ডেস্ক রির্পোট:- কক্সবাজারের রামুর দুহাজার বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার তীর্থস্থান পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার সফররত আন্তর্জাতিক সংস্থার মিশন প্রধানসহ ২৪ দেশের ৩৪ কূটনীতিক। এ সময় কূটনীতিকরা ২ হাজার ৩০০ বছরের পুরোনো মহামতি বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান দেখে বিমোহিত হন।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে এসব কূটনীতিকদের গাড়িবহর রামু রাংকুট বনাশ্রম বিহারে পৌঁছালে তাদেরকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান বিহারের পরিচালক জ্যোতিসেন মহাথেরসহ স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
এরপর কূটনীতিকরা যান কক্সবাজার সৈকত এলাকায়। সৈকতের লাবণী পয়েন্টের ট্যুরিস্ট ছাতা মার্কেট ঘুরে পছন্দের নানান জিনিস ক্রয় করেন। এরপর ঘুরে দেখেন দৃষ্টিনন্দন নানা পর্যটন স্পট। সৈকত দর্শন শেষে কূটনীতিকরা রামুর পেঁচারদ্বীপ মারমেইড বিচ রিসোর্টে যান। সেখানে দুপুরের ভোজ সেরে হোটেলে ফিরে বিকেলে কক্সবাজার বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরেন। এসময় অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. নজরুল ইসলামসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, পুলিশ কর্মকর্তারাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ‘অ্যাম্বাসাডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম’ এর শেষ দিনে বুধবার রাষ্ট্রদূতরা রামু ও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে ‘অ্যাম্বাসাডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম’ এ কূটনীতিকরা চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমি ও কর্ণফুলী টানেল পরিদর্শন শেষে বিশেষ ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার পৌঁছান।
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, কক্সবাজারের উন্নয়ন প্রকল্প, রামু বৌদ্ধ মন্দির, প্রাচীন ঐতিহ্য ও জেলার সৌন্দর্য উপভোগ করাতে ৩৪ কূটনীতিককে কক্সবাজার আনা হয়েছে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে টানেলসহ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দেখে ট্রেনে করে তারা কক্সবাজারে এসেছেন। বুধবার সকালে রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ তীর্থস্থান আসলে অতিথিদের স্বাগত জানান বিহারাধ্যক্ষ কে শ্রী জ্যোতিসেন মহাথেরো। তিনি কূটনীতিকদের সামনে বিহারের ঐতিহাসিক বিবরণ উপস্থাপন করেন। বিহারাধ্যক্ষ এই অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বহুকালের ঐতিহ্য বিদেশের মিশন প্রধানদের জানান।
হুইপ কমল আরও জানান, পরিদর্শনকালে মিশন প্রধানগণ বুদ্ধাস্থি সম্বলিত ঋদ্ধিময় বুদ্ধবিম্ব পরিদর্শন করেন এবং সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা বিহারের বিভিন্ন স্থানে সংরক্ষিত বৌদ্ধ পুরাকীর্তিগুলো ঘুরে দেখেন। পরে অতিথি কূটনীতিকদের সম্মানে স্থানীয় শিশু-কিশোররা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে। স্থানীয় পিঠা পুলি আর ফলমূল দিয়ে কূটনীতিকদের আপ্যায়িত করা হয়।
কক্সবাজার সফরের অনুভূতি প্রকাশকালে বিভিন্ন মিশনের প্রধানরা বাংলাদেশের পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনার কথা জানান। অ্যাম্বাসাডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম বাংলাদেশের পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তারা মত দেন। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সারা বিশ্বের জন্য একটি অসাধারণ নজির বলে তারা উল্লেখ করেন।
রাংকুট বিহারাধ্যক্ষ জ্যোতিসেন অ্যাম্বাসাডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম আয়োজন করায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরনের কর্মসূচি বিদেশিদের নিকট বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা আরও উঁচু করবে।
উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্ক, কসভো, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, ভ্যাটিকান, ভুটান, স্পেন, আর্জেন্টিনা, লিবিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ফ্রান্স এবং এফএও, আইইউটি, একেডিএন আন্তুর্জাতিক সংস্থাগুলোর মিশনপ্রধানসহ ৩৪ জন কূটনীতিক সদস্য এ আউটরিচ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com