ডেস্ক রির্পোট:- গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা বৃহস্পতিবার আল-শিফা হাসপাতালের চত্বরে থেকে ৪৮টি লাশ উত্তোলন করেছেন। একসময় গাজার বৃহত্তম চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত এই হাসপাতাল বর্তমানে যুদ্ধে ইসরায়েলের একাধিক হামলার ফলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
সংস্থাটি এর আগেও একই ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, যাতে লাশগুলো শনাক্ত করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যায় অথবা তা সম্ভব না হলে যথাযথভাবে অন্যত্র দাফন করা যায়।
সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল এএফপিকে বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে শনাক্ত হওয়ার পর ৩৮টি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে, যা পরে অন্য কবরস্থানে পুনরায় দাফন করা হবে।
অন্য ১০টি লাশ শনাক্ত করার জন্য সেগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
বাসসাল আরো জানান, হাসপাতাল কমপ্লেক্সের ভেতরে এখনো প্রায় ১৬০টি লাশ রয়ে গেছে এবং উত্তোলনপ্রক্রিয়া আরো কয়েক দিন ধরে চলবে।
এএফপির ধারণ করা ফুটেজে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা হাসপাতালের চত্বরের বিভিন্ন অংশ খুঁড়ছেন এবং সাদা ব্যাগে রাখা মানুষের দেহাবশেষ বের করছেন, যা পরে কম্বল দিয়ে মুড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
গাজার বাসিন্দা মোহাম্মদ আবু আসি তার ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করে গ্রহণ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এটি যেন আবারও যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অনুভব করার মতো। আমার ভাইয়ের মরদেহ খুঁজে পাওয়া মানে যেন আজই তাকে দাফন করা হচ্ছে—ব্যথা ও ক্ষত নতুন করে জেগে উঠছে।’
সুহা আল-শরিফ নামের আরেক গাজাবাসী তার ছেলের মরদেহ খুঁজতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি আমার ছেলে কী পরে ছিল।
এ কারণেই আমি এসেছি। আল্লাহ চাইলে আমি তাকে খুঁজে পাব। আমি তাকে খুঁজে পেতে চাই। আমি একজন মা—আমি ক্লান্ত, জানি না আমার ছেলে কোথায়।’
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজার হাসপাতাল, বিশেষ করে আল-শিফা ইসরায়েলি বাহিনীর একাধিক হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।
ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং ৭ অক্টোবরের হামলায় জিম্মি হিসেবে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের সেখানে আটকে রেখেছে।
এর আগেও গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা আল-শিফা হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছিলেন। গত বছর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় হাসপাতালের ভেতরে ও আশপাশে গণকবরের সন্ধান পাওয়া সংক্রান্ত প্রতিবেদনের পর ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছিল।
ইসরায়েলের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় এক হাজার ২১৮ জন নিহত হন। পাশাপাশি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যাদের মধ্যে ৫৮ জন এখনো গাজায় আটক রয়েছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মতে, তাদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৮ হাজার ৫২৪ জন নিহত হয়েছে বলে হামাস নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। জাতিসংঘ এই সংখ্যাকে নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে।এএফপি
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com