ডেস্ক রির্পোট:- রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত রোগীদের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৭৫ শতাংশের বেশি দগ্ধ রোগীদের কেউ বেঁচে নেই। মৃতদের বেশির ভাগ শিশু।
গত মঙ্গলবার পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হতাহতের তালিকায় ৮০ শতাংশের বেশি দগ্ধ রোগী ছিল অন্তত ১০ জন। এর মধ্যে সর্বশেষ রোগী মাহতাব রহমান গত বৃহস্পতিবার মারা যায়।
গতকাল যে দুজন মারা যায়, এর মধ্যে মাকিনের শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। অন্য মৃত শিশু আয়মানের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়েছিল।
ভর্তি থাকা ৪৫ জন রোগীর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৬০ শতাংশের বেশি দগ্ধ একজন, ৪১ থেকে ৫০ শতাংশ দগ্ধ তিনজন, ৩১ থেকে ৪০ শতাংশ দগ্ধ ১০ জন, ২১ থেকে ৩০ শতাংশ দগ্ধ পাঁচজন, ১১ থেকে ২০ শতাংশ দগ্ধ ১২ জন, ৫ থেকে ১০ শতাংশ দগ্ধ ছয়জন।
দগ্ধ রোগীদের পরিস্থিতি বোঝাতে দুটি শব্দ ব্যবহার করেন চিকিৎসকরা।
একটি হচ্ছে শতাংশ আর অন্যটি হচ্ছে ডিগ্রি। এই দুটি শব্দেরই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ। অর্থাৎ দুটি শব্দে রোগীর পরিস্থিতি ও ঝুঁকি বোঝা যায় অনেকাংশে।
আগুন লেগে শরীর পুড়ে যাওয়াকে বলা হয় থার্মাল বার্ন।
বৈদ্যুতিক শকের কারণে হয় ইলেকট্রিক বার্ন। তা ছাড়া এসিড বা এ ধরনের কোনো কেমিক্যাল অধিক পরিমাণে শরীরের সংস্পর্শে এলে শরীর পুড়ে যায়। এটিকে বলে কেমিক্যাল বার্ন। কেমিক্যাল বার্ন হলে পোড়া জায়গাটা শুধু পানি দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে (ন্যূনতম আধা ঘণ্টা) ধুতে হবে। সব কেমিক্যাল বার্ন সাধারণত থার্ড ডিগ্রি বার্ন বা ডিপ বার্ন হয়।
রোগীর কতটা পুড়েছে, সেটা ব্যাখ্যা করা হয় শতাংশের হিসাবে। এ তথ্য দিয়েও বোঝা যায় রোগী কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একটা শরীরকে ১০০ ভাগে ভাগ করা হয়। শরীরের পুরো ত্বকের একেকটা ভাগকে একেক পার্সেন্ট বলে। সেখানে ১ শতাংশ বলতে একজনের হাতের তালু পরিমাণ অংশকে বোঝায়। টোটাল বডি সারফেস এরিয়া (টিবিএসএ) হলো ১০০ শতাংশ, তার ১০ শতাংশ পুড়ে গেলে বলা যায়, রোগী ১০ শতাংশ দগ্ধ।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেছেন, বর্তমানে ইনস্টিটিউটে ৪০ জন রোগী ভর্তি আছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক (ক্রিটিক্যাল), ১০ জন সিভিয়ার কেস এবং ২৫ জন ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ের রোগী। তিনি বলেন, ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ের ১০ জনকে পোস্ট-অপারেটিভ ডকে রাখা হয়েছে, বাকিদের কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।
চিকিৎসাসেবা ও তত্ত্বাবধান নিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারীর সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। আহতদের চিকিৎসা বিষয়ে মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় বজায় রাখা হচ্ছে।’
চিকিৎসকদের ভাষায়, সিভিআর ক্যাটাগরির রোগীরা মাঝারি অবস্থায় এবং ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ের রোগীরা অন্য রোগীদের তুলনায় কিছুটা ভালো আছে। যাকে আমরা ক্রিটিক্যাল বলছি, হয়তো তার উন্নতি হচ্ছে। আবার সিভিআর পর্যায় থেকেও ক্রিটিক্যাল হয়ে যেতে পারে।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com