ডেস্ক রির্পোট:- রাষ্ট্র সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে তাদের গঠিত এই ছয় কমিশনের সঙ্গে মিল রেখে ছয়টি কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। গঠিত কমিটিগুলো হলো– রাষ্ট্র সংস্কার, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, প্রশাসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, নির্বাচন কমিশন এবং ব্যাংকিং ও বাণিজ্য সংস্কার।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, সালাহউদ্দিন আহমেদ এসব কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে বিশেষজ্ঞ আমলাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিএনপি নেতারা মনে করেন, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনিক সংস্কারকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন তারা। নেতারা মনে করেন, রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখার মধ্যেই সবকিছু আছে। সেই আলোকে অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রস্তাব দেওয়ার ব্যাপারে সবাই মতামত দেন।
এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে ছয়টি কমিশন তথা নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠনের কথা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠক সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের ছয়টি কমিশনের গঠন কার্যক্রম আলোচনায় তোলেন দু’একজন নেতা। তারা বলেন, ছয়টি কমিশন ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরুর কথা ছিল। ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা কাজ করে রিপোর্ট দেবে। সরকার এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসবে। কিন্তু এখন আবার সুর পাল্টে বলছে, আগে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে তারা আলোচনায় বসবে।
বৈঠকে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারসহ অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে যথেষ্ট অস্পষ্টতা রয়েছে। কয়েকজন সদস্য বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদ দুই মাস পার হতে চলল। এখনও নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। তাছাড়া তারা আগামী দিনের রাষ্ট্র বিনির্মাণে কী চিন্তা করছে, কখন নির্বাচন দেবে, রাষ্ট্র সংস্কার কীভাবে করবে, আগে রাষ্ট্রের সব সংস্কার নাকি প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন হবে, রাজনৈতিক দলগুলোকে যথেষ্ট সুযোগ দিতে চায় কিনা–এসব নিয়ে জনগণের মনে প্রশ্ন রয়ে গেছে। এসব প্রশ্নের উত্তর সরকারকে জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে।
জানা গেছে, বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমের ভালো-মন্দ দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কয়েকজন নেতা বলেন, প্রশাসনে কয়েক ধাপে রদবদল করা হলেও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগীরা এখনও রয়ে গেছে। তাছাড়া রদবদলে ঘুরেফিরে তাদেরই আনা হচ্ছে। এতে করে উল্টো পুনর্বাসন হচ্ছে আওয়ামী লীগের আশীর্বাদপুষ্টদের। এই প্রশাসন দিয়ে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
আবার কোনো কোনো সদস্য বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে নিজেরাই বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলছে। একবার বলছে, অন্তবর্তী সরকারের মেয়াদ হবে দেড় বছর, একবার বলছে দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন হবে। আবার বলছে, দেড় বছরের মধ্যে সব সংস্কার কাজ শেষ করে তারপর দেওয়া হবে নির্বাচন। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকাল নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সরকারের একটা বক্তব্যের সঙ্গে আরেকটা বক্তব্য মিলছে না।
বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন। এ সময় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি যে কোনো প্রয়োজনে মানুষের পাশে থাকে: ডা. জাহিদ অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, বিএনপি যে কোনো প্রয়োজনে মানুষের পাশে থাকে। বন্যাদুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিএনপি। রংপুর-গাইবান্ধাতেও ত্রাণ দেওয়া হবে। গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির ত্রাণ সংগ্রহ কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে কৃষিকে। এরপরই শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বন্যার্তদের জন্য ২০ কোটি টাকার মতো নগদ সহায়তা পাওয়া গেছে। সঙ্গে খাদ্যদ্রব্যও পাঠিয়েছেন অনেকে। এছাড়া সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও ফেনীতে ১৩৭ জন শহীদের পরিবারকে সহায়তা করবে বিএনপি।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com