বান্দরবান:- পাহাড়ি জেলা বান্দরবানে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। গেল এক সপ্তাহে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯ জন রোগী। তার মধ্যে পুরুষসহ শিশু ৫ জন ও মহিলা রয়েছে ৪ জন। এদিকে সকালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে আব্দুল্লাহ নামে আট বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত শিশু পৌর শহরে আর্মিপাড়া এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশীর ভাগ ডেঙ্গুর প্রভাব দেখা দিয়েছে জেলা সদর পৌর এলাকায়। এছাড়া আর্মি পাড়া, বনরুপা, হাফেজঘোনাসহ আরো বেশ কয়েকটি এলাকায় ডেঙ্গু রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। পাহাড়ে বর্ষা শুরু হলে প্রতিনিয়ত ড্রেনে ময়লা আবর্জনা পানি জমাট হওয়ায় সেখানে থেকে দিন দিন বাড়ছে মশার উপদ্রব। তাছাড়া এডিস মশা বেড়ে যাওয়ার ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। তবে এডিস মশার প্রজননের মূল মৌসুম শুরু হচ্ছে চলতি জুলাই মাসে যা চলবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে ডেঙ্গুর রোগে কোন আতঙ্ক না হওয়ার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে জেলা জুড়ে ডেঙ্গু রোগ নিয়ে ভর্তি হয়েছে ৭৭ জন। গত কয়েকমাসে জেলা সদর সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত নিয়ে ভর্তি হয়েছে ৬৫ জন। তারমধ্যে পুরুষ ৪১ ও নারী রয়েছে ২৪ জন। বর্তমানে সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত নিয়ে ভর্তি রয়েছে ৮ জন। তবে আজ সকালে মৃত্যু হয়েছে আট বছরের একজন শিশু।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিনিয়ত জেলা সদর সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে। শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষজন ডেঙ্গুর পরীক্ষা করছেন। ডেঙ্গুর রোগের লক্ষণ দেখা দিলে পুরুষ-নারী ওয়ার্ডের মশারি টাঙ্গিয়ে ডেঙ্গুর রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। ডেঙ্গু রোগের যাতে আক্তান্ত না হয় তার জন্য বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখার পাশাপাশি প্রতিদিন মশারি ব্যবহার করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
রোগীরা জানিয়েছেন, পাতলা পায়খানা, শরীর কাঁপুনিসহ আরো নানা লক্ষণ দেখা দেয় ডেঙ্গু রোগে। কোন কিছু অবহেলা না করে ডেঙ্গুর রোগের লক্ষণ দেখানোর সাথে হাসপাতালে এসে পরীক্ষা করান রোগীরা। এতে সুস্থতা হলে ছাড় দিয়ে দেন ডাক্তারা। তবে অভিযোগ আছে- শিশু ডাক্তার নিয়মিত না আসার কারণে ডেঙ্গুর রোগে আক্তান্ত নিয়ে মৃত্যু হয়েছে আট বছরের শিশু। ডেঙ্গু আশঙ্কাজনক দেখা দেওয়াই বারবার শিশু চিকিৎসককে অপেক্ষা করেও পাইনি চিকিৎসা। যার ফলে চিকিৎসা অভাব ও শিশু বিশেষজ্ঞ অবহেলায় এমন মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নিহত শিশুটির পরিবার।
এ বিষয়ে জেলা সদর হসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএম ও) মো. তারেকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর বর্ষা হলেই বান্দরবানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়। তবে বেশির ভাগই ডেঙ্গুর জোন হিসেবে আর্মি পাড়া রয়েছে। ডেঙ্গু রোগের আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই বলেও জানান তিনি। তবে ডেঙ্গুর রোগে নিহত শিশুর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com