ডেস্ক রির্পোট:- নিজ ঘরেই পটকা ও আতশবাজি বানাতেন রেজাউল করিম (৪২)। আর রবিবার (২৯ এপ্রিল) রাতে সেগুলোর বিস্ফোরণে উড়ে গেছে তার ঘরটি। এতে আহত হয়েছেন তার স্ত্রী-মেয়েসহ চার জন। রবিবার রাতে বগুড়া শহরের মালতিনগর ভাটকান্দি মোল্লাপাড়ার বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় বনানী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম সোমবার দুপুরে রেজাউল করিমের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা করেন। আহত চার জনের মধ্যে গুরুতর একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আলী আশরাফ জানান, বিস্ফোরণে লন্ডভন্ড বাড়িটি পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয় দল এলে বিস্ফোরণের কারণ ও অন্যান্য বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। গ্রেফতার আসামিকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বগুড়া শহরের মালতিনগর ভাটকান্দি মোল্লাপাড়ার লয়া মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম মাছ, সাটারিং ব্যবসার পাশাপাশি বাড়িতে কিছুটা গোপনে পটকা ও আতশবাজি তৈরি ও বিক্রি করে থাকেন। তার টিনশেড আধাপাকা বাড়ির তিনটি ঘরে এসব মজুত করা ছিল। রবিবার এশার নামাজের সময় রেজাউল করিম মসজিদে যান। রাত ৯টার দিকে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে দুটি ঘর বিধ্বস্ত হয়। ঘরের টিনের চালা উড়ে পাশে গিয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের মাত্রা এত বেশি ছিল যে, আরসিসির চিকন বিম ভেঙে ঘর লন্ডভন্ড হয়ে যায়।
এ সময় ঘরে থাকা রেজাউল করিমের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা (৩৮), তার মেয়ে সুমাইয়া আকতার (১৫), ভাই রাশেদুল ইসলামের মেয়ে জিম খাতুন (১৬) ও প্রতিবেশী আলী হোসেনের মেয়ে তানসিম বুশরার (১৪) শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এর মধ্যে জিম, বুশরা ও সুমাইয়াকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুশরার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে পটকা ব্যবসায়ী রেজাউল করিম দাবি করেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এমনটা হয়েছে।
তবে বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল জলিল জানান, বিধ্বস্ত ঘর থেকে তিনটি অক্ষত এলপি গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া গেছে। তিনি প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনাকে বিস্ফোরকজনিত বিস্ফোরণ বলে উল্লেখ করেন। তবে তদন্ত শেষে এ বিস্ফোরণের বিষয়ে প্রকৃত তথ্য দেওয়া সম্ভব হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী আতিকুর রহমান ও অন্যরা জানান, রেজাউল করিম ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে পটকা ও আতশবাজি তৈরির পর বিক্রি করে থাকেন। আর এ পটকা থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহীনুজ্জামান শাহীন জানান, বনানী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতদেরও আসামি রাখা হয়েছে। পরে রেজাউল করিমকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত বাড়িটি কর্ডন করে রাখা হয়েছে। ডিএমপির বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এলে বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক তদন্তে ওই বাড়িতে নাশকতার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে বাড়ির মালিক অবৈধভাবে বিস্ফোরক রেখে পটকা তৈরি করছিলেন। আবাসিক এলাকায় কাজটি অত্যন্ত বিপজ্জনক। তাই পুলিশ বাদী হয়ে মামলা ও গৃহকর্তাকে গ্রেফতার করেছে।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com