জেরুজালেমের পাশে নিয়ন্ত্রণে আসলেও বাকি আগুন এখনো জ্বলছে ইসরাইল জুড়ে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৭৫ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ইসরায়েলের রাজধানী জেরুজালেমের আশপাশে নিয়ন্ত্রণে আসা আগুন স্বস্তি এনে দিলেও, দেশের অন্যান্য অংশে এখনো বহু জায়গায় আগুনের ভয়াবহতা অব্যাহত রয়েছে। গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহ আর প্রবল বাতাসের সুযোগে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে বনাঞ্চল থেকে জনবসতিতে। সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পত্তি হুমকির মুখে। আগুনের কারণে শহরের সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে কোনো বাসিন্দা আহত হননি এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও ঘটেনি। ভয়াবহ এই আগুন প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে ব্যাপক লড়াইয়ের পর অবশেষে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) জানায় ইসরায়েলের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস।

উল্লেখ্য, ভয়াবহ এই আগুন বুধবার (২৩ এপ্রিল) ইসরায়েলের কেন্দ্রস্থল বেইত শেমেশ এলাকার কাছাকাছি মোশাভ তারুম নামক স্থানে প্রথম ছড়িয়ে পড়ে। দেশজুড়ে বিরাজমান ভয়াবহ দাবদাহ ও প্রবল বাতাস আগুনকে দ্রুত ছড়িয়ে দেয় পার্শ্ববর্তী গ্রাম ও বনাঞ্চলে। এই আগুন ছড়িয়ে পড়ে এসতা’ওল, বেইত মেইর ও মেসিলাত সিওন এলাকায়, যার ফলে সেসব এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। আগুনের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় রুট ৩৮ এবং এক ঘণ্টার জন্য রুট ১। মূলত অতিরিক্ত গরম ও মানবসৃষ্ট অসাবধানতার কারণে এই আগুনের সূত্রপাত বলে মনে করা হচ্ছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০০টির বেশি অগ্নিনির্বাপক ইউনিট, ছয়টি বিমান এবং সেনাবাহিনীর প্রযুক্তিগত ও লজিস্টিক বিভাগ একযোগে কাজ করে। ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ কমিশনার ইয়াল কাসপি জানান, পাঁচটি ভিন্ন জায়গায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল এবং তা নিভাতে সমন্বিতভাবে কাজ করে ইসরায়েল এয়ারফোর্স, পুলিশ, কেএকেএল-জেএনএফ (জিউইশ ন্যাশনাল ফান্ড) এবং অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবক। বেইত মেইর এলাকায় ও পাশ্ববর্তী রাবিন পার্কের দিকে আগুন যেন না ছড়ায়, সেই চেষ্টাও চলে বিমান ও মাটির অভিযান দিয়ে।
যদিও এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে কিছু জায়গায় এখনও ধোঁয়া ও আগুনের অস্তিত্ব রয়েছে, যেমন: মেসিলাত সিওন, এসতা’ওল ফরেস্ট, নেভে শালোম ও নেভে ইলান। সাধারণ মানুষকে এসব এলাকায় যাওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। একইসঙ্গে ড্রোন না উড়ানোর জন্যও সতর্ক করা হয়েছে, কারণ তা অগ্নিনির্বাপণ বিমানের কাজে বিঘ্ন ঘটায়। আগুন নেভানোর সময় তিনজন অগ্নিনির্বাপক ও এক পুলিশ সদস্য আহত হন, যাদের মধ্যে দু’জনকে ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে প্রায় ১০,০০০ দুনাম (২,৪৭১ একর) জমি পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, পেটাহিয়া ও পেদায়ার কাছে রুট ৬-এর আশপাশে মানুষজন ধোঁয়ায় ঘেরা অবস্থায় হেঁটে যাচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার সময় ইসরায়েলি বিমানবাহিনী একটি ‘এয়ারিয়াল ম্যাপ’ তৈরি করে যা ফায়ার সার্ভিসকে বড়সড় কৌশল নিতে সাহায্য করে।

ইসরায়েল প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে ভয়াবহ তাপপ্রবাহের মুখোমুখি হয়। রাষ্ট্রীয় হিসাবরক্ষকের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের অগ্নিকাণ্ডগুলোর মাত্র ৯ শতাংশ এবং ২০২৩ সালের মাত্র ১৪ শতাংশ ঘটনার উৎস তদন্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি ২০২০-২২ সালের মধ্যে শুরু হওয়া তদন্তগুলোরও অধিকাংশ এখনো অসমাপ্ত। প্রতি বছরই গ্রীষ্মকালে ইসরায়েল এমন ভয়াবহ আগুনের মুখে পড়ে—১৯৮৯ থেকে শুরু করে ২০১0, ২০১৫, ২০২১, ২০২৩ এবং সর্বশেষ ২০২৫—প্রায় প্রতি দুই-তিন বছর পরপর এমন ঘটনা ঘটছে। তথ্যসূত্র : দ্য টাইমস অব ইসরাইল

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions