ডেস্ক রির্পোট:- শুধুমাত্র ভাষা নিয়ে এমন বলিদান। সারা বিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশিরাই ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে আছেন। মাতৃভাষাকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদার অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে বাঙালি জাতি। স্বাধিকার আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল ভাষা আন্দোলনের মধ্যদিয়ে। বাংলা ভাষাকে সম্মান জানাতে জাতিসংঘ ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা দিয়ে সারা বিশ্বে মর্যাদার আসনে আসীন করে। ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর শ্রদ্ধার সঙ্গে উদ্যাপিত হয় মহান ভাষা দিবস ২১শে ফেব্রুয়ারি। বাংলা ভাষাকে বিশ্ব যখন মর্যাদা দিয়েছেন, তখন নাটক কিংবা সিনেমায় ভাষা নিয়ে খুব একটা কাজ হয়নি এখন অবধি। যা কাজ হয়েছে তা সংখ্যায় খুবই কম। ইদানীং আবার কিছু কিছু নাটকে বাংলা ভাষাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনও করা হচ্ছে- যা সত্যি দুঃখজনক। নাটক-সিনেমাতে নতুন প্রজন্মের অনেকেই বাংলা ভাষাকে ইংরেজি উচ্চারণের মতো করে প্রকাশ করছে, যা শ্রুতিকটু।
নাটক সিনেমাকে জীবনের প্রতিচ্ছবি বলা হয়। কিন্তু মিষ্টিমধুর বাংলা ভাষাকে নাটক-সিনেমায় পোস্টমর্টেম করে ক্ষতবিক্ষত করা হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের সূচনালগ্নে আসকার ইবনে শাইখ লিখেছিলেন নাটক ‘দুর্যোগ’। ভাষা আন্দোলনের যোদ্ধাদের নিয়ে এই স্বনামধন্য নাট্যকার ১৯৫৪ সালে লিখেছিলেন ‘যাত্রা’ নাটকটি।
অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীর মঞ্চ নাটক ‘কবর’ যেন ভাষা আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ যোদ্ধাদেরই বীরত্বগাথা প্রতিধ্বনিত হয়েছে। ‘কবর’ নাটকটি মুনীর চৌধুরী ১৯৫৩ সালে কেন্দ্রীয় কারাগারে রচনা করেন। নাটকটি প্রথম মঞ্চায়ন হয় ২১শে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় কারাগারে। অতীতে ভাষা আন্দোলনকে যেভাবে নাটক, সিনেমায় ও গানে ধারণ করা হয়েছে বিপরীতে বর্তমানে শোবিজে তার দৈন্যতারই দেখা মেলে। ছোট ও বড় পর্দা শক্তিশালী মাধ্যম। যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে তাদের ইতিহাস, কৃষ্টিকালচার সম্পর্কে ধারণা দেয়। দুঃখজনক হলেও সত্যি ইদানীং নাটক বা সিনেমায় একুশ কিংবা ভাষা আন্দোলনকে নিয়ে খুব অল্প চিত্রনাট্য তৈরি হচ্ছে। আজও ভাষা নিয়ে কয়েকটি নাটক প্রচার হবে। তবে কেবল উৎসব কেন্দ্রিকই নির্মিত হচ্ছে নাটক।
এ বিষয়ে অভিনেতা আবুল হায়াত বলেন, ভাষা আন্দোলন নিয়ে আমাদের যে ইতিহাস এটা পৃথিবীতে আর কারও নেই। এটা আমাদের গর্বের জায়গা। তবে এখন তো ভাষার বিকৃতি চোখে পড়ে অনেক নাটকে। এটা একদমই হওয়া উচিত নয়। এ নিয়ে আসলে চ্যানেল, শিল্পী, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার সবার এক হয়ে কাজ করতে হবে। নিজেদের ভাষাকে নিজেদেরই সম্মান না করতে জানলে তো হবে না। আবুল হায়াত আরও বলেন, ভাষা আন্দোলন নিয়ে নিয়মিত নাটক ও সিনেমা হওয়া উচিত। কিন্তু কাটতির কথা চিন্তা করে হয়তো অন্য ধারার নাটকের প্রতিই জোর দিচ্ছেন পরিচালক ও প্রযোজকরা। কাটতির কথা যে চিন্তা করবে না তা নয়। তবে পাশাপাশি নিজেদের গর্বের, ইতিহাসের জায়গাগুলোও পর্দায় তুলে ধরতে হবে নতুন প্রজন্মের জন্য। তাই মুক্তিযুদ্ধ কিংবা ভাষা আন্দোলন নিয়ে নাটকের সংখ্যা আরও অনেক বাড়ানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ম্নবজমিন
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com