বান্দরবান:- বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ব্যাংকগুলোতেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে আজ বুধবার সেখানকার ব্যাংকের শাখা-উপশাখাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
উপজেলা সদর ও বাইশারী এলাকায় বিভিন্ন ব্যাংকের ৬টি শাখা ও উপশাখা রয়েছে। ব্যাংকগুলো হলো—একটি সোনালী ব্যাংক, একটি জনতা ব্যাংক, দুটি কৃষি ব্যাংক। ফার্স্ট সিকিউরিটি ও আইএফআইসি ব্যাংকের দুটি উপশাখা রয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মমতাজ মিয়া জানান, বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনার পর থেকে তারা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। এর কারণ হলো উপজেলা সদরের ব্যাংকগুলোতে এ ঘটনা ঘটেছে। আজ তারা লিখিতভাবে আবেদন পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন।
তিনি আরও জানান, পরপর দুই উপজেলায় ব্যাংকে ডাকাতি ও হামলার খবরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের শাখা পরিদর্শন করেছেন এবং নির্দেশনা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জনতা ব্যাংকের এরিয়া ম্যানেজার অলক বড়ুয়া বলেন, ‘পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের দ্বারা ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা পাহাড়ের ব্যাংকিং সেক্টরকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। সবাই আতঙ্কে রয়েছে। সে কারণে নাইক্ষ্যংছড়িতে তাদের এই শাখাটি দেখতে কক্সবাজার থেকে ছুটে এসেছি। এ বিষয়ে সর্বস্তরের ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
নাইক্ষ্যংছড়ি সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হোছাইন মাহমুদ আরাফাত বলেন, ‘হঠাৎ এমন ঘটনার জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না। পাহাড়ে ব্যাংক সেক্টরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন পরিস্থিতি অনেকটা নিরাপদ। পুলিশ পাহারায় রয়েছে।’ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দেওয়া নির্দেশনা মোতাবেক সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন বলেও জানান এ ব্যবস্থাপক।
অন্যদিকে আজকের ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন গ্রাহক। নুরুল হাকিম ও নাছিমা আক্তার নামে দুজন কৃষি ও জনতা ব্যাংকের গ্রাহক জানান, রুমা ও থানচিতে ডাকাতির ঘটনার পর নাইক্ষ্যংছড়িতে ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এ কারণে তারা দুপুর দেড়টার পর ব্যাংকে গিয়ে টাকা তুলতে পারেননি। ব্যাংকের দরজা দেড়টার পর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। রমজানে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ব্যাংকের টাকা লেন-দেনের সময় নির্ধারিত ছিল।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, ‘উপজেলায় যে কয়টি শাখা-উপশাখা, এটিএম ও এজেন্ট ব্যাংকিং রয়েছে, সবকটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ টহলেও আছে। এখন পর্যন্ত উপজেলার সব প্রতিষ্ঠান নিরাপদ ও অক্ষত রয়েছে।’
সার্বিক বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে ডাকাতি ও হামলার ঘটনার পর ব্যাংকিং সেক্টরসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য তিনি জরুরি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা, সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করতে সার্বিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য বুধবার দুপুর ১টার দিকে বান্দরবানের থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সশস্ত্র হামলা চালায় পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা।
এর আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকেও বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকে লুট করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র, মোবাইল, ব্যাংকের ভোল্টের সব টাকাসহ ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। যাকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যরা।
ধারণা করা হচ্ছে—এ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যরা।আজকের পত্রিকা
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com