ডেস্ক রির্পোট:- শেখ হাসিনা ছিলেন দিল্লির নাচের পুতুল। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার লোভে তিনি মোদীর পরামর্শে আমলাদের দিয়ে সবকিছু করাতেন। আওয়ামী লীগের নেতাদের ওপর আস্থা রাখতে পারতেন না। দলের কর্মকান্ড দেখভাল থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের সব কাজই আমলাদের দিয়ে করাতেন। প্রশাসন চালাতো আমলারা আর মন্ত্রী-এমপিদের কাজ ছিল বিএনপিকে গালিগালাজ করা। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সময় সারা দেশে কয়েক দফায় লকডাউন দেয়া হয়। এ সময় মানুষকে সহায়তার জন্য জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা না নিয়ে তিনি ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স ভেঙ্গে সচিবকে (৬৪ জেলায় ৬৪ জন সচিব) দায়িত্ব দেন। তারা গ্রামের মানুষের তালিকা করা এবং তাদের কাছে সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেয়ার কাজ করেন। এতে সচিবরা শত শত কোটি টাকার লোপাট করেন। জনপ্রতিনিধিদের কাজ আমলাদের দিয়ে করানোয় সংসদে বিতর্ক তোলা হলেও পদ-পদবি হারানোর ভয়ে মন্ত্রী-এমপিদের প্রতিবাদ বেশিদূর এগোয়নি। করোনার ওই সময় যে ৬৪ সচিব সরকারি ত্রাণ বিলিবন্ঠন এবং দুর্গতদের তালিকা করার দায়িত্বে ছিলেন তাদের ভুমিকা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার অলিগার্ক ওই আমলাদের ‘আমলনামা’র খতিয়ান পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কট্টর আওয়ামী লীগার এবং ‘র’ এর এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ওই সচিবদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুুল মোমেন বলেন, আসলে ফ্যাসিষ্ট আগওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোভিড-১৯ সময় ত্রাণ ও টাকা বিতরণের নামে অনিয়ম গুলো ক্ষতিয়ে দেখা হবে। সচিবরা কি কি দায়িত্ব পালন করেছেন সে গুলো জানতে চাওয়া হবে।
সুত্র জানায়, করোনায় লক ডাউনের সময় প্রান্তিক মানুষকে সরাসরি সহায়তার উদ্যোগের পর ত্রাণ ও টাকা বিতরণে প্রভাব বিস্তার, ডিসিদের উপর ক্ষমতার অবব্যবহার এবং জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিরোধীদলের উপরে আক্রমনের সহযোগিতা আশ্বাসসহ জেলার উন্নয়ন কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৬৪ জেলায় দায়িত্ব পালন করা ৬৪ জন সচিবের তথ্য সংগ্রহ করছে সরকার। ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে তালিকা চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। দুই কোটি মানুষকে তথা ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেয় তখনকার সরকার। এ জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছিলো ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। কিন্ত ১৫ লাখ পরিবারের কাছে টাকা পৌঁছানো যায়নি যথাযথ তথ্যভান্ডারের অভাবে। পরে ক্ষতিগ্রস্ত এক লাখ কৃষককে এককালীন ৫ হাজার টাকা করে নগদের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। এপ্রেক্ষিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য প্রতি জেলায় রাজনৈতিক নেতাদের বাদ রেখে একজন করে সচিবকে দায়িত্ব দিয়ে আাদেশ জারি করেছিলো ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগসহ শরীক দলের শীর্ষ নেতারা প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আমলা নির্ভরতা নিয়ে প্রকাশ্যে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনেও ক্ষোভের বহির্প্রকাশ করেন তারা। বাজেট অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ আমলাদের বেশি বেশি দায়িত্ব দেওয়ার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা সচিবদের ওপরে। এটা খেয়াল রাখতে হবে। জাতীয় পার্টির এমপি কাজী ফিরোজ রশীদও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগের বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে, কারণ দেশে কোনো রাজনীতি নেই। এখন রাজনীতিবিদদের চেয়ে আমলাদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। রাজনীতিশূন্য, কোথাও রাজনীতি নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছকু জনপ্রশান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, আসলে বিষয়টি নিয়ে কাজ হচ্ছে। তবে কবে চিঠি দিবে তা বলতে পারছি না।
এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সমম্বয়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার বলেন, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা সচিবদের ওপরে। সেখানে নিয়ম ভেঙ্গে ৬৪ জেলায় ৬৪ জন সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়। এটা কি কারণে করা হয়েছে।তারা দায়িত্ব পালন কালে কোভিড-১৯ ত্রাণ ও টাকা বিতরণে নয় ছয় হয়েছে। একজন আওয়ামীলীগের নেতার ফোনে অনেক টাকা দেয়া হয়েছে। সেটা ক্ষতিয়ে দেখার দরকার। আমরা চাই বর্তমান সরকার ও দুদক বিষয়টি ক্ষতিয়ে আসল রহস্য বের করবে।
জানা গেছে, পতীত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা ওই অফিস আদেশে বলা হয়, দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব বা সচিবরা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয় কাজে তার মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা দপ্তর সংস্থার উপযুক্তসংখ্যক কর্মকর্তাকে সম্পৃক্ত করতে পারবেন। নিয়োগ করা কর্মকর্তারা জেলার সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণমাধ্যম ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করে কোডিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনার কাজ তত্ত্বাবধান ও পরিবীক্ষণ করবেন। পাশাপাশি জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পরিবীক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করবেন। সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত সমস্যা বা চ্যালেঞ্জ বা অন্য বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা দপ্তর বা সংস্থাকে লিখিত আকারে জানাবেন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে নিয়মিত অবহিত করবেন। আরো বলা হয়, অবসর বা বদলির কারণে সিনিয়র সচিব বা সচিবের দপ্তর পরিবর্তন বা পদ শূন্য হলে সেখানে নিযুক্ত সিনিয়র সচিব বা সচিব দায়িত্ব পালন করবেন। দায়িত্ব পালন করা সচিবরা ছিলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম (মুন্সীগঞ্জ), আইসিটি বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম (কুমিল্লা), অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম (সিরাজগঞ্জ), জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন (চট্টগ্রাম), স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সাবেক সচিব হেলারুদ্দীন আহমদ (কক্সবাজার), জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব এবং নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান (শরীয়তপুর), পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার (মানিকগঞ্জ), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল (যশোর), কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম (লালমনিরহাট), গণপূর্ত সাবেক সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার (গোপালগঞ্জ), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (রাঙ্গামাটি), প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সাবেক সচিব পবন চৌধুরী (লক্ষ্মীপুর), সড়ক বিভাগের সাবেক সচিব মো. নজরুল ইসলাম (শেরপুর), ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ (ফরিদপুর), জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবুল কাশেম (রাজশাহী), কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের সাবেক মহাপরিচালক সত্যব্রত সাহা (গাজীপুর), শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কেএম আলী আজম (বরিশাল), সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন (বান্দরবান), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শেখ ইউসুফ হারুন (সাতক্ষীরা), বিপিএটিসির রেক্টর মো. রকিব হোসেন (নারায়ণগঞ্জ), যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. আখতার হোসেন (মাদারীপুর), রেলসচিব সেলিম রেজা (পাবনা), পাটসচিব লোকমান হোসেন মিয়া (সিলেট), সমবায় সচিব রেজাউল আহসান (রংপুর), মুক্তিযুদ্ধ সচিব তপন কান্তি ঘোষ (বি.বাড়িয়া), খাদ্যসচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম (চুয়াডাঙ্গা), শিক্ষাসচিব মো. মাহবুব হোসেন (জামালপুর), মৎস্যসচিব রওনক মাহমুদ (পটুয়াখালী), স্বাস্থ্যশিক্ষা সচিব মো. আলী নূর (ঢাকা), পরিকল্পনা সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী (সুনামগঞ্জ), মো. নুরুল ইসলাম (দিনাজপুর), বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর বদরুন নেছা (নরসিংদী), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া (পিরোজপুর), পরিবেশ সচিব জিয়াউল হাসান (কুড়িগ্রাম), স্বাস্থ্যসচিব মো. আবদুল মান্নান (কিশোরগঞ্জ), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম (নীলফামারী), কারিগরি ও মাদরাসা সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান (মৌলভীবাজার), ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন (বগুড়া), নৌসচিব মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের (সমন্বয়) সচিব মো. কামাল হোসেন (খুলনা), পিপিপির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা আফরোজ (কুষ্টিয়া), শ্রমসচিব একএম আবদুস সালাম (নওগাঁ), আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী (নোয়াখালী), পরিসংখ্যান সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী (নাটোর), পিএসসি সচিব মোছা. আছিয়া খাতুন (রাজবাড়ী), দুর্যোগ সচিব মোহাম্মদ মোসীন (চাঁদপুর), সংস্কৃতি সচিব মো. বদরুল আরেফীন (খাগড়াছড়ি),পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. মামুন আল রশীদ (হবিগঞ্জ), পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মোছাম্মৎ নাসিমা বেগম (মাগুরা), পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দীক (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান দুলাল কৃষ্ণ সাহা (গাইবান্ধা), বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান (বরগুনা), তথ্য সচিব খাজা মিয়া (নড়াইল), পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস (টাঙ্গাইল), ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল (ঝিনাইদহ), বিমানসচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন (মেহেরপুর), ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান (পঞ্চগড়), জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জাকিয়া সুলতানা (নেত্রকোনা), সমাজকল্যাণ সচিব মাহফুজা আখতার (বাগেরহাট), ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার (ঝালকাঠি), পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শরিফা খান (ঠাকুরগাঁও), পার্বত্য সচিব মোছাম্মৎ হামিদা বেগম (ময়মনসিংহ), ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোকাব্বির হোসেন (ভোলা) এবং মহিলা ও শিশুসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম (জয়পুরহাট)। তারা সকলেই অবসরে চলে গেছেন। এদের মধ্যে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ট হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় কেউ কেউ কারাগারে রয়েছেন। করোনাকালে দায়িত্বর পালনের সময় তাদের অনেকেই ক্ষমতা অপব্যহার করে কোটি কোটি টাকা লটুপাট করেছেন। তাদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। ইতোমধ্যে এসব সচিবের তালিকা চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে ১১ কোটি নাগরিকের তথ্য বিক্রি করা ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। করোনার সময় আইসিটি বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম কুমিল্লা জেলার দায়িত্ব পালন করেছেন।
সাবেক ৬৪ জেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবরা দায়িত্ব নিয়ে নিজেদের ইচ্ছা মতো সাহায্য কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তৎকালিন সংসদ সদস্য ও রাজনৈতক নেতাদের তাদের ওপর নির্ভরশীল হত হয়। তাদের মাধ্যমে তালিকা প্রদান করতে হয়। তালিকাকে অনেকাংশে গুরুত্ব না দেওয়ায় লাখ লাখ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সহায়তার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। তাই কোন কোন জেলায় করোনা সহায়তায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ ওঠে। তাছাড়া করোনায় সরকারি সহায়তার নামে বিশেষ সিন্ডেকেট গড়ে ওঠে। তাদের মাধ্যমে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তাদের ইচ্ছায় সবকিছু পরিচালিত হয়েছে। সহায়তার অর্থ পায়নি। অধিকাংশই পতীত সরকারের দালালরাই এসব একক সুবিধা নিয়ে নয় ছয় করেছে। এমন অভিযোগ তৎকালিন পতীত সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কাছে করা হলেও বিষয়টি আমলে আনা হয়নি। এসব প্রভাবশালী আমলারা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ফলে পরবর্তীতে করোনাকালে সরকারি সহায়তার নামে শত শত কোটি টাকা আনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি ধাপাচাপা পড়ে যায়। দুর্নীতিবাজ আমলারা হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। দীর্ঘ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুৎ হয়ে পালিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে আশ্রয় রয়েছেন। গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালিন সরকার গঠন হয়। পতীত সরকারের আমলে মেগা প্রকল্প থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত শুরু করে সরকার। এরই অংশ হিসেবে ২০২০ সালে ৬৪ জেলায় করোনায় প্রান্তিক জনগোষ্টীকে সরকারি সহায়তায় দায়িত্ব পাওয়া ৬৪ জেলায় সচিবদের আমলনামা যাচাই করার সিদ্ধান্ত হয়। ইতিমধ্যে তাদের বিষয়ে তথ্য উপাত্ত্য সংগ্রহ করে যাচাই চলছে। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযুক্ত থাকায় কয়েকজন সচিবকে গ্রেফতার করেছে।
এ বিষয়ে সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. বদিউর রহমান অনেক আগে বলেছেন, তৎকালিন দেশের রাজনীতি আমলা ও ব্যবসায়ীদের পকেটে চলে গিয়েছিল। যা হবার তাই হয়েছ্ েদেশপ্রেমিক ও ন্যায়নিষ্ঠ না হলে আমলা যত পাকা হন তিনি তত বেশি শয়তান হবেন। এখন আমলাতন্ত্র ও বাণিজ্য রাজনীতিতে চেপে বসেছে। দেশে দীর্ঘদিন ধরে সকল দলের অংশগ্রহণে অবাধ নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হওয়া কারণে এসব হয়েছে।ইনকিলাব
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com