ডেস্ক রির্পোট:- দুঃসহ স্মৃতি পেরিয়ে স্বজনদের কাছে ফিরেছেন সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে অপহৃত হওয়া কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন বাংলাদেশী পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহের ২৩ নাবিক। প্রায় ৬৪ দিনের শ্বাসরুদ্ধকর যাত্রা শেষে আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-১ জেটিতে এসে পৌঁছান তারা।
লাইটারেজ জাহাজটি জেটিতে নোঙ্গর করলে নাবিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আনন্দ চিৎকারে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ সময় জাহাজ থেকে নাবিকেরা নামতে শুরু করলে তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান, চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, এসআর শিপিংয়ের সিইও মেহেরুল করিমসহ অনান্যরা। পরে ভিডিও কনফারেন্স নাবিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এসআর শিপিংয়ের সিইও মেহেরুল করিম বলেন, ‘সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার হয়ে নাবিকরা পরিবারের কাছে ফিরেছেন। নাবিকদের বরণ করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
ছেলেকে জাহাজ থেকে নামতে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের অয়েলার পদের আইনুল হক অভির মা লুৎফিয়ারা বেগম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘মায়ের ছেলে মায়ের বুকে ফিরে এসেছে, এটিই আমার জীবনের বড় পাওয়া। আমার ছেলে যেন নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে।’
এমভি আবদুল্লাহর ওএস পদে দায়িত্বরত মোহাম্মদ শামসুদ্দিন জানান, ‘দিনগুলো কীভাবে পার করেছি, বলতে পারবো না। জিম্মিদশার ৩৩ দিন আমাদের কাছে ছিল ৩৩ বছরের মতো। সারাদিনরাত দস্যুদের অস্ত্রের মুখে আতঙ্কে কেটেছে। যেদিন জাহাজ ছাড়ার খবর পেলাম, সেদিন আমাদের মনে হয়েছে ঈদের আনন্দ।’
জাহাজের আরেক ক্রু মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক নিজের অনূভুতি জানিয়ে বলেন, ‘ঈদের নামাজের পর যখন জানতে পারি দস্যুদের হাত থেকে আমরা মুক্ত হতে যাচ্ছি, তখনই সবাই ভিক্টরি সাইন দেখিয়েছিলাম। দেশের মাটিতে পা রেখে পরিবারের সদস্যদের দেখে সব কষ্ট আনন্দে পরিণত হয়েছে।’
ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন বলেন, ‘আমরা ২৩ জন জাহাজের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছি। কারোর বিকল্প কেউ ছিল না। জলদস্যুরা আমাদের জিম্মি করার পরও জাহাজ পরিচালনার কাজ আমাদেরই করতে হয়েছে। জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পর যতটা না আনন্দ পেয়েছি, তার চেয়ে বেশি আনন্দিত হয়েছি আজকে দেশে ফিরে। পরিবারের সদস্যদের দেখা পেয়ে সব কষ্ট লাঘব হয়ে গেছে।’