ডেস্ক রির্পোট:- ঈদ মানেই একটু বাড়তি ছুটি, ঈদ মানেই একটু বাড়তি আনন্দ। পরিবার নিয়ে আত্মীয় স্বজনের বাড়ি বেড়ানোর পাশাপাশি ভ্রমণ পিপাসু মানুষ পাহাড় নদী লেক সমুদ্র কিংবা প্রকৃতির কাছাকাছি ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ খুঁজেন।
ভ্রমন বিলাসী মানুষকে ভ্রমনের সুযোগ তৈরি করে দিতে ঈদকে সামনে রেখে প্রস্তুত হয়েছে সবুজ প্রকৃতি ঘেরা পাহাড়-নদী ও সমুদ্রের শহর চট্টগ্রাম এবং পার্বত্যাঞ্চল। এবারের ঈদে ১০ লাখেরও বেশি পর্যটক চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে পর্যটকদের আনন্দ উপভোগের জন্য যে সব স্পট রয়েছে সেগুলো হলো- পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, নেভাল বিচ, চট্টগ্রাম মেরিন ড্রাইভ সড়ক, টোল রোড, ফয়’স লেক, সি আর বি, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর প্রজাপতি পার্ক, ডিসি ফ্লাওয়ার পার্ক, আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকত, মহামায়া লেক, নাপিত্যাছড়া ঝর্না, খৈয়াছড়া ঝর্না ইত্যাদি।
চট্টগ্রাম নগরের বাইরে পর্যটন উপশহর কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদী তীরের নিসর্গ রিভার ভ্যালি, নিসর্গ পড হাউস, কাপ্তাই লেক ঘেরা নৌবাহিনী এবং সেনাবাহিনীর নান্দনিক পর্যটন স্পট, ঝুম রেস্তোরা, বন বিভাগের প্রশান্তি পার্ক, কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সবুজ পাহাড়ে কাপ্তাই টং ইকো রিসোর্ট, রাঙ্গুনিয়া শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক উল্লেখযোগ্য।
কক্সবাজারের পর দেশের অন্যতম সুন্দর ও আকর্ষনীয় সমুদ্র সৈকত চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। ঈদকে ঘিরে প্রতিবছর এই সৈকত হাজার হাজার পর্যটকদের আনাগোনায় মুখর হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ঈদের দিন থেকে পুরো সপ্তাহ জুড়ে চট্টগ্রাম ও জেলার আশে-পাশের সব উপজেলা থেকে ভ্রমণ পিপাসু মানুষ সমুদ্রের অপর সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় জমান পতেঙ্গায়। এবারের ঈদেও কয়েক লাখ পর্যটক পতেঙ্গা ও নেভাল বিচের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম নগরের বাইরে অন্যতম সুন্দর ও আকর্ষনীয় পর্যটন স্পট কাপ্তাইয়ের শীলছড়িস্থ নিসর্গ রিভার ভ্যালি ও নিসর্গ পড হাউজ।
কাপ্তাই উপজেলার প্রবেশের আগে ওয়াগ্গা ইউনিয়নের শীলছড়ি এলাকায় পৌঁছালে সড়কের পাশে কর্ণফুলী নদীর তীরে চোখে পড়বে এই নিসর্গ রিভার ভ্যালী। এখানে খুব কাছে থেকে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
নিসর্গ রিভার ভ্যালির কর্ণধার মোহাম্মদ সারওয়ার জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় নদীর সম্মিলনে অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের অন্যতম স্থান নিসর্গ রিভারভ্যালি ও পড হাউস। নদী তীরে এখানে মোট নয়টি কটেজ আছে। প্রতিটি কটেজে তিনজনের থাকার মতো ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া পড হাউসে পর্যটকদের জন্য রয়েছে বিনোদনের বিভিন্ন সুবিধা। আছে ওয়াই-ফাই, কায়াকিং ও বিভিন্ন রাইডিং-সুবিধা।
এই পড হাউস থেকে অনায়াসে নদী আর পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। পাশাপাশি রুমের সামনে নেটের তৈরি দোলনায় শুয়ে চাঁদনি রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করার ব্যবস্থাও রয়েছে। নয়টি পড হাউসের নামও আকর্ষনীয়। এগুলো হলো- আকাশ কুঞ্জ, মেঘদূত, চন্দ্র পাহাড়, সাঁঝের মায়া, নদী বিলাস, আকাশ নীলা, আসমানী কুটির, ছায়াবীথি, নিঝুম নিরালা। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে পর্যটকরা অগ্রিম বুকিং দিয়ে এখানে আসতে পারবেন।
কাপ্তাইয়ের অন্যতম পাহাড় ঘেরা আরও একটি নান্দনিক পর্যটন স্পট টং ইকো রিসোর্ট। পাহাড় আর সবুজ প্রকৃতি ভালোবাসেন যারা, নেটওয়ার্কের মধ্যে থেকেও নেটওয়ার্কের বাইরে থাকতে চান, কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ নীল জলের সঙ্গে যদি ভালোবাসার সখ্যতা গড়তে চান, সর্বোপরি কিছুটা পাহাড় বেয়ে কিছুটা হাঁটাহাঁটি করে শরীরের মেদ-চর্বি ঘাম ঝড়াতে চান তাদের জন্য উপযোগী কাপ্তাইয়ের টং-ইকো রিসোর্ট।
টং ইকো রিসোর্টের কর্ণধার রনজিত তঞ্চঙ্গ্যা রাজিব জানান, অসাধারণ সুন্দর সবুজ পাহাড়ের উপর টং ইকো রিসোর্ট। চারপাশে সবুজ বৃক্ষরাজি, মুকুলে ভরপুর আম্রপালির বাগান, বড়ই, পেপেসহ নানা জাতের দেশি ফলের গাছ রয়েছে। দুটি অনন্য সুন্দর কটেজ ঘিরে বর্ণিল সবুজের সমারোহ। বিলাসী কটেজে যেমন থাকা যায়, তেমনি খোলা উঠোনে থাকা যায় তাঁবু টানিয়ে।
কটেজের ভেতর থেকে চাঁদ জোছনার সঙ্গে যেমন ভাব জমাতে পারবেন, একইভাবে পর্যটকরা হারিয়ে যেতে পারবেন ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে অপার প্রেমে। পরিবার, স্বজন, প্রিয়জন, বন্ধু-বান্ধবী নিয়ে যেমন উপভোগ্য সময় কাটাতে পারবেন, আবার মন চাইলে একাকি নিজের মতো হারাতে পারবেন নেটওয়ার্কের বাইরে।
খাওয়া দাওয়া হিসেবে আপনি দেশি কিংবা আদিবাসীদের রান্না বিভিন্ন মেনু পাবেন পছন্দ মতোই। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো দিনে মাত্র ৩/৪ হাজার টাকার মধ্যেই থাকা-খাওয়া ঘুরা-ফেরা সবই সেড়ে ফেলতে পারবেন পর্যটকরা। কাপ্তাই নেভী রোড হয়ে রাঙ্গামাটি সড়কের কামিল্ল্যাছড়ি এলাকাতে অবস্থান এই রিসোর্টের।
কাপ্তাইয়ে পর্যটক আকর্ষণের আরও একাধিক পর্যটন স্পট ঈদকে ঘিরে প্রস্তুতি নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কর্ণফুলী নদী তীরে ওয়াগ্গা ঝুম রেস্তোরা, কাপ্তাই নৌবাহিনীর পর্যটন স্পট। সেনাবাহিনীর পর্যটন স্পট।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরীতে পর্যটক ও দর্শনার্থী আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে পশু পাখিতে সমৃদ্ধ চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। এই চিড়িয়াখানাতে সাদাবাঘসহ মোট বাড়ের সংখ্যই ১৬টি। এছাড়া ক্যাঙ্গারুর পরিবারে এসেছে নতুন অতিথি। আছে জেব্রা, লামাসহ নানা জাতের পশু-পাখি।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com