ডেস্ক রির্পোট:- সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের দমনে দেশব্যাপী পরিচালিত অপারেশন ডেভিল হান্টে গত ৭২ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৬০৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী। ৮ই ফেব্রুয়ারি রাত থেকে গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়। প্রথম ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার করা হয় ১৩০৮ জনকে। ৯ই ফেব্রুয়ারি ডেভিল হান্টে ৩৪৩ ও অন্যান্য মামলা ও ওয়ারেন্টে ১ হাজার ১৭৮ জনসহ ১৫২১ ও সর্বশেষ ডেভিল হান্টে ৬০৭ জন ও অন্যান্য মামলা এবং ওয়ারেন্টে ১ হাজার ১৬৮ জন মিলিয়ে ১ হাজার ৭৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত দুই দিনের অভিযানে অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, আসামি গ্রেপ্তারের পাশাপাশি অস্ত্র উদ্ধার করেছেন অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার অভিযানে ২টি পিস্তল, ১টি এলজি, ১টি ওয়ান শুটার গান, ১টি পাইপ গান, ২ রাউন্ড গুলি, ৫টি কার্তুজ, ২টি চাপাতি, ৬টি রামদা, ১৩টি ছুরি, ২টি কুড়াল, ৩টি হাতুড়ি, ২টি প্লাস, ২টি বাটাল, ২টি লাঠি ও ১টি করাত উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগের দিন ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন, ১১ রাউন্ড গুলি, ৬টি শটগান কার্তুজ, ১০টি ককটেলসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। অভিযানিক সূত্রগুলো বলছে, অপারেশন ডেভিল হান্টে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও, দাগি অপরাধী, জেল পলাতক আসামি, মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ছাড়া অভিযানে থানা থেকে লুট হওয়া এবং অপরাধীদের হাতে থাকা অবৈধ অস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, শনিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার বৈঠকে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়াসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা-ভাঙচুর এবং গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ভাঙচুর ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার সময় সরকার এই অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
গাজীপুরে গ্রেপ্তার আরও ৮১
অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ এর তৃতীয় দিনে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের আট থানায় ৬৯ জন ও গাজীপুর জেলায় পাঁচ থানায় ১২ জনসহ মোট ৮১ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এ নিয়ে তিনদিনে অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে জেলা ও মহানগরে মোট ২৬১ জন গ্রেপ্তার হলো। তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থক। মঙ্গলবার সকালে জেলা পুলিশ ও গাজীপুর মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের সিটি এসবি’র উপ- কমিশনার আলমগীর হোসেন জানান, নগরের ৮টি থানায় অপারেশন ডেভিল হান্টের তৃতীয় দিনে ৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে সদর থানায় ১৯ জন, টঙ্গী পূর্ব থানায় ৭ জন, টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৮ জন, গাছা থানায় ৬, বাসন থানায় ৯, পুবাইল থানায় ২ জনসহ অন্যান্য থানায় মোট ৬৯ জনকে আটক করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক জানান, অপারেশন ডেভিল হান্টের তৃতীয় দিনে সোমবার দিবাগত রাতে গাজীপুর জেলার পাঁচটি থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
আশুলিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার
ঢাকার আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা মো. আব্দুর রহমান (৫৮)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকালে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আলম সিদ্দিকী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, সোমবার দিবাগত গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আশুলিয়ার ভাদাইল মধ্যপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আব্দুর রহমান আশুলিয়ার ভাদাইল মধ্যপাড়া এলাকার মৃত সোনা মিয়ার ছেলে এবং ধামসোনা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
পুলিশ জানায়, আব্দুর রহমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রত্যক্ষভাবে ছাত্র-জনতাকে হত্যার ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার বিষয়ে পর্যালোচনা করে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আশুলিয়ার ভাদাইল মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আলম সিদ্দিকী বলেন, আব্দুর রহমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। গ্রেপ্তারের পর তাকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে গ্রেপ্তার ৪০
নারায়ণগঞ্জে অপারেশন ডেভিল হান্ট ও পুলিশের নিয়মিত অভিযানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে ডেভিল হান্ট অভিযানে ২০ জন। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যার অভিযোগে করা একাধিক মামলা এবং বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টসহ মামলার অভিযুক্ত আসামি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) তারেক আল মেহেদী।
তারেক আল মেহেদী জানান, নারায়ণগঞ্জে অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টসহ মামলার অভিযুক্ত ২০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী মামলায় গ্রেপ্তার ফতুল্লার থেকে রুবেল (৪৫), সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে উপজেলার ২নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ হোসেন (৩২), সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সংক্রিয় সদস্য নূর হোসেন কুট্টি (২৫), বন্দর থেকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন (৫২), রূপগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ইসমাইল হোসেন (৩৪), আড়াইহাজার থেকে আড়াইহাজার পৌরসভা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হারুন অর রশীদ (৪৪), সোনারগাঁও থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ওলামা লীগের সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মো. সোহান (২৫), সোনারগাঁ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রনি হাসান (৩২), সোনারগাঁ থানা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী শফিউর রহমান হিরণ (২২), এ ছাড়াও খাইরুদ্দিন ইমন (২৪) রিফাত হাসান (২০) হোসাইন গাজী (২১) সোহাগ (২২) মোসাদ্দেক হোসেন (২৪) মো. জুয়েল রানা (৩৬) আবু মুছা (৩৮) লিটন (৩২) কামাল উদ্দিন (৫০) মাহাবুব হাসান (৩৮) রাসেল (২৪)কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এরআগে রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডেভিল হান্ট ও পুলিশের নিয়মিত অভিযানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ ১৯ জন গ্রেপ্তার হয়। এরমধ্যে আড়াইহাজার থেকে গ্রেপ্তারকৃত ১৩ জনের মধ্যে ১২ জনই সোমবার বিকালে জামিন পেয়ে যায়।
চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তার ৯
দেশ জুড়ে চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযানে চুয়াডাঙ্গায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) কনক কুমার দাস। এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আকুন্দবাড়িয়া গ্রামের নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ সদস্য সাঈদ আহম্মেদ উৎস (২৫), আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান (৪০), জামজামি ইউনিয়ন যুবলীগের ৬নং ওয়ার্ড সেক্রেটারি জামিরুল ইসলাম (৩৫), ভাংবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম (৩৭), দামুড়হুদা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি হাসান আলী (৪৪), জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রাশেদ মিয়া (৫০), দর্শনা থানার নেহালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন (৩৩), একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক জামাল উদ্দিন (৫৫) এবং দপ্তর সম্পাদক মফিজুল ইসলাম (৪৬)।
চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) কনক কুমার দাস জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে জেলার পাঁচটি থানায় দায়েরকৃত বিভিন্ন মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মহাদেবপুরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার এনায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও এনায়েতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ৫ই আগস্ট পরবর্তী মহাদেবপুর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে সোমবার রাতে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মহাদেবপুর থানার এসআই মনোয়ারুল ইসলাম জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
লালপুরে আওয়ামী লীগ নেতা আটক
নাটোরের লালপুরে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযানে মতিউর রহমান মতি মেম্বার (৫৭) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে লালপুর থানা পুলিশ। মঙ্গলবার ভোর রাতে উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউপি’র বেড়িলাবাড়ি গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মতিউর রহমান একই গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে। তিনি দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন।
মোরেলগঞ্জে আওয়ামী লীগের ১০ নেতাকর্মী আটক
দেশব্যাপী অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ এর অংশ হিসেবে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গত দু’দিনে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের ১০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, উপজেলার পৌর শহরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মঙ্গলবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে আটক করেছে।
কলাপাড়ায় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
সারা দেশের মতো পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পরিচালিত হচ্ছে অপারেশন ডেভিল হান্ট। সোমবার রাতের অভিযানে মহিপুর থানা যুবলীগের সদস্য ও মহিপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. মামুন হাওলাদার (৪৫)কে আটক করেছে মহিপুর থানা পুলিশ।
মহিপুর থানার পুলিশের তথ্যমতে, গতকাল রাত ২টার দিকে সারা দেশের ন্যায় অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা করা হয়। এই অপারেশনে মো. মামুন হাওলাদার নামে এক যুবলীগ নেতা ও মহিপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্যকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
শ্রীমঙ্গল ছাত্রলীগের ৪ নেতা আটক
অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ৪ নেতাকে আটক করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী ও পরিকল্পনাকারী। এদের গত দুইদিন অর্থাৎ রোববার ও সোমবার রাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলতলি গ্রামের মৃত সুরত আলীর ছেলে মো.শহীদ মিয়া (৪৮), মির্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি করুনাময় দেব, মির্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মালেক, কালাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ- সভাপতি নাসিমুর রহমান।
চাঁদপুরে আটক ৫
চাঁদপুরে অপারেশন ডেভিল হান্ট চলাকালীন ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৫ ডাকাত সদস্যকে আটক করে যৌথ বাহিনী। মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মঙ্গলবার রাত তিনটায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে শহরের ওয়্যারলেস বাজার গাজীবাড়ী রোড থেকে আটক করা হয় ডাকাত সদস্যদের। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত, রেজিস্ট্রেশনবিহীন মিনি ট্রাক, একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, তিন রাউন্ড গুলি, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি।
এ সময় তিনি আরও জানান, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সিরাজগঞ্জে গ্রেপ্তার ১০
অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে তিনদিনে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গত রোববার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম (৬৩) তার দ্বিতীয় স্ত্রী জ্যোৎস্না খানম (৫৫), উল্লাপাড়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম (৫০), তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন (৪৫), উল্লাপাড়ার বাঙ্গালা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলার রহমান (৪৯), কাজিপুর উপজেলার মাইজবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক সুমন রেজা (২৪), রায়গঞ্জের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মিলন শেখ (৪৫), শাহজাদপুর উপজেলার বাদশা আকন্দের ছেলে আরিফুল ইসলাম বিপুল (৫০) সঙ্গলা থানার ঘুড়কা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক শরিকুল ইসলাম ওরফে রোকন (৪১)সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হাতিয়ায় অভিযান
অপারেশন ডেভিল হান্টের তৃতীয় দিনে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযান চলাকালীন সময়ে, যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে ২৪ রাউন্ড গুলি ছুড়ে সন্ত্রাসীদের ছত্রভঙ্গ করে, ঘটনাস্থল থেকে ২ জনকে আটক করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল (ম্যাগাজিন ও ১ রাউন্ড গুলিসহ) তিনটি একনলা দেশীয় বন্দুক, ৮টি কার্তুজ, ২০টি ককটেল, দুটি ডেগার, তিনটি ক্রিজ ও একটি তলোয়ার উদ্ধার করা হয়। সোমবার গভীর রাতে হাতিয়ার ৬নং চরকিং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড কলেজ রোডের হাজী আব্দুল বাসার মার্কেটের পাশে কাউছার মিয়ার ব্রিকস ফিল্ডের সামনে পৌঁছালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিদেশি অস্ত্রসহ ২ জন আটক হলেও ১৫ জন পালিয়ে যায়। আটককৃতরা হলো- মো. নবীর উদ্দিন, মো. ইমাম হোসেন। বিষয়টি নিয়ে গতকাল সকাল ১১টার সময় হাতিয়া থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ে নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আবছার আহমেদ বলেন, আটককৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী নাশকতার অভিযোগ রয়েছে।
সুনামগঞ্জে গ্রেপ্তার ৭
সুনামগঞ্জে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ বিশেষ অভিযানে জেলার বিভিন্ন থানা পুলিশ গত ২৪ ঘণ্টায় সাত আওয়ামী নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, বগলাকাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহান উদ্দিন (৩৩), সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, মঙ্গলকাটা গ্রামের রমজান আলী (৬০), মো. খোকন মিয়া (৪০), মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি, রৌয়া গ্রামের মো. খোকন মিয়া (৪০), জগন্নাথপুর পৌরসভা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক, জগন্নাথপুর থানার কেশবপুর গ্রামের মো. কামরুল হাসান তেরা মিয়া (৪০), নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের সহ-সভাপতি, তাহিরপুর উপজেলার সোলেমানপুর গ্রামের মো. আকরামিন হোসেন (২১), ছাতক উপজেলার আট নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি, নোয়াগাঁও গ্রামের জানে আলম (২৮), সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক, ঘাসিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ (৪০)।
মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. জাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে গ্রেপ্তার ১১
দেশ জুড়ে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টে লক্ষ্মীপুরে ৫টি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে- রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান টিটু(৪০), কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মানিক হোসেন (২৮), চণ্ডিপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন (৫৯), লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম (২৩), যুবলীগ নেতা আবদুল মালেক (৩৬), সুজন কুরী (৪০), তছলিম উদ্দিন (৩৭), ওমর ফারুক (৩৮), ছাইফুল ইসলাম (৩৫), আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুবুর রহমান সোহেল (৪৫), রামগতিতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আকতার হোসেন বিপ্লব (৩০) ও যুবলীগ নেতা মো. রুবেল (৪০)।
মির্জাগঞ্জে গ্রেপ্তার ২
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযানে মজিদবারিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মো. খলিলুর রহমান গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ।
সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ভয়াং এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গাড়িবহরে হামলার মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে তাকে আটক করা হয়।
মো. খলিলুর রহমান গাজী উপজেলার মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের ভয়াং গ্রামের মো. হানিফ গাজীর ছেলে।
মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মো. শামীম হাওলাদার বলেন, অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ময়মনসিংহে আটক ৩৯
ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ ৩৯ জনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। গতকাল সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মাহফুজা খাতুন। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে সেজন্য সারা দেশের মতো ময়মনসিংহেও অভিযান চলছে। গোয়েন্দারা বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে। কোনো সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে তথ্য পেলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। জেলা জুড়ে অভিযান চলমান রয়েছে।
মৌলভীবাজারে গ্রেপ্তার ৪৪
মৌলভীবাজারে ৪৪ জন বিভিন্ন উপজেলার আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা যায়, গত দু’দিনে জেলার বিভিন্ন থানায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি করুণাময় দেব, একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মালেক, বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর আওয়ামী লীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফয়জুর রহমান, পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাধাকান্ত দাস, কুলাউড়া উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদ, জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুন নূর ও কালাপুর ইউনিয়ন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাসিমুর রহমান মাশরাফি। এ ছাড়াও গ্রেপ্তার বাকিরা বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মী। জেলা পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন পিপিএম সেবা মুঠোফোনে মানবজমিনকে জানান, জেলায় এ পর্যন্ত ৪৪ জন আটক হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় তাদেরকে আটক করা হয়েছে।
কক্সবাজারে সাবেক হুইপের ব্যক্তিগত সহকারীসহ গ্রেপ্তার ৩
কক্সবাজারে সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমলের ব্যক্তিগত সহকারীসহ ৩ আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল দিবাগত রাত ও সোমবার দিনে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সাবেক হুইপের ব্যক্তিগত সহকারী ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর, উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, সদর উপজেলার ইসলামপুরের শ্রমিক লীগ নেতা পিয়ারু। রামু থানার ওসি ইমন কান্তি চৌধুরী জানান, আবু বক্কর কক্সবাজারের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য, হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমলের ডানহাত হিসেব খ্যাত। ২০১৮ সালের বিএনপি’র অফিস জ্বালিয়ে দেয়ার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ আরিফ হোছাইন।
কুড়িগ্রামে ৬ জন গ্রেপ্তার
কুড়িগ্রামে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী, পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধারে সকল থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। জেলা পুলিশ মিডিয়া সেল জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সদর থানা যুবলীগের সক্রিয় সদস্য মো. সাজু মিয়া (৩৪), নাগেশ্বরী উপজেলা নুনখাওয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তৈবুর রহমান, নাগেশ্বরী সন্তোষপুর ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ড নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী (২৫), ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ কাশিপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শংকর কুমার সেন (৪৮), নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. সমেশ উদ্দিন (৪৭) ও রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আলাল উদ্দিন (৫৫)সহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঝিনাইদহে আটক ৫
ঝিনাইদহে পাঁচজনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। সদর, শৈলকূপা ও কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। আটকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের ছাবের আলীর ছেলে কামাল শেখ, শৈলকূপার কৌপাড়া গ্রামের শহিদ বিশ্বাসের ছেলে সাইদ বিশ্বাস, একই উপজেলার সাতগাছি গ্রামের আমিন আলীর ছেলে মুকুল আহমেদ, কালীগঞ্জের খড়িকাডাঙ্গা গ্রামের মৃত ইসমাইলের ছেলে আতাউর রহমান ও একই উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত আনোয়ার মিয়ার ছেলে আরিফুল ইসলাম। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার দিবাগত রাত ও মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটক করে যৌথবাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা রয়েছে। তাদের আদালত সোপর্দ করা হবে।
ভৈরবে আটক ৪
ভৈরবে সাবেক কমিশনারসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার দিনভর অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন- পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাবেক সভাপতি ও সাবেক কমিশনার আফজাল হোসেন ভূঁইয়া (৬৭)। তিনি ভৈরব বাজারের হাজী আবু নছর ওহিদ ভূঁইয়ার ছেলে। শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া এলাকার হাজী আব্দুর রহমান মিয়ার ছেলে ও আওয়ামী লীগ সক্রিয় কর্মী নান্নু মিয়া (৬২), গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি এলাকার কালা মিয়ার ছেলে ও আওয়ামী লীগ কর্মী বাদল মিয়া (৩৮) এবং শিবপুর ইউনিয়নের মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মুর্শিদ মিয়া (৫০)। ভৈরব থানার ওসি খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, আটককৃত চারজনই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জনতার ওপর হামলা ও নাশকতার পরিকল্পনাকারী। দিনভর অভিযানে তাদের আটক করা হয়েছে। আসামিদের রাতেই কারাগারের মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ফেনীতে গ্রেপ্তার ১৬
ফেনীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত জেলার ছয় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- দাগনভূঞা পৌরসভার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু নাসের (৬২), জায়লস্কর ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান (৬০), রাজাপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা খাজা মাঈনুদ্দিন চিশতী (৫৫), সেকান্তরপুর গ্রামের আলাউদ্দিন (৪৭), সোনাগাজীর বাদুরিয়া গ্রামের মো. ইউনুছ (৪৫), মান্দারী গ্রামের মাবুল হক (৬৭), বগাদানা গ্রামের বাহার উল্যাহ (৪৮), ছাগলনাইয়ার পশ্চিম দেবপুর গ্রামের ওবায়দুল হক (৭০), পরশুরামের বক্সমাহমুদ এলাকার আবদুল হামিদ (৪৮), ফেনী সদরের কাজিরবাগ ইউনিয়নের অহিদুল্লাহ ওরফে শিপন মেম্বর (৪০), শর্শদি ইউনিয়নের ইসমাঈল হোসেন (৪০), মধ্যম চাড়িপুর এলাকার গোলাম রসুল ছোটন (৩৬) ও পৌরসভার রামপুর এলাকার নাইমুল ইসলাম নাঈম। এর আগে সোমবার দুপুরে দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মাহফুজুর রহমান (২৪), সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের বেতাগাঁও গ্রামের ছাত্রলীগকর্মী মো. ইসমাঈল (৩০) এবং ফেনী সদর উপজেলা মোটবী ইউনিয়নের মধ্যম লক্ষ্মীপুর গ্রামের ছাত্রলীগকর্মী সাজ্জাদ আহাম্মদ সায়েম (২৩)কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন বলেন, আটককৃত ১৬ জনকে ৫ই আগস্ট পরবর্তী ফেনী মডেল থানায় করা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়ে সংঘটিত হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।মানবজমিন
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com