ডেস্ক রির্পোট:- ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার সম্পদের সন্ধান মিলছে দেশে দেশে। বোন শেখ রেহানা, পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ভাগ্নে রাদওয়ান মুজিব ববি, ভাগ্নে টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকেরও বিপুল সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, হাসিনাঘনিষ্ঠ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের নামে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে সম্পদের পাহাড়। দেড় দশকের লুণ্ঠন-কা-ে অর্জিত প্রায় সব সম্পদই হাসিনার লুটেরা সরকার বিভিন্ন দেশে পাচার হয়েছে। হাসিনামুক্ত বাংলাদেশে যতই দিন যাচ্ছে ততই উন্মোচিত হচ্ছে তাদের বিদেশে পাচারকৃত অর্থ-সম্পদের তথ্য।
গত ১০ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিএফআইইউ ও যৌথ তদন্ত দলের অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং এবং পশ্চিম ক্যারিবিয়ান সাগরের দ্বীপ কেম্যান আইল্যান্ডসে শেখ হাসিনার সম্পদের তথ্য দেন। এছাড়া মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকে রাশিয়ান ‘স্ল্যাশ ফান্ডের’ অস্তিত্ব মিলেছে।
গত ১১ মার্চ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ জানান, এ বছরের মধ্যেই বিদেশে পাচার হওয়া প্রায় কয়েক শ’ কোটি ডলার ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। এজন্য একটি বিশেষ আইন করার উদ্যোগ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। তিনি বলেন, পাচার হওয়া অর্থের একটি বড় অঙ্ক ফেরত আনার চেষ্টা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি দেশের সাথে চুক্তিসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া চলছে। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা বাস্তবে সম্ভব কি নাÑ এমন প্রশ্ন করা হয় অর্থ উপদেষ্টাকে। জবাবে বলেন, এটি সম্ভব। অনেক সময় দেখা যায় ১১-১২ জন দিয়েছেন, ২০০ কোটি টাকার ওপরে অনেকের আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। সব মিলিয়ে হয়তো আমরা আনতে পারব। অন্তর্বর্তী সরকারের এসব বক্তব্য মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার করে। স্বপ্ন অঙ্কুরিত হয়। কিন্তু বাস্ততা কী বলে? পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার সফল কোনো ইতিহাস কি আছে বাংলাদেশের? ইতঃপূর্বে যেসব ‘চেষ্টা’ হয়েছে সেগুলোর অভিজ্ঞতাই বা কী? কী ফলাফল পাওয়া গেছে? এসব প্রশ্ন এ কারণে উঠছে যে, মানুষ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারকে ‘সফল’ দেখতে চায়। সুগন্ধী ছড়ানো কথামালার চেয়ে বাস্তবিক প্রতিফলন দেখতে চায়। কোন পদ্ধতিতে, কী উপায়ে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা হবেÑ তা পরিষ্কার করা হয়নি। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে মানুষ কী দেখেছে?
অর্থ পাচারের গল্প প্রচার হয়। ‘আন্ডার ইনভয়েস-ওভার ইনভয়েস’-এর মাধ্যমে অর্থ পাচার হচ্ছে। কিন্তু কারা এটি করছে সেটি বেরিয়ে আসছে না। সম্পৃক্তদের নামধাম জানা যাচ্ছে না। মামলা হচ্ছে। বিচার হচ্ছে। শাস্তি হচ্ছে না। টাকাও ফেরত আসছে না। গলদটা কোথায়?
ইতিহাস খননে দেখা যায়, মানি লন্ডারিংয়ের কনসেপ্টটা এদেশে ‘আমদানি’ হয়েছে ২০০৭-০৮ সালের দিকে। এর আগে মানি লন্ডারিংয়ের আইডিয়াটা ছিল ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট ১৯৪৭ এর মধ্যে। এটিকে লজিস্টিক সাপোর্ট দেয়ার জন্য বিদ্যমান আইনগুলো ছিল কম্পিটিটিভ অ্যাক্ট। এনবিআর, ফরেন ইনভেস্টমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, ফরে এক্সচেঞ্জ ডিভিশন,বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি এগুলো সম্প্রতিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে দেখভাল করার জন্য সৃষ্টি করা হয় বিএফআইইউ। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সক্রিয় নয়। যতটুকুন সক্রিয়তা ছিল সেটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ম্যালাফাইডি। অর্থ পাচার আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নেই সংশ্লিষ্টদের। অর্থ পাচারে ‘ভাইটাল প্লেয়ার’ হচ্ছে, মেটারিয়াল উইটনেস, বাংলাদেশ ব্যাংক কন্ট্রোল অব ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট, কন্ট্রোল এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইপিবি) কম্পিটিটিভ প্রাইস কমিশন, সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন। এদের আন্ডার ইনভয়েস-ওভার ইনভয়েসের যে গল্পটা প্রচার হয় কিংবা প্রসিকিউশন স্টোরিতে আনা হচ্ছে এটিকে ‘জাস্টিফাই’ করার জন্য উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলোই ‘ভাইটাল উইটনেসের মেটারিয়াল এভিডেন্স’। অথচ অর্থ পাচার মামলায় তাদেরকে সম্পূর্ণ রূপে এড়িয়ে যাওয়া হয়। কোনো মামলায় এনবিআরকে সাক্ষী রাখা হয় না। প্রাইস কম্পিটিটিভ অথরিটিকে সাক্ষী রাখা হয় না। বাংলাদেশ ব্যাংক সাক্ষী নেই। বিএফআইউকেও করা হয় না সাক্ষী। সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন সাক্ষী নেই। ইপিবি সাক্ষী নেই। বেশ কয়েকবার অর্থ পাচার আইন সংশোধন করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও পাচার রোধ করা যাচ্ছে না। পাচাকারীদের অভিযুক্ত এবং বিচার করা যাচ্ছে না। এতে সুফল যা পেয়েছে অর্থ পাচারকারীরা।
আইনজ্ঞদের মতে, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে হলে আগে এই দেশে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিচারে দোষী সাব্যস্ত করতে হবে। ১৯৪৭ সালের ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্টে যা ছিল এটিতে সাজার পরিমাণ বাড়ানো যায়। বিশেষ আদালত তো আছেই। সেগুলোর সংখ্যা বাড়ালে হয়তো অর্থ পাচার মামলার নিষ্পত্তি বাড়বে। এ ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের প্রয়োজন নেই। পদাধিকারবলে সেশন জজ, ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন ট্রাইব্যুনাল হিসেবে কাজ করতে পারে।
অর্থ পাচার প্রমাণে কম্প্রিহেনসিভ অ্যাফোর্টের দারুণ ঘাটতি রয়েছে। দক্ষ জনশক্তি নেই। যারা ভাইটাল মেটেরিয়াল ইউটনেস ডকুমেন্ট, তাদেরকে ‘ব্ল্যাকআউট’ রাখা হয়। অধিকাংশ মানি লন্ডারিং মামলায় শুধু মোরাল কনভিকশন দেয়া হচ্ছে। মূল অপরাধের কোনো শাস্তি হচ্ছে না। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, বিদ্যমান আইন পাচারকৃত অর্থ-সম্পদ কি ফেরত আনা সম্ভব? এটি যে সম্ভব নয়-সেটি অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্যেই স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, পাচার রোধে বিশেষ আইন করতে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু এ আইন তো ভবিষ্যতের জন্য। অতীতের পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে ভূমিকা রাখতে পারবে না। অপরাধকালীন সময়ে যে আইন বিদ্যমান থাকে বিচার হতে হয় সেই আইনে। নতুন বিশেষ আইন করে ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দিয়ে বিচার করলে সেটি টেকে না। ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সরকার আমলে সেটি প্রমাণিত।
বিদ্যমান আইনে বিচার করা সম্ভব নয় এ কারণে যে, ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন কিংবা কনভেনশন যেগুলো রয়েছে সেগুলো কোনো ‘বাইন্ডিং ফোর্স’ নয়। বাইন্ডিং অ্যাফেক্টও নেই। বিভিন্ন দেশে হাসিনা রেজিমের দুর্নীতিবাজদের অর্থ রক্ষিত আছে। সে সব দেশের সহযোগিতা ব্যতীত ‘মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর)’ দ্বারা অর্থ ফেরত আনা সম্ভব নয়। কো-অপারেশন ও কনভেনশনভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশের অর্থ পাচারের বিষয়ে সহযোগিতার কথা বলছে। কিন্তু এ সহযোগিতা কেবল লজিস্টিক এবং প্রশিক্ষণগত সহযোগিতা। তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করছে না। বাংলাদেশ থেকে এমএলএআর পাঠালে হাজারটা কয়েরিজ দিচ্ছে সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া দেশগুলোই। এসব ‘কয়েরিজ’ মেটাতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হিমশিম খাচ্ছে। যদি বা ‘কয়েরিজ’ মেটানো হয়-তখন দেখা যায় সংশ্লিষ্ট দেশটি এমএলএআরের জবাব দেয়াই বন্ধ করে দিচ্ছে। ফলে এমএলএআর পাঠিয়ে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা কার্যত অসম্ভব। প্রত্যেকটি দেশ পারমানেন্ট রেসিডেন্স (পিআর) এবং সিটিজেনশিপ দেয়ার ‘গোল্ডেন স্কিম’ চালু রেখেছে। এগুলো মূলত অর্থপাচারকে প্রলুব্ধকরণ। যেসব দেশ পাচারে প্রলুব্ধ করছে সেসব দেশ যত কথাই বলুক, অর্থ ফেরত দানে সহায়তা করবে না। কনভেনশনভুক্ত দেশগুলো যদি আন্তর্জাতিক পরিষদে কম্বিনেশন কিংবা যুগোপযোগী না করে তাহলে পাচারের টাকা ফেরত আনা সম্ভব নয়।
সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে সরকার অনুমোদিত প্রকল্পে পাচারের অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে। সেগুলো সেদেশের সরকার ফেরত না দিলে অর্থ-সম্পদ ফেরত আনা সম্ভব নয়। দৃষ্টান্ত হতে পারে মালয়েশিয়ার ‘সেকেন্ড হোম’। এটি সরকার অনুমোদিত প্রকল্প। মালয় সরকার নিজেই এটি পরিচালনা করছে। স্থায়ী নাগরিকত্ব দেয়া সে দেশের সরকার অনুমোদিত একটি প্রকল্প। ওই দেশের সরকার কেন তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফেরত দেবে? যদি স্থায়ী নাগরিকত্বের বিষয়ে, প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্টের (ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) বিষয়ে ওই দেশের সঙ্গে বোঝাপড়া না করা যায় তাহলে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা যাবে না।
‘আমরা কি শুধু শুধু অর্থ-শক্তি খরচ করছি ? শুধু শুধুই কি বলছি, যে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনব? ফেরত আনা টাকা দিয়ে দেশ চালাব। এটি কি তাহলে নিছক রেটরিক?’ এমন প্রশ্ন করা হয়েছিল আইনজ্ঞ দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীকে। জবাবে তিনি বলেন, আমি সন্দিহান। এসবই কথার ফুলঝুরি। অবাস্তব। আমি তিনটি ক্ষেত্রে বললাম। এই তিনটি খাতে বিনিয়োগকৃত টাকা যে দেশগুলোতে টাকা আছে সেসব দেশ কখনো টাকা ফেরত দেবে না। বাংলাদেশ যতই দাবি করুক, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশনের কথা বলুক, এন্টিকরাপশন কনভেনশনের কথা বলুক, এমএলএআরের কথা বলুক টাকা ফেরত আসবে না। কখনোই আসবে না। সম্ভবও নয়।
তার মতে, আমরা যেটিকে অপরাধ হিসেবে দেখছি, সেসব দেশ সেই পাচারকে লেজিটেমিসি দিয়েছে। এখন শুধু আমাদের এখান থেকে অর্থ পাচার হয়েছে, আমরা এটিকে ‘লন্ডারিং’ বলছি। ওদের দেশের জন্যতো এটি ‘ইনভেস্টমেন্ট।’ এ প্রসঙ্গের সঙ্গে সহমত জানিয়ে এই আইনজ্ঞ বলেন, আমি সেটাই তো বললাম। ‘সেকেন্ড হোম’ প্রকল্প হচ্ছে মালয়েশিয়ার ‘ট্যুরিজম এবং সিভিল এভিয়েশন’ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত স্কিম। তাহলে টাকা কেন ফেরত দেবে? এক লাখ ডলার দিলেন মালয়েশিয়ায় পিআর পাওয়ার জন্য, তাহলে টাকাটা কেন ফেরত দেবে? তিন খাতে বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত আসার কোনো সুযোগ নেই। অন্যান্য খাতে বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত আনার ক্ষেত্রে রেগুলেটরি বডি, তাদের সিদ্ধান্তহীনতা, অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও দুর্নীতির কারণ টাকা পাচার হচ্ছে। পরিষ্কার কথা। তিন খাতের বাইরে মালয়েশিয়ায় যে টাকা পাচার হচ্ছে সেটি শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের কারণে। পলিসিমেকাররা দায়ী।
পিকে হালদারের কথাই ধরা যাক। সেখানে সে দ-প্রাপ্ত ব্যক্তি। তার ওই দেশে শাস্তি হয়েছে। অবশিষ্ট সাজা তিনি যে বাংলাদেশে এসে ভোগ করবেন, টাকাটা ফেরত দেবেন, সেটির কোনো বিধান বাংলাদেশের আইনে নেই। তাহলে কেন করা হলো না? ভারতের আছে। পাকিস্তানের আছে। সব দেশেরই আছে। বাংলাদেশ কেন করল না?
যতক্ষণ পর্যন্ত না মিনিস্ট্রি অব হোমের এক্সট্রাডিশন, যেমনÑ দুদকের ক্ষেত্রে, মানি লন্ডারিংয়ের ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশনে অ্যামবার্গো, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পাসপোর্ট জব্দ বা দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ক্ষমতা কিন্তু পুলিশ হিসেবে দুদককে দেয়ার কথা। দুদক সেই ক্ষমতা আদায় করতে পারেনি।
আটকের ক্ষমতা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ডিজির। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে দুদকের সেটি করার ক্ষমতা রয়েছে। অথচ করছে না। আদালতের অনুমোদনক্রমে পাসপোর্ট জব্দ করার ক্ষমতা রয়েছে কিন্তু দুদক সেটি এক্সারসাইজ করে না। দুদক দু-তিন দিনের জন্য একটি আদেশ দেয় পাসপোর্ট কিংবা দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার। বিশ্লেষকদের মতে, এটির কি দুই পয়সার মূল্য নেই। পাসপোর্ট অর্ডারেই বলা আছেÑ পুলিশ অফিসার (দুদক) দুদিন-তিন দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ক্ষমতা রাখে।
‘সরকার তাহলে কিসের ভিত্তিতে বলছে, আমরা পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নিচ্ছি। অমুকের সঙ্গে কথা হয়েছে, তমুক দেশের সঙ্গে কথা হয়েছে, পাচার করা অর্থ ফেরত আনা যাবে...।’
জবাবে দেলোয়ার চৌধুরী বলেন, অ্যাশিউরেন্স এবং ইন্স্যুরেন্স এক জিনিস নয়। প্রিমিয়াম না দিলে ইন্স্যুরেন্স হবে? কিস্তির টাকা যদি না দেয়া হয় তাহলে কি পলিসির টাকা পাওয়া যাবে ? এশিউর করলেই কি এটি ‘ইন্স্যুরেন্স’ হলো ?
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার খবর কী? বাংলাদেশ ব্যাংকের অবস্থা তথৈবচ। ক্রিয়েটিভিটি, ইনোভেটিভ ক্যারেক্টার অনেক বেশি দরকার। রেগুলেটরি বডির বক্তব্য না নিয়ে মানিলন্ডারিং মামলায় চার্জশিট দিয়ে দেয়া হচ্ছে। যার ক্ষেত খেয়ে ফেললো, তাকে বাদ দিয়েই মামলা হচ্ছে। তাহলে অর্থ পাচার মামলার প্রমাণটি কেমন করে হবে? অর্থই বা ফেরত আসবে কিভাবে?
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে বিনা টেন্ডারে সাড়ে ছয় কোটি টাকার ‘পরামর্শ’ কিনেছিল দুদক। হাসিনার আমলে ১২ বছর ধরে কেনা হয় কথিত এসব পরামর্শ। ‘অক্টোখান চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট’ নামক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয় পরামর্শক হিসেবে। ফলাফল- মূষিক প্রসব। অর্থ ফেরত আনতে ‘বাংলাদেশ জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টাস্কফোর্স প্রটোকল অব কো-অপারেশনের নামে ফের পরামর্শ ক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে জয়েন্ট টাক্সফোর্স। ইন্টারন্যাশনাল এন্টিকরাপশন কো-অর্ডিনেশন সেন্টার (আইএসিসিসি) নামক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিনা টেন্ডারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বাধীন যৌথ টাস্কফোর্সের নেতৃত্বে রয়েছে দুদক। যেসব শর্তে আইএসিসিসিকে যুক্ত করা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে অর্থ পাচার সংক্রান্ত তদন্ত-নথি খতিয়ে দেখতে পারবে ব্যক্তিমালিকানাধীন বেসরকারি এ প্রতিষ্ঠান। ভয়াবহ এমন শর্তে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে দুদক। আইএসসিসিসিকে সম্পৃক্ত করতে রাজি নয় সংস্থাটি। ফলে এ উদ্যোগও কতটা এগোয় এ প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। ইনকিলাব
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com