বান্দরবান:- বান্দরবানে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) অবকাঠামো নির্মিত হলেও শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা যায়নি। দুই বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আটটি ভবন। কবে থেকে ম্যাটসের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
জেলা শহর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কের রেইছা এলাকায় প্রায় তিন একর জায়গাজুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে ম্যাটসের ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসে নির্মাণ করা আটটি ভবনের মধ্যে দুটি একতলা ও বাকিগুলো বহুতল। এসব ভবনের মধ্যে রয়েছে একাডেমিক ভবন, ছাত্রাবাস, ছাত্রীনিবাস, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, নির্জন ক্যাম্পাসের সব কটি ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ক্যাম্পাসে লাঠিতে ভর দিয়ে একজন বৃদ্ধকে হেঁটে যেতে দেখা যায়, এর বাইরে কোনো মানুষ চোখে পড়েনি। জনমানবশূন্য ক্যাম্পাসটিতে অনেকটা ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কোনো ভবনেই আসবাব দেখা যায়নি। বিদ্যুতের বাতি বসানোর জায়গায় বাসা বেঁধেছে পাখি।
ক্যাম্পাসের ভেতরে ভেঙে পড়া একটি সাইনবোর্ডে লেখা বিবরণ অনুযায়ী, এসব ভবন নির্মাণ করেছে এমএ ইঞ্জিনিয়ারিং ও এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালে ম্যাটসের অবকাঠামো নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৩৩০ টাকা।
ঠিকাদারেরা জানান, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে ১৮ মাসের চুক্তি হয় তাঁদের। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আটটি ভবনের বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন, পানির ব্যবস্থা, সীমানা দেয়াল নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় সব কাজ করা হয়েছে। নির্মাণকাজ প্রায় দুই বছর আগে শেষ হলেও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে অবকাঠামো বুঝে নেওয়া হচ্ছে না।
ভবনগুলোতে আসবাব না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মোরশেদুল ইসলাম বলেন, একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পাওয়া গেলে আলাদা প্রকল্পের মাধ্যমে আসবাব সরবরাহ করা হবে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (উন্নয়ন) ওয়াসেক-বিন-শহীদ বলেন, বান্দরবান ম্যাটসের নির্মিত অবকাঠামো বুঝে নেওয়ার জন্য সম্প্রতি স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বুঝে নেওয়ার পর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষককে এটি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
এরপর একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর ব্যাপারে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়া গেলে শিক্ষার্থী ভর্তি, শিক্ষকসহ জনবল নিয়োগের বিষয়টি আসবে। এসব প্রক্রিয়া শেষ হতে কত দিন লাগবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি ওয়াসেক-বিন-শহীদ।প্রথম আলো
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com