ডেস্ক রির্পোট:- বাইশ বছর বয়সী শাহজাহান। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ছিলেন। বাসায় ফেরার পথে শুক্রবার বিকালে মহাখালীতে গুলিবিদ্ধ হন। ৫ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তার মৃত্যু হয়। দু’দিন ধরে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পড়েছিল তার লাশ। শাহজাহানের মৃত্যুর পর থেকে মর্গের সামনে লাশ নেয়ার অপেক্ষায় ছিলেন তার স্বজনেরা। একমাত্র ছেলে হারানোর শোকে থামছিল না মায়ের কান্না। মঙ্গলবার সকাল থেকে স্বজনেরা থানায় থানায় ঘুরেছেন। মরদেহ বুঝে পেলে ফিরে যাবেন গ্রামের বাড়িতে। গতকাল বিকাল ৪টা পর্যন্তও হয়নি শাহজাহানের ময়নাতদন্ত।
তখনো দেখা যায় স্বজনদের অধীর অপেক্ষা। আহাজারি করছিলেন শাহজাহানের মা।
ঢামেকের মর্গের সামনে মাটিতে বসেছিলেন তিনি। সন্তানের মুখ একপলক দেখার অপেক্ষায় ছটফট করছিলেন। গত দুইদিন ধরে মর্গের সামনে রাত-দিন এক কাপড়ে অবস্থান করছেন তিনি। কাঁদতে কাঁদতে কখনো কখনো মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন। কখনো আবার বুক চাপরাচ্ছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাহজাহানের মা বলেন, আমার সব শেষ। কী হবে আমার? কোথায় পাবো এর বিচার। আমার পাখিটা নিয়ে গেল।
নিহত শাহজাহানের বোন ফাতেমা বলেন, ভাই একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো। শুক্রবার অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে মহাখালীতে পুলিশের গুলিতে আহত হয়। পরে তার পরিচিতরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভাই মারা যায়। ওইদিন সকাল থেকে থানায় থানায় ঘুরেছি। এক থানা থেকে আরেক থানায় পাঠায়। এই পর্যন্ত ৩ থানায় গিয়ে ফিরে এসেছি। আমার ভাই মহাখালীতে থাকতো। ভাইয়ের পেটে ও হাতে গুলি লেগেছিল। ঢামেকের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল। আজ ভাইয়ের লাশের ময়নাতদন্ত হবে। ময়নাতদন্ত শেষে তাকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাবো।
গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছেন অনেক স্বজন। সেখানে অপেক্ষারতরা আহাজারি করছিলেন। সহিংসতার ঘটনায় শনিবার ময়মনসিংহ থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢামেকে আসেন জামান মিয়া (২২)। তিনি সেখানে একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। ঢামেকের জরুরি বিভাগের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার মারা যান। নিহত জামানের চাচাতো বোন মার্জিয়া বলেন, আমার ভাই ময়মনসিংহের নান্দাইলে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। শনিবার বিকালে গার্মেন্টস থেকে বের হওয়ার পর তার গুলি লাগে। স্থানীয় একটি হাসপাতালে দেখানোর পর তাকে রাতে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। এখানে ভর্তির ৫ দিন পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভাইয়ের মৃত্যু হয়। অল্প বয়সে ভাইটি মারা গেল। তার কী দোষ ছিল। সে তো অফিস থেকে বাসায় ফিরছিল।মানবজমিন
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com