ড. তৌফিক আহমেদ:- নামসর্বস্ব কম্পানিকে কোনোভাবেই এক হাজার কোটি টাকা লোন দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকাররা চোখ বন্ধ বা কাগজ না দেখেই ঋণ প্রদান করেছেন। বিভিন্ন গ্রাহকের সঙ্গে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে করতে ব্যাংকাররা অনেক অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। তাঁরা গ্রাহকের ঋণ আবেদন দেখলেই বুঝতে পারেন এই ঋণ কেন নেওয়া হচ্ছে? ঋণ নেওয়ার পর গ্রহীতা ব্যাংকের টাকা ফেরত দিতে পারবে কি না?
ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ সহজ বিষয় নয়।
গ্রাহকরা অনেক সময় ঋণের প্রয়োজনীয়তা যথাযথভাবে নিরূপণ না করেই ঋণের আবেদন করেন। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ও ঋণ পরিমাপের বিভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে ঋণের পরিমাণ নির্ধারণে কিছু তথ্য লাগে। এসব তথ্যের মধ্যে গ্রাহকের বিনিয়োগ পরিকল্পনা, বর্তমান মালপত্রের পরিমাণ, দেনাদার ও পাওনাদারের বিবরণসহ দেনা-পাওনার পরিমাণ, ব্যবসায় মৌসুমি প্রভাব আছে কি না ইত্যাদি বিবেচনায় নেওয়া হয়।
ঋণ গ্রহণে আগ্রহী গ্রাহক যথাযথ হলে এরপর তাঁর ঋণের জামানত যাচাই-বাচাই করা হয়।
অনেক সময় সম্পদের ওভার ভ্যালুয়েশন বা অতি মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পাশাপাশি ভুয়া আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করে ব্যবসায়ের মুনাফার উল্লমম্ফন দেখানো হয়। অতিরিক্ত ক্যাশ ফ্লো দেখানো হয়; কিন্তু ব্যাংকাররা তা যাচাই-বাচাই করে প্রকৃত গ্রাহককে ঋণ প্রদান করেন। কিন্তু তার পরও কিছু গ্রাহক ভুয়া তথ্য দিয়ে ঋণ নিচ্ছেন।
এ ক্ষেত্রে ব্যাংকাররা সরাসরি জড়িত। অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যাংক কমিশনের প্রতিবেদনে এসব অনিয়মের তথ্য উঠে আসবে। বেনামে যাঁরা ঋণ নিয়েছেন, অতিদ্রুত তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
লেখক : অর্থনীতিবিদ ও সাবেক মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম)