বান্দরবান:- বান্দরবানে জেলা জুড়ে টানা তিনদিন ধরে কখনো ভারী আবার কখনো হালকা বর্ষণ হচ্ছে। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ঘরবাড়ি ও পানিবন্দী রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। স্থানভেদে কোথাও পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়েছে।
বান্দরবানের আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি এই তিন উপজেলার বেশ কয়েকটি নিম্নাঞ্চল এলাকাগুলো পাহাড় ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। লামা বাজার, নয়া পাড়া, সাবেক বিল ছড়ি, আলীকদমে কাকরা ঝিড়ি, চৈক্ষ্যং এলাকা,রাফারি বাজার ও নাইক্ষ্যংছড়িতে ঘুমধুম ইউনিয়নের পশ্চিমকূল, ক্যাম্প পাড়া, ঘোনার পাড়া, হিন্দু পাড়া, বাজার পাড়া, কোনার পাড়া, মধ্যম পাড়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে মানুষ পানিবন্দি হওয়াতে জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি সংকটসহ প্রয়োজনীয় খাবার ব্যবস্থা। এছাড়াও সকালে বান্দরবান-থানচি সড়কের ৪৮ কিলোমিটার এলাকায় ভারী বর্ষণের পাহাড় ধ্বসে পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পাহাড়ি ঢলের পানি বেড়ে যাওয়াই লামা- আলীকদম সড়ক ও থানচি বাগান পাড়াতে ব্রিজ ডুবে যোগাযোগের পথ বিচ্ছিন হয়েছে।
আবাহাওয়া অধিদপ্তর তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১০৪ মিলিমিটার। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সন্ধ্যা থেকে ৭২ ঘণ্টায় ৪৪-৮৮ মিলিমিটার ও ২৪ ঘণ্টার অতিভারী ৮৯ মিলিমিটার বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও ভারী বর্ষণজনিত কারণে পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসে সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসন তথ্যমতে, বান্দরবানে ৭টি উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ২২০টি। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে প্রশাসনের লোকজনের পাশাপাশি সামাজিক বিভিন্ন সংগঠন সহায়তা করা হচ্ছে। এছাড়াও পাহাড় ধসে এলাকাগুলোকে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা।
টানা তিনদিন ভারী বর্ষণের বান্দরবানের সাঙ্গু নদী, মাতামহুরীসহ ছোট-বড় খালে পানি বিপদসীমা পাড় গেছে। কোথাও কোথাও নদীর পানিতে ঘর-বাড়ি ডুবে গেছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে লামা-আলীকদম ও বান্দরবান-থানচি সড়ক যোগাযোগ। তিন উপজেলার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। থানচিতেও সাঙ্গু নদীতে পানি বাড়াতে নদীর পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ের উপজেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সদস্যা কাজ করে যাচ্ছে।
বান্দরবানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সনের সহকারী পরিচালক পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দি বলেন, বান্দরবান-থানচি সড়কের নীলগিরির পরে পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের থানচি ও বান্দরবান থেকে টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে সড়কে পড়া মাটি অপসারণের কাজ শুরু করেছে। দ্রুত মাটি অপসারণ করতে সেনাবাহিনীর বুলডোজার ও এক্সক্যাভেটর আসছে। বিকাল নাগাদ সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসক শাহ মোহাজিদ উদ্দিন বলেন, গত তিনদিন ধরে বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। ঝুকিপূর্ণ স্থানে যারা বসবাস করছে তাদেরকে সরিয়ে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে এবং সকলকে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া জন্য বলা হচ্ছে। বন্যার কবলিত এলাকাগুলোতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার ব্যবস্থা পাশাপাশি সার্বক্ষণিক পরিদর্শন করা হচ্ছে।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com