ডেস্ক রির্পোট:- প্রায় এক মাস ধরে খালি আছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও কমিশনারের পদ। ফলে অনেক সিদ্ধান্তও আটকে আছে। ইতোমধ্যেই দুদক পুনর্গঠনে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগে সুপারিশ দিতে গঠিত সার্চ কমিটি এ নিয়ে কাজ করছে। নতুন কমিশন গঠনে সার্চকমিটির হাতে রয়েছে প্রায় শতাধিক নামের তালিকা। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে শেষপর্যায়ে নিয়ে এসেছে সার্চ কমিটি। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে যে কোনো সময় নতুন কমিশন গঠন হবে বলে জানা গেছে। দুদক গঠনে সার্চ কমিটি ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ২৯ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ এবং কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক ও কমিশনার (অনুসন্ধান) মোছা. আছিয়া খাতুন পদত্যাগ করেন। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন। এরপর গত ১০ নভেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হককে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. মাহবুব হোসেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বাছাই কমিটির কার্য-সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করছে।
দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই নানাভাবে সার্চ কমিটির কাছে দুদক চেয়ারম্যান বা কমিশনার হতে আগ্রহীদের নাম জমা হয়েছে। কেউ সরাসরি কেউ প্রতিনিধির মাধ্যমে কেউ আবার অন্য ব্যক্তির জন্য নাম সুপারিশ করে সার্চ কমিটির কাছে প্রস্তাব করেছেন। তিনটি পদের জন্য এই সংখ্যা প্রায় শতাধিক বলে জানা গেছে। তবে দুদক পুনর্গঠনের জন্য সার্চ কমিটি তালিকা যাচাইবাছাই করে সংক্ষিপ্ত করছে। দ্রুতই রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেবেন তারা। পরে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করবে। ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪’ অনুযায়ী, কমিশন তিনজন কমিশনারের সমন্বয়ে গঠিত হয়। তাদের মধ্য থেকে একজন হন চেয়ারম্যান। কমিশনারদের মেয়াদ পাঁচ বছর। জানা গেছে, দুদক গঠনে সার্চ কমিটি কমিশনার নিয়োগে সুপারিশ দিতে উপস্থিত সদস্যদের কমপক্ষে তিনজনের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কমিশনারের প্রতিটি শূন্যপদের বিপরীতে দুজন ব্যক্তির নামের তালিকা প্রণয়ন করবে। এরপর আইনের ধারা ৬-এর অধীনে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহেই নতুন কমিশন গঠন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেউ নাম প্রকাশ করে কিছু বলতে রাজি হননি। কবে নাগাদ দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন হচ্ছে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আসলে এটি কমিটি ঠিক করবেন। তারা এটি নিয়ে কাজ করছেন- এটা জানি। আমাদের দায়িত্ব এটি সরকারকে পৌঁছে দেওয়া। আমাদের কর্মকর্তারা সার্চ কমিটির মিটিংয়ে সহায়তা দেওয়ার জন্য থাকেন। সার্চ কমিটি তাদের কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন।
দুদককে কার্যকর করতে সংস্কার কমিশনও গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। দুর্নীতিবিরোধী রাষ্ট্রীয় এই সংস্থাটিকে সংস্কারে সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ও কমিশনারসহ দুদকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেছে সংস্কার কমিশন। কিন্তু চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অনুপস্থিতিতে বর্তমানে মামলার অনুমোদন, দায়ের ও চার্জশিটসহ বিভিন্ন বিষয়ে কিংবা জরুরি প্রয়োজনে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আইনে কিছু উল্লেখ নেই। ফলে গত ২৯ অক্টোবর আগের কমিশন পদত্যাগের পর থেকে সংস্থাটির কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা বিরাজ করছে। গত ২১ নভেম্বর দুদক প্রতিষ্ঠার ২০ বছর পূর্ণ হলেও বার্ষিকী পালনে কোনো তোড়জোড় দেখা যায়নি। দুদকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, এখন কমিশন নেই। এতে অনেক কাজও আটকে আছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আইনে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ থাকা প্রয়োজন।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com