খাগড়াছড়ি:- স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে খাগড়াছড়ির লাখো মানুষ। আশ্রয় নেওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই। চারিদিকে পানি আর পানি। মানুষ দিশেহারা। বিনাভোটের সরকার দলীয় জনপ্রতিনিধিরা সব আত্মগোপনে। মানুষের এমন চরম দুর্ভোগের সময় সর্বাত্মক শক্তি নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সেনবাহিনী ও বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার ভোর রাতে পুরো খাগড়াছড়ি ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে। পানিবন্দি হয়ে পড়ে লক্ষাধিক মানুষ। বিভিন্ন স্থানে আটকাপড়া মানুষকে উদ্ধারে নেমে পড়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে।
অপর দিকে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়ার পক্ষ থেকে পুরো জেলায় দুর্গতদের রান্না করা খাবার নিয়ে হাজির হয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় খাগড়াছড়ির কয়েকটি উপজেলার হাজারও মানুষ পানিবন্দী। চেঙ্গী নদীর পানিতে তলিয়ে গেছে জেলা সদরের অধিকাংশ এলাকা। বন্যা দুর্গত এসব এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তর গঞ্জপাড়ায় তীব্র স্রোতের মাঝে গিয়ে বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ সহায়তা প্রদান করে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন। শুকনো খাবারের পাশাপাশি জেলা সদরের গোলাবড়ী ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নেয়াদের মাঝেও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়।
খাগড়াছড়ি রিজিয়ন থেকে জানানো হয়, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন বন্যাদুর্গত ৩ শতাধিক পাহাড়ি-বাঙালি পরিবারের ৮ শতাধিক মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবার বিতরণ করে। এ কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানানো হয়।
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান, মেজর সাদাত রহমান, মেজর মো. রেজাউল করিম ইবনে রশীদ, ক্যাপ্টেন রাফিদ, ক্যাপ্টেন গালিবসহ রিজিয়নের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সকাল থেকে খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল আবুল হাসনাত জুয়েলের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সদস্যরা জেলার বিভিন্ন স্থানে পানিতে আটকাপড়া বিপুল সংখ্যক মানুষকে উদ্ধার করে।
অপরদিকে ২০ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়ার পক্ষ থেকে বন্যাদুর্গতদের মাঝে রান্না করা খাবার ও স্যালাইনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার জানান, এ পর্যন্ত অন্তত ২০ হাজার দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। মাঠে কাজ করছে প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মী। যতদিন মানুষ নিজ বাড়ি-ঘরে ফিরতে পারবে না, ততদিন সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, জেলায় ৯৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া পানিবন্দি এলাকার মানুষদের জন্য শুকনো খাবার, মোমবাতি, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com