ডেস্ক রির্পোট:- সিন্ডিকেট করে মালয়েশিয়া শ্রমিক পাঠাতে সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত ১ হাজার ১২৮ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ১২টি রিক্রুটিং এজেন্সির ৩২ জনের মালিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার কমিশন এসব মামলার অনুমোদন দিয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার স্থলে অতিরিক্ত পাঁচগুণ অর্থ গ্রহণ করে ৬৭ হাজার ৩৮০ জন প্রবাসী থেকে ওই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এসব মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই ১২টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মামলায় আসামি করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মেসার্স ওরবিটাল এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স ওরবিটাল ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৯ হাজার ২৪ জন প্রবাসীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ১৫১ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। প্রতিষ্ঠান দুটির মালিক সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, তাঁর স্ত্রী কাশ্মীরি কামাল ও মেয়ে নাফিসা কামালকে এসব মামলায় আসামি করা হচ্ছে।
স্নিগ্ধা ওভারসিজ লিমিটেডের মাধ্যমে ৬ হাজার ৬৫৭ জন প্রবাসীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ১১১ কোটি ৫০ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম, শেখ আব্দুল্লাহ, জাহাঙ্গীর আলম, এম আমিরুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, মো. জিয়াউর রহমান ভূঁইয়াকে আসামি করা হচ্ছে।
রিক্রুটিং এজেন্সি বিনিময় ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৫ হাজার ৪৫৮ জন থেকে অতিরিক্ত ৯১ কোটি ৪২ লাখ ১৫ হাজার টাকা গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক চৌদ্দগ্রামের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সোবহান ভূঁইয়া, তার স্ত্রী তাসলিমা আক্তারকে আসামি করা হচ্ছে।
ফাইভএম ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৭ হাজার ১২৪ জন প্রবাসী থেকে অতিরিক্ত ১১৯ কোটি ৩২ লাখ ৭০ হাজার টাকা গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, নূর মোহাম্মদ আব্দুল মুকিত, মেহবুবা আফতাব সাথি, মাসুদ উদ্দিনের মেয়ে তাসনিয়া মাসুদকে আসামি করা হচ্ছে।
মেসার্স ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭৮৮ জন থেকে ৬৩ কোটি ৪৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোহা. নুর আলী, তার স্ত্রী সেলিনা আলী, মেয়ে নাবিলা আলী, নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাবেক সচিব খোন্দকার শওকত হোসেন আসামি করা হচ্ছে।
ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাধ্যমে ৭ হাজার ৭৮৭ জন থেকে ১৩০ কোটি ৪৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোহাম্মদ রুহুল আমিন এবং তার স্ত্রী লুৎফুর নেছা শেলীকে আসামি করা হচ্ছে।
মেসার্স আহমদ ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৮ হাজার ৫৯২ জন প্রবাসীর কাছ থেকে ১৪৩ কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ঢাকা-২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদকে আসামি করা হচ্ছে।
বি এম ট্রাভেলস লিমিটেডের মাধ্যমে ৮ হাজার ৯৩ জন প্রবাসীর কাছ থেকে ১৩৫ কোটি ৫৫ লাখ ৭৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মো. শফিকুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী মৌসুমি আক্তারকে আসামি করা হচ্ছে।
বিএনএস ওভারসীজ লিমিটেডের মাধ্যমে ৪ হাজার ২১৫ জন প্রবাসী থেকে ৭০ কোটি ৬০ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক যুবলীগ নেতা ইশতিয়াক আহমেদ সৈকত ও তার স্ত্রী নসরুন নেছাকে আসামি করা হচ্ছে।
রুবেল বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে ২ হাজার ৮৪৫ জন থেকে ৪৭ কোটি ৬৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মুহাম্মদ মজিবুল হক রুবেল তার স্ত্রী কামরুন নাহার হীরামনিকে আসামি করা হচ্ছে।
এ ছাড়া দি ইফতি ওভারসিজের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭৯৭ জন প্রবাসী থেকে অতিরিক্ত ৬৩ কোটি ৫৯ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. রুবেল ও বোরহান উদ্দিন পান্নাকে আসামি করা হচ্ছে।
দুদকের অনুসন্ধানে মালয়েশিয়াগামী প্রত্যেক প্রবাসীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হয়েছে ধরে হিসাব করা হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০ (বি) / ১৬১ / ১৬২ / ১৬৩ / ১৬৪ / ১৬৫ (ক) / ৪২০ / ৪০৯ / ১০৯ ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com