ডেস্ক রির্পোট:- একজন পৌর কাউন্সিলরের চারটি বাড়ি এবং শহরে ৮৮.৬৫ শতাংশ জমি, যার দলিল মূল্য মাত্র ২ কোটি ৭৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা। দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী অনুযায়ী তার চারটি বাড়ির নির্মাণ ব্যয় মাত্র ৮২ লাখ টাকা। সাতটি জমি ও চারটি বাড়ির নির্মাণ ব্যয় মিলে ৩ কোটি ৬১ লাখ ৫১ হাজার টাকার সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে নারায়ণগঞ্জের তারাবো পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আতিকুর রহমানের। তার সম্পত্তির দলিলে এ মূল্য দেখানো হলেও বাস্তবে এসবের মূল্য অনেক বেশি। দুদক এসব সম্পত্তি জব্দ করেছে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নথি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
নথি সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের তারাবো পৌরসভাতেই তার নামে পাওয়া গেছে ৮৮.৬৫ শতাংশ জমি। এর মধ্যে তারাবো পৌরসভার যাত্রামুড়া মৌজায় রয়েছে ৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা দলিল মূল্যের ৪.১৫ শতাংশ ও ২৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ৫ শতাংশের দুটি জমি। এ ছাড়া দিঘিবরাব মৌজায় রয়েছে ১ কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা দলিল মূল্যের ৩৮ শতাংশ, ৮৯ লাখ ১০ হাজার টাকা মূল্যের ২৮.৫০ শতাংশ, ১২ লাখ ৫১ হাজার টাকা দলিল মূল্যের ৪ শতাংশ এবং ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের দেড় শতাংশের ভিন্ন ভিন্ন চারটি জমি। তারাব মৌজাতেও রয়েছে ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা দলিল মূল্যের ৭.৫০ শতাংশের আরও একটি জমি। সাতটি দলিলে এসব জমির ক্রয় মূল্য দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা। বর্তমানে এসব জমির মূল্য অনেক বেশি বলে জানা গেছে।
এ কাউন্সিলরের নামে তারাবো পৌরসভাতেই পাওয়া গেছে চারটি বাড়ি। পৌরসভার যাত্রামুড়া মৌজায় রয়েছে তার তিন তলা একটি বাড়ি, যার নির্মাণ ব্যয় দেখানো হয়েছে মাত্র ২২ লাখ টাকা। এ মৌজাতেই তার পাঁচ শতাংশ জমির ওপর রয়েছে একটি টিনশেড বাড়ি, যার নির্মাণ ব্যয় পাঁচ লাখ টাকা। শহরের তারাব মৌজায় সাড়ে সাত শতাংশ জমির ওপর রয়েছে তার ছয় তলা একটি বাড়ি, যার নির্মাণ ব্যয় দেখানো হয়েছে মাত্র ৩০ লাখ টাকা। এ ছাড়া দিঘিবরাব মৌজায় তার নামে থাকা ৩৮ শতাংশ জমিতেও রয়েছে চার তলা আরেকটি বাড়ি। সম্পদ বিবরণীতে এ বাড়িটির নির্মাণ ব্যয় দেখানো হয়েছে মাত্র ২৫ লাখ টাকা।
এদিকে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কাউন্সিলর আতিকের বিরুদ্ধে একটি মামলার তদন্ত চলছে। এ মামলায় কাউন্সিলর আতিকের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৬২ হাজার ১১২ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন এবং ৫ কোটি ৯৪ লাখ ৮২ হাজার ১১২ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদক জানতে পারে, কাউন্সিলর আতিকুর রহমান এসব সম্পদ অন্যত্র বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব সম্পত্তি জব্দের আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক বিলকিস আক্তার। এ আবেদন মঞ্জুর করে জব্দের আদেশ দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। অভিযুক্ত কাউন্সিলর আতিকুর রহমানের মোবাইল ফোনে ফোন করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ সম্পর্কে দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, একজন পৌর কাউন্সিলরের এত সম্পত্তি থাকা স্বাভাবিক নয়। এটা অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় দুদক তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমরা তার সম্পত্তি জব্দের আবেদন করেছি। আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com