ডেস্ক রির্পোট:- যুগের পর যুগ ধরে জাতিসংঘের সদস্যপদ পেতে চেষ্টা-তদবির করে আসছে ফিলিস্তিন। বিশ্বের বড় বড় দেশ ও নেতাদের অনুরোধ করে আসছেন ফিলিস্তিনি নেতারা। তবে এত বছর পার হলেও শুধু জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষকের মর্যাদা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দেশটিকে। বছরের পর বছর ধরে বৈশ্বিক সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদে আটকে আছে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদের আবেদন।
তবে আগামীকাল শুক্রবার পূর্ণ সদস্যপদ পাওয়ার জন্য ফিলিস্তিনের আবেদনের ওপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোট হবে। এই ভোটাভুটিতে ফিলিস্তিনিদের আবেদনের প্রস্তাব পাস হলে জাতিসংঘের সদস্যপদের পাশাপাশি কার্যত বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটবে ফিলিস্তিনের। তবে কূটনীতিকরা বলেছেন, এমনটা কখনো হতে দেবে না ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। তাই এই প্রস্তাব আটকে দেবে বিশ্ব সংস্থাটির স্থায়ী সদস্য ওয়াশিংটন।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় ফিলিস্তিনের আবেদন নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাবের ওপর ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদে ভোট হবে। খসড়া প্রস্তাবে ১৯৩ সদস্য বিশিষ্ট জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে জাতিসংঘের সদস্যপদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাস হতে হলে প্রস্তাবের পক্ষে কমপক্ষে ৯টি ভোটের প্রয়োজন হয়। একই সঙ্গে স্থায়ী পাঁচ সদস্য দেশকে—যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া বা চীন—ভেটো প্রদান থেকে বিরত থাকতে হবে। এদের কেউ ভেটো দিলে সেই প্রস্তাব আর পাস হবে না। কূটনীতিকরা বলছেন, এবারের প্রস্তাবে পরিষদের ১৩টি সদস্য দেশ পক্ষে ভোট দেবে। তাই প্রস্তাব আটকে দিতে যুক্তরাষ্ট্র তার ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করবে।
গত ছয় মাস ধরে গাজা যুদ্ধ চলছে। ইসারয়েলি হামলায় সেখানে প্রায় ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনে এই যুদ্ধের মধ্যে আবারও দ্বিরাষ্ট্রীয় সমধানের বিষয়টি আলোচনায় আসছে। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমধানের মূল কথা হলো ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র পাশাপাশি অবস্থান করবে। দ্বিরাষ্ট্রীয় সমধানের সমর্থক হলেও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পক্ষের মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে হওয়া উচিত। এটি নিয়ে জাতিসংঘের কিছু করা ঠিক হবে না।
কোনো দেশকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ পেতে হলে অবশ্যই নিরাপত্তা পরিষদের ছাড়পত্র লাগবে। নিরাপত্তা পরিষদ ছাড়পত্র দিলে বিষয়টি উঠবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। ১৯৩ সদস্য বিশিষ্ট এই পরিষদের কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট দিলেই তবে ওই দেশটি জাতিসংঘে প্রবেশ করতে পারবে। তবে এর যে কোনো পর্যায়ে ভেটো দিতে পারে ইসরায়েলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ঐতিহাসিকভাবে জাতিসংঘে ইসরায়েলের ঢাল হিসেবে কাজ করে আসছে দেশটি। সাধারণত ইসরায়েলবিরোধী কোনো প্রস্তাবই জাতিসংঘে পাস হতে দেয় না তেল আবিবের দীর্ঘদিনের মিত্র ওয়াশিংটন।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com