রাঙ্গামাটি:- জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন ‘আমরা বাহাত্তরের যে মুজিবাদী সংবিধানের বিরুদ্ধে বলে আসতেছি, যে সংবিধানে সকল জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, বাঙালী জাতীয়তাবাদের নামে অবাঙালি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বিভেদ তৈরি করে রাখা হয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ইসলামের সঙ্গে অন্যধর্মের বিভেদ তৈরি করা হয়েছে। আমরা সকল বিভেদের ঊর্ধ্বে গিয়ে, সকল জনগোষ্ঠীকে মর্যাদা দিয়ে একটি সংবিধান রচনা করতে চাই। রাঙ্গামাটির নেতা এমএন লারমা বাহাত্তরের সংবিধানের বিরোধিতা করেছিলেন।
আমরা চাই মুজিববাদী সংবিধানকে বাতিল করে একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান রচনা করতে। নতুন একটি চুক্তি আমরা করব, যেখানে আপনার অধিকার, আমার অধিকারও থাকবে। পাহাড়ে যে অশান্তি, যে বিভেদ বছরের পর বছর জিইয়ে রাখা হয়েছে, সেই অশান্তি ও বিভেদকে দূর করতে হবে।’
নাহিদ বলেন, ‘গত পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের মানুষকে নানাভাবে বিভাজিত করে রাখা হয়েছিল, যার বড় শিকার হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। পার্বত্য চট্টগ্রামে নানা অশান্তি নানা বিভাজন জিইয়ে রেখে অন্য একটি পক্ষ বারবার সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করে, আমরা আর এই তৃতীয় পক্ষকে সুবিধা নিতে দিব না।
আমাদের মধ্যে, সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে যদি কোন সমস্যা থাকে, আমরা নিজেরাই সমাধান করব, অন্যকোন পক্ষকে সুযোগ নিতে দিব না, এজন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২০ জুলাই) রাঙ্গামাটিতে পদযাত্রা শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
দুপুরে একটার দিকে এনসিপির নেতা-কর্মীরা রাঙ্গামাটি পৌঁছে শিল্পকলা একাডেমি থেকে পদযাত্রা শুরু করে বনরূপা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব সামান্তা শারমীন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ্। এসময় উপস্থিত ছিলেন নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারি, রূপাইয়া শ্রেষ্ঠা তংচঙ্গ্যাসহ নাগরিক পার্টি বিভিন্নস্তরের নেতা-কর্মীরা।
সমাবেশে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আপনা আপনাদের সহযোদ্ধা। আমরা যদি কোন ভুল করি তাহলে সেই ভুল সংশোধনের মানসিকতা আমাদের সবসময় আছে। কিছুদিন পূর্বে আমারও বান্দরবান নিয়ে অনিচ্ছাকৃত কথা বলেছিলাম। পরক্ষণে আমার মনে হয়েছিল এই কথাটি আমার বলা উচিত হয়নি। আমি এই বিষয়ে আপনাদের সামনে দুঃখ প্রকাশ করতে চাই।
রাষ্ট্রকাঠোমা ও আলমাতন্ত্রে কেউ অপরাধ করলে তাকেই উত্তরবঙ্গে না পার্বত্য এলাকায় বদলী করা হয়। এই সব অঞ্চলের মানুষ তো ভিন্ন না তাহলে কেন ওই দুর্নীতিবাজদের পানিশমেন্ট পোস্টিং দেয়া হয়। এইসব পানিশমেন্ট পোস্টিঙয়ের মাধ্যমে কোন একজন অসৎ অফিসারের সাজা হতে পারে না।
তিনি বলেন, আমাদের যদি কোন ভুল করি তাহলে সেই ভুল সংশোধন করে নিবো। রাজনীতিতে কথার সঙ্গে কথার লড়াই হতে পারে। তবে কথার প্রতিবাদে মঞ্চে আগুন দেয়া, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা রাজনৈতিক চরিত্র হতে পারে না। এটি ফ্যাসিবাদী চরিত্র। প্রবীণ রাজনীতিবিদরা কথায় কথায় আমাদের সাগরে ভাসিয়ে দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে আমাদের শেখার কিছুই নেই। আগামীর বাংলাদেশে আমরা সম্প্রতির রাজনীতি চাই।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com