ডেস্ক রির্পোট:- আইনজীবী সমাজে কৌতুকটি বহুল প্রচলিত। খদ্দেরের টাকা পেলে বারবনিতা শুয়ে পড়েন। আর মক্কেলের টাকা পেলে আইনজীবী দাঁড়িয়ে যান। তারা দাঁড়িয়ে যান মক্কেলের পক্ষে। তারা আদালতে দাঁড়ান মক্কেলের সাংবিধানিক ও আইনি অধিকার নিশ্চিত করতে। আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীরা তাই গুরুত্বপূর্ণ একটি পক্ষ। কৌতুকটির প্রচলন মূলত আইনজীবীর নীতি-নৈতিকতার প্রশ্নে। বাস্তবিক অর্থে আইন পেশা অত্যন্ত অভিজাত, সম্মানিত ও স্বাধীন একটি পেশা। নাগরিক হিসেবে আইনজীবীদের মর্যাদাও উচ্চতর। এ পেশা থেকে উঠে এসেছেন মহাত্মা গান্ধী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মহাত্মা গান্ধী, শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মতো বড় বড় রাজনীতিবিদ।
অগ্রসর মানুষদের সংঘ হিসেবে আইনজীবী সমিতিগুলোও মুক্ত মত প্রকাশ ও অবাধ রাজনীতি চর্চার কেন্দ্র স্থল। অনেক আইনজীবী সরাসরি রাজনীতি করেন। সমিতিগুলোর নেতৃত্বেও থাকেন রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আইনজীবীগণ। যে যেই মতের রাজনীতিই করুন না কেন, আইনজীবী-রাজনীতিবিদদের একটি রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা ও প্রতিশ্রুতি থাকে। আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যেসব আইনজীবী সম্পৃক্ত, তারা তাদের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির কথা এক মিনিটের জন্যও ভোলেন না। ন্যায় হোক, অন্যায় হোক তারা শেখ হাসিনাকেই সমর্থন করে যাচ্ছেন। আওয়ামী আইনজীবীদের সমর্থনেই ক্ষমতাচ্যুত ও ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা বিচার বিভাগকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পেরেছেন। জন সমর্থন না থাকলেও বার পলিটিক্সে মেরে-কেটে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদেরকেই চেয়ারে বসাতেন হাসিনা। পক্ষান্তরে, ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘ লড়াইয়ে গত দেড় দশক ধরে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন আইনজীবীরা। নানা ভাগে বিভক্ত হলেও ‘হাসিনা’ প্রশ্নে সবাই ছিলেন একাট্টা। ফ্যাসিস্ট রেজিমের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে জাতীয়তাবাদী ঘরানায় যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা হামলা, মামলা, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনেও আওয়ামী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী চেতনার আইনজীবীরা ছিলেন যুথবদ্ধ। ছাত্র-জনতার সঙ্গে মিশে গিয়ে রাজপথে নেমেছেন ‘হাসিনা উৎখাত’ ইস্যুতে। সম্মিলিত রক্তদানের বদৌলতে গত ৫ আগস্ট পালিয়ে যান হাসিনা। ফেলে যান রক্তাক্ত বাংলাদেশ। শত শত ছাত্র-জনতা হত্যার দায়ে খুনি হাসিনা এবং তার দোসররা এখন বিচারের মুখোমুখি।
ফ্যাসিজম কায়েমে হাসিনা যে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’ গঠন করেছিলেন, একই ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় এখন হাসিনা ও তার দোসররা। হাসিনা সপরিবারে পালিয়ে গেছেন। ধরা পড়েছেন তার কিছু দোসর, খুনি। বিচারের কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে হাসিনার ‘মন্ত্রী’, ‘এমপি’, ‘সেনা, পুলিশ, র্যাব কর্মকর্তা’ এবং ‘বিচারপতি’ পদবাচ্যের কতিপয় খুনিকে। কিন্তু বিস্ময়করভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে ফ্যাসিবাদী আন্দোলনে যুক্ত আওয়ামীবিরোধী কিছু আইনজীবীর ভূমিকা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাদের দেখা যাচ্ছে খুনিদের পক্ষে অবতীর্ণ হতে। রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী হিসেবেও নয়। ট্রাইব্যুনালে সরাসরি ফ্যাসিস্ট ও খুনিদের পক্ষে আইনি লড়াই করবেনÑ মর্মে ওকালতনামা দাখিল করেছেন তারা। গতকাল এবং গত ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ওকালতনামা দাখিল করতে দেখা যায়। এর মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের মতাদর্শে বিশ্বাসী আইনজীবীও রয়েছেন। বড় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি করছেনÑ এমন কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবীর কথাও জানা যায়, যারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার খুনি বাহিনীর পক্ষে আইনি সহায়তা প্রদানে সম্মত হয়েছেন। ইতিমধ্যে এদের কয়েকজন মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে ওকালতনামায় স্বাক্ষরও নিয়েছেন।
বিচার কার্যক্রম শুরুর আগে-পরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে অন্তত দু’জন বহুল পরিচিত আইনজীবীর কথা হয়। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় প্রতিবেদক জানতে চান, ফ্যাসিবাদের দোসর ও খুনিদের পক্ষে কেন আইনজীবী হলেন? জবাবে তারা পেশাদারিত্বের দোহাই দেন। অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ক্লায়েন্টকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দেয়াই আইনজীবীর পেশাগত প্রতিশ্রুতি। রাজনৈতিক বিশ্বাস একান্তই ব্যক্তিগত। আদালতে রাজনৈতিক বিশ্বাসের প্রশ্ন তোলাটাই অবান্তর। তা ছাড়া কোনো ব্যক্তি যদি অপরাধ করেও থাকে, তবুও তার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে আইনগত সহায়তা পাওয়ার। দুই আইনজীবীর বক্তব্য ছিলো প্রায় অভিন্ন।
তবে পেশাদারিত্বকে ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েও রাজনৈতিক কমিটমেন্ট ঠিক রাখা সম্ভব বলে জানান এক তরুণ ব্যারিস্টার। নাম প্রকাশ না করে তিনি দৃষ্টান্ত টানেন আওয়ামী আমলে ‘একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার’ প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, বিএনপি নেতা ও বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে কিন্তু একজন আওয়ামী আইনজীবীকেও দাঁড়াতে দেখা যায় নি। একই সঙ্গে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে আওয়ামী ঘরানার কোনো আইনজীবী দাঁড়ান নি। তখন কোথায় ছিলো পেশাদারিত্ব? মাত্র সেদিনের কথা। হাসিনা উৎখাত হওয়ার কয়েকদিন আগের (২৭ জুলাই) ঘটনা। ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’র কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলায় সাংবাদিক ড. কনক সারোয়ার এবং সিনিয়র অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদকে শাস্তি দেন হাইকোর্ট। মহসিন রশিদের পেশাগত অধিকার কেড়ে নেয়া হয়। ফ্যাসিজমের সমালোচনা করায় যেখানে আইনজীবীকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়েছে সেখানে খুনি ফ্যাসিস্টের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে কোনো পেশাদারিত্ব থাকতে পারে না।
পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে খুনিদের পক্ষে বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের আইনি সহায়তা প্রদান প্রসঙ্গে কথা বলেন আলোচিত অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদও। তিনি বলেন, ক্লায়েন্ট ভালো লোক নাকি মন্দ লোক এটি নিরূপণ করা আইনজীবীর কাজ নয়। আইনজীবীর পেশাদারিত্ব হচ্ছে ক্লায়েন্টকে আইনের মধ্যে থেকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দেয়া। যদি আমার কাছে কোনো ক্লায়েন্ট আসে তাহলে আমি দেখবো, কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট আছে কি না। ইতিপূর্বে আমি তার বিপক্ষে আইনি লড়াই করেছি কি না। যদি কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট থাকে তাহলে আমি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আইনজীবী হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবো। আইনজীবী হিসেবে ক্লায়েন্টের কাছে প্রতিশ্রুতি এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিশ্রুতি দু’টি ভিন্ন জিনিস। আইনজীবী হিসেবে আমি অরাজনৈতিক এবং পেশাদার। তবে হ্যাঁ, ফ্যাসিবাদ-খুনির বিরুদ্ধে কথা বলে, আন্দোলন করে এখন আবার খুনির পক্ষে আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে যাওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়।
তবে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার একাধিক দৃষ্টান্তও রয়েছে বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হুমায়ুন কবির বুলবুল। তিনি বলেন, বেশি দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। আজকের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পিতা সিরাজুল হকের দৃষ্টান্তই যথেষ্ট। সিরাজুল হক ছিলেন প্রথিতযশা আইনজীবী। একাধারে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি যখন এরশাদের আইনজীবী নিযুক্ত হলেন, তখন আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। আওয়ামী লীগে থেকে যদি এরশাদের পক্ষে আইনি সহায়তা দিতেন তাহলে প্রশ্ন উঠতো। মানুষ বিভ্রান্ত হতেন। তিনি সেটি হতে দেননি। পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন। একইভাবে আমার সিনিয়র খন্দকার মাহবুবউদ্দিন আহমাদও পেশাদারিত্ব বজায় রাখতেন। তিনি যদি জানতেন লোকটি সত্যিই অপরাধী-তার মামলা হাতে নিতেন না। যতো টাকাই দেয়া হোক না কেন, তিনি ইয়াবা ব্যবসায়ী, মাদক ব্যবসায়ীর পক্ষে দাঁড়াতেন না।
অ্যাডভোকেট বুলবুল বলেন, পেশাদারিত্ব থাকতে হবে। আবার রাজনৈতিক কমিটমেন্টও থাকতে হবে। আপনি একাধারে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছেন। এখন আবার স্বৈরাচার, খুনি এবং তার দোসরের পক্ষে কোর্টে দাঁড়াচ্ছেন-নৈতিকতার প্রশ্ন উঠবেই। ক’দিন আগে স্বৈরাচারবিরোধী ছিলেন-এখন স্বৈরাচারের পক্ষে। এমনটি হলে দলও আপনাকে নিয়ে অস্বস্তিতে পড়বে। দল থেকেও আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা উঠবে। এ কারণ পেশাদারিত্বই সবকিছু নয়। রাজনৈতিক কমিটমেন্ট অবশ্যই রক্ষা করা প্রয়োজন।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের এক আইনজীবী নাম প্রকাশ না করে বলেন, বিএনপি কিংবা এর অঙ্গ সংগঠনে কোনো পদে থেকে খুনি হাসিনা কিংবা তার কোনো দোসরের পক্ষে আইনি সহায়তা দেবেনÑ এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ খুব বেশিদিন আগের ঘটনা নয়। ২০১৯ সালের ৯ অক্টোবর অ্যাডভোকেট মোর্শেদা খাতুন শিল্পীকে বহিষ্কার করে বিএনপি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। শিল্পীর অপরাধ-বুয়েটের আলোচিত আবরার হত্যা মামলায় খুনি ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে আইনি সহায়তা দিচ্ছিলেন। এখন যদি কেউ হাসিনার দোসরদের পক্ষে দাঁড়ানোর সাহস দেখায় হয়তো আরো বড় পরিণতি বরণ করতে হবে।
‘সাধারণ আইনজীবী’ ব্যানারে সুপ্রিমকোর্টকে দুর্নীতিমুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন করছেন এমন আরেক আইনজীবী নাম প্রকাশ না করে বলেন, বিএনপিতে কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী রয়েছেন, তাদের রাজনৈতিক আদর্শ বলতে কিছু নেই। আওয়ামী লীগ আমলেও তারা বার বার সুপ্রিমকোর্ট বারে নির্বাচিত হয়েছেন। কারণ, আওয়ামী আইনজীবীদের কাছেও তারা জনপ্রিয় ছিলেন। তাদের নানা সুযোগ-সুবিধা দিতেন। এ হিসেবে শুধু হাসিনার দোসর কেন, পয়সা পেলে খোদ হাসিনার পক্ষে আইনি সহায়তা দিতেও তারা কুণ্ঠা বোধ করবেন না। ট্রাইব্যুনালে তারা এখন হয়তো পেশাদারিত্বের দোহাই দিয়ে টাকার লোভে হাসিনার দোসদের পক্ষে লড়ছেন। পরে হয়তো হাসিনার পক্ষেও দাঁড়াবেন। তাছাড়া, আওয়ামী লীগের আছে দুর্নীতিলব্ধ লুণ্ঠিত টাকা। টাকার লোভ সামলাতে না পেরে সাচ্চা জাতীয়তাবাদী বিএনপি নেতাও যদি হাসিনার পক্ষে ওকালতি করেন, তাতেও বিস্ময়ের কিছু থাকবে না। তাই খুনিদের পক্ষে বিএনপি-জামায়াতের কোনো আইনজীবী দাঁড়াতে পারবেন নাÑ এমন ঘোষণা দল দু’টির পক্ষ থেকে আসা উচিৎ বলে অভিমত দেন এ আইনজীবী।
সুপ্রিমকোর্ট বারের অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক মাসুদ কামালের একটি আর্টিকেল উদ্ধৃত করেন। ‘আইনজীবীর দায় ও নৈতিকতা’ শিরোনামে আর্টিকেলটি প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর। তখন আওয়ামী জমানা। স্কাইপি কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে আওয়ামী ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’। মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করেছিলেন জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী। তার পক্ষে আইনি সহায়তা দেন তৎকালীন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। জামায়াত নেতার পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেনের আইনি সহায়তা প্রদান প্রসঙ্গেই ছিলো মাসুদ কামাল প্রবন্ধের অবতারণা। এতে একটি হিন্দি চলচ্চিত্রের কাহিনী তুলে ধরে প্রশ্ন রাখেন, সমাজের প্রতি কি আইনজীবীদের কোনই দায়বদ্ধতা থাকতে নেই? কোন অপরাধী, এমনকি একজন খুনি, যখন আইনজীবীর শরণাপন্ন হয়, তখন নিয়মই হচ্ছে তার সকল অপরাধের কথা উকিলকে খুলে বলা। অপরাধের বিস্তারিত, খুটিনাটি জানার পরই কেবল একজন আইনজীবী তার মামলাটি গ্রহণ করেন। আইনজীবীর দায়িত্বটা কি? আদালতের কাছে মিথ্যা বলে, মিথ্যার ভিত্তিতে যুক্তি সাজিয়ে, অপরাধীকে নির্দোষ প্রমাণ করা? নাকি তা মক্কেল যাতে প্রকৃত আইন নির্ধারিত ব্যবস্থাটুকু পায়, কোন অনিয়মের শিকার না হয়, সেটি নিশ্চিত করা?
আইনজীবীদের উদ্দেশে মাসুদ কামাল তখন প্রশ্ন তোলেন, উকিল হয়েছে বলেই কি সমাজের প্রতি তার কোনই দায়িত্ব নেই? তার মেয়েকে রেপ করে কেউ এসে যদি তাকে অর্থ দেয়, তবুও কি সে ওই ধর্ষকের পক্ষে আদালতে আইনি লড়াই করবেন? নিছক অর্থের জন্য নিজের মেয়ের বিপক্ষে যদি লড়তে না পারেন, তাহলে অন্যের মেয়ের ক্ষেত্রে পারেন কীভাবে?ইনকিলাব
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com