ডেস্ক রির্পোট:- সম্প্রতি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার মুখে পড়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। যতদূর জানা যাচ্ছে ভিডিওটি এই ইউনিভার্সিটির ‘গালা নাইট’ নামে একটি প্রোগ্রামের। ভিডিওতে দেখা যায় বেশ কজন শিক্ষার্থীকে বেশ অন্তরঙ্গ অবস্থায় গানের তালে নাচ করছেন, কাউকে কাউকে আবার এর সঙ্গে গভীর চুম্বন করতেও দেখা গেছে।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্নাতকের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বাধ্যতামূলক আবাসিক সেমিস্টার রয়েছে। এই সেমিস্টারে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তাদের শিক্ষার্থীদের সাভারে ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টারে (টার্ক) পাঠিয়ে থাকে। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি আবাসিক এই সেমিস্টারের ১০ মার্চের একটি অনুষ্ঠানের বলে জানা যাচ্ছে।
এদিকে টার্ক নামের ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রোগ্রাম বন্ধ করতে ইতোমধ্যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশটি পাঠানো আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এই টার্কের নামে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হয়। অথচ তা শিক্ষার্থীদের বাস্তবিক কোনো কাজে আসে না। তাদের নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত এ টার্কের অশ্লীলতা প্রোগ্রামের নামে সামাজিক অনাচার উৎসাহিত করে।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে এমন অনুষ্ঠানের সমালোচনা করে সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব লিখেছেন, এ ছেলে-মেয়েরা অসভ্য। ভালোবাসা প্রকাশ্যে প্রদর্শনীর বিষয় নয়। এ ছেলে-মেয়েদের বাবা-মা কি ওদের দেখিয়ে ভালোবাসা করে। নিশ্চয়ই না। কোনো লোক সভ্য কি না তা বিচারের মাপকাঠি কী? সমাজের প্রতি তার অবদান কী? সমাজ গঠনে তার ভূমিকা কী? ইত্যাদি সবকিছু বিবেচনা করেই একজনের সভ্যতার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কোনো সমাজ প্রকাশ্যে চুমু খাওয়াকে সমর্থন করে না। খোঁজ নিয়ে দেখলে এ ছেলে-মেয়েদের পরিবারের এখন যে কঠিন অবস্থা যাচ্ছে তা কি ছেলে-মেয়েদের জানা আছে। সমাজে এ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে নিদেনপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
সজিব বিশ্বাস নামে এক শিক্ষক লিখেছেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে অশ্লীলতা করেছে এটা আমাদের সমাজ কৃষ্টি কালচারের সঙ্গে যায়? এই ভিডিওর মাধ্যমে অন্য শিক্ষার্থীদের মাঝে কী ম্যাসেজ (বার্তা) দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত এ ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলো সরিয়ে নেওয়া।
বেসরকারি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থী তপু রায়হান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গালা’ না কি অন্যকিছু? দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক বছর ধরে দেখছি এই ‘গালা নাইটস’ সংস্কৃতি চালু হয়েছে। যদিও এই ‘গালা’ অনুষ্ঠান পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকে নেওয়া। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গালা নাইটস’ ভিডিও দেখে বুঝলাম এটিকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে, একটি বিকৃত উদযাপন করছে দেশের ছাত্রছাত্রীরা। গালা অনুষ্ঠান কি সেটাই জানে না… ছি ছি। একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আরও সচেতন ও কার্যকরী ভূমিকা থাকা প্রয়োজন ছিল।
গালা নাইট ও ভাইরাল ভিডিও নিয়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বক্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত ভিসিকে একাধিকবার কল করেও যোগাযোগ করা যায়নি। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অফিস অব কমিউনিকেশন্সের ডেপুটি ম্যানেজার ফাতিউস ফাহমিদ এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জেনে জানাবেন বললেও দুই দিনেও কোনো সাড়া দেননি।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com