আহসান বলেন, ‘কৃষক লীগ নেতা শফিকুলের কাছে এত দিন মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার বেশি বকেয়া।’

এদিকে ২০১৩ সাল থেকে মুসল্লি কল্যাণ সংস্থা নামে মসজিদের নিচতলার একটি কক্ষ দখলে নেন নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বদিউল আলম। নানা অনিয়মের অভিযোগে ২০২০ সালের মার্চে সেই সংস্থার রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে সমাজ সেবা অধিদপ্তর। তবু দখল ছাড়েননি বদিউল। দানবাক্সের টাকা লুট ও কক্ষ দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে বদিউল আলম বলেন, ‘আমরা লুট করিনি, এটা দিয়ে গেট বানিয়েছি। আর মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ ও মুসল্লিদের কল্যাণেই সংস্থা গড়ে তুলেছি। দখল করিনি।’

জায়গা দখল করে নার্সারি ব্যবসা পরিচালনা প্রসঙ্গে শফিকুল ইসলাম বলেন, এসব সত্যি নয়। এটা অনেক আগের ঘটনা। মসজিদের পাওনা অছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ মাসের টাকা বকেয়া থাকতে পারে।’

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘দখলদারদের উচ্ছেদে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’ আজকের পত্রিকা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions