ডেস্ক রেোট:- ‘গুলি আর কারা করবে; আমরা তো নিরস্ত্র ছিলাম। শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিলাম। কিন্তু পেছন থেকে গুলি করা হয়েছে। পুলিশ ওইদিন নির্বিচারে গুলি করে।’ -এ কথা বলছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। ১৯শে জুলাই, শুক্রবার। এ দিন বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, ড. এনামুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, নগর বিএনপি’র সভাপতি নাসিম হোসাইনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের নেতৃত্বে সিলেটে মিছিল করা হয়। এর আগে নগরের কোর্ট পয়েন্টের কালেক্টরেট মসজিদে নামাজ আদায় করেন নেতারা। গতকাল বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা মিফতাহ সিদ্দিকী জানিয়েছেন; ‘নামাজ শেষ হওয়ার পরপরই আমরা মসজিদ থেকে বের হই। এ সময় বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি ছিল কোর্ট পয়েন্টে। সিনিয়র নেতাদের সামনে রেখে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জিন্দাবাজার অভিমুখে রওয়ানা দেয়।
মিছিলটি ছিল শান্তিপূর্ণ। হঠাৎ করেই পেছন থেকে শোনা যায় গুলির শব্দ। সঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ। তবুও আমরা মিছিল ছাড়িনি। সবুজ বিপণী পাড়ি দিয়ে গার্লস স্কুলের সামনে চলে আসার পর মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।’
মিফতাহ সিদ্দিকী জানান- ‘পুলিশের গুলির পর স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী সড়কে থেকে যায়। তারা সড়কেই অবস্থান নিয়ে থাকেন। তবে; গুলিতে আহত হয়েছেন অনেকেই। যারা গুরুতর আহত হয়েছেন তাদের তাৎক্ষণিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সিনিয়র নেতারা এ সময় দলীয় কর্মীদের রক্ষা করতে ওই এলাকায় থেকেই কাজ করেন। সব আহতদের হাসপাতালে পাঠিয়ে নেতারা চলে যান।’ তবে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে; ওই দিন মিছিলের শেষ দিক থেকে উপস্থিত থাকা পুলিশ দলের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশের ওপর নেতাকর্মীরা হামলায় উদ্যত হলে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে ফাঁকাগুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এদিকে- ওই দিন কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন ফটো সাংবাদিক এটিএম তুরাব। সন্ধ্যায় নগরের সুবহানীঘাটের ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন শতাধিক নেতাকর্মী। এ ঘটনার পর নগরের বন্দরবাজার এলাকায় বিক্ষোভ ছড়ায় এবং কারফিউ জারির পূর্ব পর্যন্ত বন্দরবাজারে অবস্থান ছিল বিক্ষোভকারীদের। সেখানে জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীদের অবস্থান ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী জানিয়েছেন; ‘গুলি বর্ষণের ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি হবে- এমনটি ধারণায়ও ছিল না।
পুলিশের কয়েকটি টিম ও সিআরটিএ’র সদস্যরা ওইদিন ঘটনাস্থলে ছিলেন। এ ঘটনার পর থেকে সিলেট বিএনপি’র অন্তত ২শ’ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেও বাজার থেকে ফেরার পথে নগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে অভিযান ও তল্লাশি চালানো হয়।’
বিএনপি’র নেতাকর্মীরা ফের বাড়িছাড়া হয়েছেন বলে দাবি করে মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘এখন দলীয়ভাবে আমাদের কোনো কর্মসূচি নেই। নেতাকর্মীরাও কর্মসূচি পালনে মাঠে নেই। এরপরও ধরপাকড় চালিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। বাড়িঘরে থাকা বিএনপি’র নেতাকর্মীদের পরিবারকে হেনস্তা করা হচ্ছে। সিলেট ছাড়াও সুনামগঞ্জের সিনিয়র নেতাদের নামে মামলা করা হয়েছে। ধরপাকড় চালানো হচ্ছে। হবিগঞ্জের পরিস্থিতিও একই।’ এরপরও দলীয়ভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করা হলে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা ঘরে বসে থাকবে না বলে জানান মিফতাহ সিদ্দিকী। দেশের মানুষের প্রয়োজনে বিএনপি’র কর্মীরা রাজপথে সোচ্ছার হবেন বলে জানান তিনি।মানবজমিন
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com