ডেস্ক রির্পোট:- স্বাধীনতার পর থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় গ্রেড অনুযায়ী কতজন সরকারি চাকরি পেয়েছেন, সেই তালিকা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের তথ্যভিত্তিক পরিসংখ্যান তৈরি, অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে বীর মুক্তিযোদ্ধার নথি যাচাইসহ একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীকের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে গতকাল সকালে তিনি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নবনিযুক্ত উপদেষ্টা দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই গতকাল বিকেল ৩টায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বিশেষ সভায় বসেন। দেড় ঘণ্টার সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরীসহ ৩০ কর্মকর্তা অংশ নেন।
সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে যে আন্দোলন হয়েছে, তাতে এ মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তিযোদ্ধারা ইমেজ সংকটে পড়েছেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা কোটার আওতায় কতভাগ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চাকরি পেয়েছেন, এর তালিকা রয়েছে কিনা মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চান। সচিব জানান, এমন তালিকা নেই। তবে জনপ্রশাসনসহ অন্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের আলোকে তালিকা প্রণয়ন করা সম্ভব। এরই ধারাবাহিকতায় ফারুক-ই-আজম বলেন, প্রচলিত আছে, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন। গবেষণার আলোকে এটি তথ্যভিত্তিক হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, অনেকে বলেন, ২ লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এটিও এভাবে বলা ঠিক নয়। কারণ, নারীর সম্ভ্রম কখনও বিনিময় হতে পারে না। একজন নারীর সম্ভ্রমও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, জনমনে ধারণা রয়েছে, ওই তালিকায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। এ নিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন মহলে আলোচনা হয়। অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা আবেদন করেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় গেজেটভুক্ত হতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা জানতে চান তিনি। তখন সচিব বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রণয়ন, যাচাই-বাছাই, অমুক্তিযোদ্ধাদের বাতিল করাসহ সার্বিক বিষয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। তারা যে সিদ্ধান্ত নেয়, এর আলোকে মন্ত্রণালয় গেজেট প্রকাশ করে। জামুকার আট সদস্যের বোর্ড রয়েছে। উপদেষ্টা বোর্ডে কারা থাকেন, কাজের প্রক্রিয়া কী ইত্যাদি জানতে চান। তখন উপদেষ্টা জামুকার বোর্ড পুনর্গঠনসহ একগুচ্ছ নির্দেশনা দেন। সভায় প্রকল্পগুলো নিয়েও আলোচনা হয়। উপদেষ্টা বলেন, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প থাকলে তা বাদ দিতে হবে। এ বিষয়ে শিগগিরই ফের সভা করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com