ডেস্ক রির্পোট:- লাইসেন্স না থাকায় ঢাকার উত্তরার দুটি হাসপাতালের কার্যক্রম স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এগুলো হলো- হাই কেয়ার কার্ডিয়াক ও নিউরো হাসপাতাল। এছাড়া একই কারণে মোহাম্মদপুরের কেয়ার মেডিক্যাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনভর স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা ১০টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালান। অভিযানে ওই তিন হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হাসান মো. মঈনুল আহসান জানান, অধিদফতর আজ ১০টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায়। এর মধ্যে মোহাম্মদপুরের কেয়ার হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। উত্তরার হাই কেয়ার হাসপাতাল এবং হাই কেয়ার নিউরো ও কার্ডিয়াক হাসপাতালের লাইসেন্স না থাকায় কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. এহসানুল হক বলেন, ‘উত্তরার এ দুইটি হাসপাতালের লাইসেন্স নেই। তারপরও দুই বছর ধরে তাদের কার্যক্রম চলছিল। আমরা আজ তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছি, বৃহস্পতিবার নোটিশ দেওয়া হবে।’
এছাড়া অভিযানে শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালকে তথ্য কর্মকর্তার নাম ও ছবি টানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই দিন শ্যামলীর ইসলাম ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে কালার কোডেড বিন সঠিকভাবে না থাকায় মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। ওই এলাকার আরেক হাসপাতাল হাই কেয়ার অর্থোপেডিক্স ও জেনারেল হাসপাতালকে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।
শ্যামলীর এসবিএফ কিডনি কেয়ার সেন্টারে সার্বক্ষণিক নেফ্রোলজি কনসালটেন্ট নিয়োগের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ওই এলাকার ঢাকা ট্রমা সেন্টার ও স্পেশালাইজড হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক ল্যাব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া এ দিন অভিযান চালানো হয় উত্তরার লুবানা হাসপাতাল, উত্তরা ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক এবং উত্তরা ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিকেও। তবে এসব প্রতিষ্ঠানে কোনও অনিয়ম পাওয়া যায়নি বলেও জানান ডা. আবু হাসান মো. মঈনুল আহসান।
এর আগে গত মঙ্গলবার হাই কেয়ার জেনারেল হাসপাতালে পিত্তথলির পাথর অস্ত্রোপচারের পর শামীমা আক্তার মুন্নি নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ করে তার পরিবার।
মুন্নির ভাই শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, তার বোনের অস্ত্রোপচার যে চিকিৎসকের করার কথা ছিল তিনি করেননি। আরেকজন চিকিৎসক করেছেন, ভুল চিকিৎসায় তার বোনের মৃত্যু হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডা. আবু হাসান মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘হাসপাতাল দুইটি একই মালিকের। দুই ভবনে আলাদা নামে হাসপাতাল চালাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু হাই কেয়ার জেনারেল হাসপাতালের লাইসেন্স থাকলেও হাই কেয়ার কার্ডিয়াক ও নিউরো হাসপাতালের লাইসেন্স ছিল না। একইসঙ্গে সেখানে অভিযানের সময় ছয় জন চিকিৎসক ছিলেন, যেখানে ১০০ শয্যার হাসপাতালের জন্য ১০ জন চিকিৎসক থাকার নিয়ম।’
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) থেকেই সারা দেশের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে অভিযান শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
প্রথম দিনে ঢাকায় দুইটি ব্লাড ব্যাংকসহ ছয়টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। অধিদফতরের দুইটি টিম অভিযানে মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সসহ নানা অসঙ্গতির পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়। বন্ধ করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- মোহাম্মদপুর কলেজগেট এলাকার মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারের রেডিয়াম ব্লাড ব্যাংক, রাজধানী ব্লাড ব্যাংক এবং টিজি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এছাড়া মিরপুরের ইসিবি চত্বর এলাকার আল হাকিম চক্ষু হাসপাতাল, কালশী এলাকার এশিয়ান ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও এ এইচ এস ডায়ালাইসিস ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযানের পর আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এর আগে ২০২২ সালের নভেম্বরে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালার শর্ত না মানায় বেসরকারি কেয়ার মেডিক্যাল কলেজের সব অনুমোদন বাতিল করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com