ডেস্ক রির্পোট:- আরও অন্তত দুই বছর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শ্লথ গতিধারাই অব্যাহত থাকবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ভারসাম্য না আসা পর্যন্ত স্বাভাবিক গতি ফিরবে না বলে মনে করে সংস্থাটি। একই সঙ্গে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিক মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে ধরাশায়ী করে ফেলেছে। পাশাপাশি বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরতে আরও অন্তত দুই বছর সময়ের প্রয়োজন হবে। আর এ সময় বাংলাদেশের অর্থনীতির মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের নিচেই থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস-জুন শীর্ষক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করেছে বিশ্বব্যাংক।
একই সঙ্গে সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে কতগুলো ঝুঁকিও রয়েছে। তবে আর্থিক খাতের কার্যকর সংস্কার হলে ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হয়ে উঠবে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি। কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় খাত হিসেবে কৃষি ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পে সরকারি সহায়তা অব্যাহত থাকলে সামষ্টিক অর্থনীতি দ্রুতই ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। এ জন্য বাংলাদেশের অর্থনীতির কার্যকর সংস্কারগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমেই দেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে মনে করে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংক বলছে, সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিতিশীলতার জন্য খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতির উচ্চ চাপ, রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, সরকারের চলতি হিসাবের ঘাটতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, ডলারের বিপরীতে টাকার মান পড়ে যাওয়াই দায়ী। এগুলো বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরাও। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতি বড় হচ্ছে। ঝুঁকি গ্রহণের সক্ষমতা বাড়ছে। যার ফলে বৈদেশিক ঋণও বাড়ছে। আবার উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার পর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গুনছে। এগুলোকে দেশের অর্থনীতির জন্য সম্ভাবনা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্ট ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বেশ জটিল সময় পারছে। এ সময়ে সরকারের ঘোষিত বাজেটেও সংকট এড়ানোর তেমন কোনো পরিকল্পনার কথা বলা হয়নি। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কিছু সম্ভাবনা সব সময় থাকে। যেগুলোকে কাজে লাগাতে পারলে অর্থনীতির সংকট কাটানো সহজ হতো বলে মনে করেন তিনি। বিশ্বব্যাংক বলছে, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছর বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। এরপর ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। যদিও প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে প্রবৃদ্ধির টার্গেট ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে ভারতের ৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ও ভুটানের একই হারে অর্থাৎ ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে। এ ছাড়া নেপালের ৪ দশমিক ৬ ও পাকিস্তানের ২ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।বাংলাদেশ প্রতিদিন
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com