ডেস্ক রির্পোট:- রাজধানীর বাজারে সবজির দাম এখন বেশ চড়া। ১০০ টাকা কেজির নিচে বেগুন কেনা যাচ্ছে না। টমেটো ২০০ টাকা কেজি এবং পেঁয়াজের দাম ১২০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। লাগামহীন এই নিত্যপণ্যের বাজারে হাঁপিয়ে উঠেছে ভোক্তারা।
বিক্রেতারা বলছেন, টানা বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ক্ষেতের সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমে সবজির দাম বেড়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাড্ডা, হাতিরপুল ও জোয়ারসাহারার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ১০০ টাকার নিচে ভালো মানের কোনো বেগুন বিক্রি হচ্ছে না। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে মানভেদে বেগুন ১০০ থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো।
মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে টমেটো কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ১৭০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরচিরে দাম মাঝে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় নেমে এলেও সরবরাহ সংকট দেখিয়ে এখন ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে আলু ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। বরবটির দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকায় উঠেছে। পটোল, চিচিঙ্গা ও ঢ্যাঁড়স প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গাজর ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাউ প্রতিটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চালকুমড়া প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং কচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বাড্ডা কাঁচাবাজারে আসা গৃহিণী ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বাজারে এখন এক কেজি গোল বেগুনের দাম চায় ১৪০ টাকা। মাত্র কয়েক দিন আগেও এই সবজি ৮০ টাকা কেজিতে নিয়েছি।
যে হারে সবজির দাম বাড়ছে, আমাদের মতো সীমিত আয়ের মানুষের টিকে থাকা দায়।’
জোয়ারসাহারা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. মিলন হোসেন বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতে পানি জমে সবজি ও কাঁচা মরিচের ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার কারণেও নষ্ট হয়েছে সবজি। এতে বাজারে সরবরাহ কমে সবজির দাম বেড়েছে।’
বাজারে পেঁয়াজ ও সবজির দাম বাড়লেও কমেছে ডিমের দাম। প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। মুরগির দাম একই আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। দেশি ও আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি ২০০ টাকা। দেশি মসুর ডাল প্রতি কেজি ১৪০ টাকা এবং আমদানি করা মসুর ডাল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা।
আমদানির পরও বাড়ছে পেঁয়াজ-কাঁচা মরিচের দাম
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি। গতকাল হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহ আগে দেশীয় কাঁচা মরিচ ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও গতকাল সেই কাঁচা মরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বন্দরে আমদানি করা কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে দেশীয় পেঁয়াজ ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও গতকাল সেই পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শাহীনুর রেজা শাহিন বলেন, আমদানি করা কাঁচা মরিচ বন্দরে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজিতে শুল্ক দিতে হচ্ছে ৩৫ টাকা আর প্রতি মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি হচ্ছে ৫০০ মার্কিন ডলারে।
তিনি বলেন, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় প্রতি কেজি পেঁয়াজে ২৫ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে। এ কারণে আমদানিকারকরা পেঁয়াজ আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।
পানামা হিলি পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক প্রতাব জানান, গত বুধবার বন্দর দিয়ে ভারতীয় ১৪টি ট্রাকে ৪০৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আমদানি শুরুর পর এ বন্দরে এটিই রেকর্ড।কালের কণ্ঠ
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com