শিরোনাম
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার আগে ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ কোটা সংস্কার আন্দোলন চিকিৎসাধীন তিনজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ২০৬,ছুটির দিনেও রাজধানী ফাঁকা এএসআই মোক্তাদিরের ওপর নৃশংসতায় স্তব্ধ পরিবার সারা দেশে অভিযান,এলাকা ভাগ করে ‘ব্লক রেইড’ ‘গুলি আর কারা করবে, আমরা নিরস্ত্র ছিলাম’-মিফতাহ সিদ্দিকী ‘এত মৃত্যু দেখে কেউ চুপ থাকতে পারে না’ কোটা বিক্ষোভ দমনের পর প্রান্তসীমায় বাংলাদেশ,ক্রাইসিস গ্রুপের রিপোর্ট নতুন নির্বাচন দাবি ড. ইউনূসের গণতন্ত্রে রাষ্ট্রের মালিক জনগণ ফেসবুক খুলবে কবে? এই মাধ্যম এখন আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘ ঘোষিত মৌলিক মানবাধিকার দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান ৫৫০ মামলা ৬ হাজারের বেশি গ্রেপ্তার

পাহাড়ি গ্রামে হরবোলা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৩১০ দেখা হয়েছে

খাগড়াছড়ি:- নিভৃত পাহাড়ি পল্লি। তেপান্তর পেরিয়ে পাহাড়ের বুকে গড়ে ওঠা গ্রামগুলোয় দাঁড়িয়ে আছে নানা প্রজাতির গাছ। গাছের শাখা-প্রশাখায় পাখিদের কিচিরমিচির। অদূরে বটবৃক্ষের ডাল থেকে ভেসে আসে মধুর ডাক। কৌতূহলী চোখ সেদিকে তাকালেও পাতা-ডাল নড়ে ওঠা ছাড়া তেমন কিছুই দেখা যায় না। কিছুক্ষণ পর ঘন পাতার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে সবুজ এক পাখি। নাম তার হরবোলা, সোনা কপালি হরবোলা।

সম্প্রতি খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের জনপদ মুবাছড়িতে গিয়ে পাখিটির দেখা মিলেছে। মহালছড়ির এই গ্রামে পাখি আর মানুষের দারুণ সখ্য।

গ্রামের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে শতবর্ষী বটবৃক্ষ। সেই গাছের নিচে গড়ে উঠেছে তিনটি চায়ের দোকান। গ্রামবাসীই এসব দোকানের মূল ক্রেতা।

ঋতুর হিসাবে এখন হেমন্ত হলেও পাহাড়ের প্রকৃতিতে চলে এসেছে শীতের আমেজ। এ সময় পাহাড়ে পাখির বিচরণ থাকে সবচেয়ে বেশি। খাবারের খোঁজে পাখিরা লোকালয়ে ফিরে আসে। ঘন ঝোপ-জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ি গ্রাম তাদের খুব প্রিয়, বিশেষ করে গ্রামের বটবৃক্ষের শাখাগুলো।

মুবাছড়িতেও শতবর্ষী বটের ডালে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের অবাধ বিচরণ চোখে পড়েছে। এখানকার লোকজন কেউ পাখি শিকার করে না, অন্য গ্রাম থেকে কোনো শিকারি এসে শিকারও করতে পারে না। তাই বটের ডালে সোনা কপালি হরবোলা, পাকড়া ধনেশ, চুনিমুখী মৌটুসি, কাঠশালিক, পাহাড়ি ময়না, বসন্তবৌরিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এখানে নিরাপদে ঘুরে বেড়ায়।

বটের পাকা ফল খেতে এখানে প্রায়ই আসে সোনা কপালি হরবোলা। হরবোলা বাংলাদেশের স্থানীয় প্রজাতির পাখি। বেশ সুদর্শন, কণ্ঠস্বর সুমধুর। স্বভাবে চঞ্চল ও নরম। সারা দিন ঘুরেফিরে বটের ডালেই তাদের দেখা যায়। প্রায় প্রতিদিনই অন্তত কয়েক জোড়া হরবোলা নিরাপদে ঘুরে বেড়ায় এখানে। বটের সবুজ পাতার আড়ালে এদের খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সাধারণত গ্রামাঞ্চলে হরবোলা খুব কম দেখা যাওয়ার কথা। তবে পাহাড়ি গ্রামগুলো যেহেতু চিরসবুজ, তাই এখানেই এদের দেখা যায়।

সাধারণত বাংলাদেশে সোনা কপালি হরবোলা ও নীল ডানা হরবোলা দেখা যায়। এর মধ্যে সোনা কপালি হরবোলা লম্বায় প্রায় ১৮-১৯ সেন্টিমিটার। কপাল দেখতে কমলা-হলুদ বা সোনালি। দেহের ওপরের অংশ উজ্জ্বল সবুজ। পালকের ওপরে আসমানি রং। চোখের দুই পাশ থেকে মুখ ও গলা কালো। চিবুক বেগুনি-নীল। গলার নিচের অংশে সোনালি-হলুদ রেখা। ঠোঁট কালচে, অগ্রভাগ বাঁকানো। চোখের মণি গাঢ় বাদামি। পা ও পায়ের পাতা কালো। স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে সামান্য তফাত রয়েছে। স্ত্রী পাখির কপালের সোনালি পালক পুরুষের তুলনায় হালকা।

বটগাছের ফল ছাড়াও এরা অন্যান্য ছোট ফল, ফুলের মধু ও পোকামাকড় খায়। এদের প্রজনন মৌসুম জানুয়ারি থেকে আগস্ট। ডিম দেয় ২-৩টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে দুই সপ্তাহের বেশি।

খাগড়াছড়ির শৌখিন আলোকচিত্রী সবুজ চাকমা বলেন, ‘খাগড়াছড়ির পাহাড়ি গ্রামগুলোতে হরবোলা দেখা যায়। তবে এরা সাধারণত বট, পারিজাত ফুলের গাছে বেশি থাকে।

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে হরবোলা দেখা যায়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ আইইউসিএনের তালিকায় এটি ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত।আজকের পত্রিকা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions