ডেস্ক রির্পোট:- চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরুর পর থেকে সবচেয়ে বড় জমায়েত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। নগরের প্রাণকেন্দ্র নিউমার্কেট মোড় দখল করে অন্তত ১০ হাজার লোকের এই জমায়েতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণকালে শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের বাসভবন, ট্রাফিক পুলিশ বক্স, যানবাহনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা–ভাঙচুর এবং এক সংসদ সদস্যের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
আজ শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এই হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এর আগে বেলা ৩টার দিকে নগরের নিউমার্কেট মোড়ে ধীরে ধীরে জমায়েত হতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। একপর্যায়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয় নিউমার্কেট মোড়সহ এর আশপাশ।
এ সময় আন্দোলনকারীদের স্লোগানে এলাকা উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। আন্দোলনকারীরা তাঁদের সহপাঠী হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন।
তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবকেরাও। এ সময় রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার লোকজনকে আন্দোলনে আসা শিক্ষার্থীদের তালি দিয়ে সংহতি জানাতে দেখা গেছে।
পরে ৫টা ১০ মিনিটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পৃথক দুটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
নিউমার্কেট থেকে টাইগার হয়ে যে বিক্ষোভ মিছিল চলে গেছে, ওই মিছিল থেকে টাইগারপাস মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ বক্স, ওয়াসা মোড়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দেওয়া, সড়কে রাখা বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর চালানো হয়।
এ ছাড়া বিক্ষোভ মিছিলটি নগরের ষোলোশহর ২ নম্বর গেট মোড়ে পৌঁছালে সেখানে মূল সড়ক থেকে প্রায় আধ কিমি দূরে থাকা চশমা হিল এলাকায় শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে ভাঙচুর চালানো হয়। দুষ্কৃতকারীরা সেই বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি ভেতরে থাকা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর চালায়।
পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বহদ্দারহাট মোড়ের দিকে চলে যায়। সেখানে মোড় থেকে ৩০০ গজ দূরে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবন লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর বাসায় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এরপর মেয়রের বাসভবনেও ভাঙচুর করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
এর আগে নগরের টাইগারপাস পুলিশ বক্সসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করা হয় বলে জানান তিনি।
দুপুরে কর্মসূচি শুরু থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান নমনীয় ছিল। নিউমার্কেটে কর্মসূচি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি দেখা যায়নি।
আন্দোলনে আসা সাইফ উদ্দিন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে নিরপরাধ সহপাঠীদের হত্যা করেছে। গণমাধ্যমে এসেছে, তাঁরা প্রাণঘাতী বুলেটেই মারা গেছেন। এত প্রাণহানির পর আমাদের দাবি মেনে নিলে কী হবে? আমরা আমাদের সহপাঠীদের ফেরত চাই।’
এদিকে ছাত্র আন্দোলনকারীদের এই কর্মসূচির প্রতিবাদে সকালে নগরের বহদ্দারহাট মোড়, ওয়াসা মোড়, ষোলোশহর, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ সমাবেশ করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা সেখানে অবস্থানও নেন। তবে কোটা আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করলে তাঁদের মাঠে দেখা যায়নি।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com