ডেস্ক রির্পোট:- প্রায় ৭৫ হাজার বছর আগের প্রাগৈতিহাসিক যুগের একজন মহিলার মুখের অবয়ব প্রকাশ করেছেন নৃবিজ্ঞানীরা। এর মাধ্যমে হাজার হাজার বছর আগে একজন নিয়ানডার্থাল মহিলা দেখতে কেমন ছিলেন তার রহস্য উন্মোচিত হল। বেশ কয়েক বছর আগে খুঁজে পাওয়া মাথার একটি খুলি এবং মানব দেহের বেশ কয়েকটি হাড়ের ওপর গবেষণা করে এগুলোকে প্লাইস্টোসিন যুগের নিয়ানডার্থাল প্রজাতির নারী কঙ্কাল বলে তথ্য দিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলেছেন, খুঁজে পাওয়া হাড়গুলো ছিলো বিস্কুটের মতো নরম। ফলে এগুলোকে একত্রিত করতে তাদের ভালোই বেগ পেতে হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মাথার খুলি এবং হাড়গুলোকে একত্রিত করে থ্রি-ডি মডেলের মাধ্যমে এর মুখাবয়বের রূপ দেয়া হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, ‘সিক্রেটস অব দ্য নিয়ানডার্থাল’ শিরোনামে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বিবিসি স্টুডিওস নির্মিত এই প্রমাণ্যচিত্রে প্রাগৈতিহাসিক এ প্রজাতির ইতিহাস তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, আজ থেকে বহু বছর আগে এ প্রজাতিটির বিলুপ্ত হয় যাদের সঙ্গে আমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে।
গবেষকদের ধারণা আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে নিয়ানডার্থাল প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটে।
বহু বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া এই প্রজাতির নারীরা দেখতে কেমন ছিলেন তা দেখতে মাথার খুলিতে মানুষের চেহারার আকৃতি দিয়েছেন গবেষকরা। খুলিতে চেহারার আকৃতি দিতে গবেষকরা ব্যবহার করেছেন থ্রি-ডি মডেল নামের বিশেষ এক প্রযুক্তি।
ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজের একদল নৃবিজ্ঞানী এই গবেষণার কাজ করেছেন। তাদের একজন ড. ইমা প্রোমেরয়। তিনি বলেছেন, খুঁজে পাওয়া এই নিয়ানডার্থাল তার হারিয়ে যাওয়া পরিচয় পেতে সাহায্য করেছে। বিবিসিকে তিনি আরো বলেছেন, প্রাগৈতিহাসিক যুগের যে কাউকে নিয়ে কাজ সত্যিই খুব মজার এবং আনন্দের। তবে শুধু তাকে নিয়ে কাজ করাটা আরো বেশি মজার।
যে মাথার খুলির ওপর ভিত্তি করে মডেলটি তৈরি করা হয়েছে তা ইরাকের কুর্দিস্তানের শানিদার গুহায় আবিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে ১৯৫০ সালে এখানে নিয়ানডার্থাল প্রজাতির নারী-পুরুষ এবং তাদের সন্তানদের হাড় ও মাথার খুলি আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। মূলত সেসময় থেকেই এই স্থানটি নৃতাত্ত্বিকদের কাছে বেশ আগ্রহের স্থান হিসেবে পরিচিত। পরে ২০১৫ সালে যখন বৃটিশ গবেষকদের সেখানে আবার আমন্ত্রণ জানানো হয় তখন তারা সেখানে মানবদেহের বেশ কিছু অংশ আবিষ্কার করেন। খুঁজে পাওয়া মাথার খুলিটি ছিল বেশ বড় এবং পুরু। এর পিছনের অংশ দেখতে অনেকটা পিৎজার মতো সমতল। বিবিসিকে এসব তথ্য দিয়েছেন কেমব্রিজের অধ্যাপক গ্রিম বার্কার। ২০১৫ সালে শানিদার গুহায় গবেষক দলের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। বলেছেন, এটা আমাদের জন্য একটি স্মরণীয় ঘটনা। প্রতিনিয়তই অতীতকে স্পর্শ করার মাধ্যমে আমাদের অস্তিত্ব জানতে পারি। তবে আমরা ভুলে যাই অতীত কতটা অসাধারণ ছিল।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com