ক্সবাজার ও বান্দরবান:- বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে এশিয়া হাইওয়ের মাথায় নাফ নদীর ওপরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ। এই সেতুর আশপাশে এবং সীমান্তবর্তী মাছের ঘেরে একাধিক লাশ ভাসছে পাঁচ দিন ধরে। পুলিশ ও বিজিবি খবর পেলেও গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত লাশ উদ্ধার হয়নি।
এদিকে টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় তিন দিন ধরে থেমে থেমে গুলির শব্দ ভেসে আসছে। অবশ্য কক্সবাজারের অন্যান্য সীমান্ত এলাকা ও বান্দরবান সীমান্তে পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেকটাই শান্ত। এই অবস্থায় আতঙ্ক নিয়েই ঘরে ফিরতে শুরু করেছে স্থানীয়রা।
এদিকে কূটনৈতিক সূত্র বলেছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তেতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন সাময়িক বন্ধ করা হয়েছে। সেখান থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইয়াঙ্গুনে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বিজিবির ঘুমধুম বিওপির পরেই বাংলাদেশ-মিয়ানমার ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ। সেতুর দুই পাশে নাফ নদীতে স্থানীয়দের একাধিক মাছের ঘের। এসব ঘেরের একটি ঘুমধুমের মন্ডলপাড়ার সাইফুল ইসলামের। সীমান্তবর্তী ৩১ নম্বর পিলারের এপারে বাংলাদেশ-মিয়ানমার ফেন্ডশিপ ব্রিজের সামান্য পশ্চিমে ঘেরটি। শূন্য রেখার ২০ গজ ভেতরে পড়েছে এটি।
ওপারেই মিয়ানমারের ঢেকুবুনিয়া বিজিপি ক্যাম্প। সাইফুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, তমব্রু খাল ও আশপাশের এলাকার ঘেরে লাশ ভাসছে।
ঘুমধুমে বাংলাদেশ-মিয়ানমার ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজসংলগ্ন আরেক মাছের ঘেরের মালিক মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের মাছের ঘেরে একটি লাশ ভাসছে। অদূরে নাফ নদীতে ভাসছে আরও কয়েকটি লাশ। তিনি বলেন, গত দুই দিনেও লাশ উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, সীমান্তের শূন্যরেখায় ও সীমান্ত খালে ভাসছে লাশ আর লাশ। দক্ষিণ ঘুমধুমে মাছের ঘেরেও একটি লাশ ভাসছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে থাকা একটি লাশ উদ্ধারের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
সীমান্তে কমেছে গোলাগুলি
বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের এলাকাগুলো এখন অনেকটাই শান্ত। টেকনাফের উখিয়া সীমান্তেও দুই দিন ধরে গোলাগুলি কম। এতে সীমান্তের এপারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি। এর মধ্যেই ঘরে ফিরতে শুরু করেছে স্থানীয়রা। তবে গতকাল সকাল থেকে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের উলুবনিয়া সীমান্তে প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, সীমান্তের ওপারে সীমান্তচৌকি দখল নিয়ে তীব্র লড়াই হচ্ছে।
টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর আহমদ আনোয়ারী বলেন, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।
তবে উখিয়ার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন বলেন, তাঁর ইউনিয়নের সীমান্ত আপাতত শান্ত। একই কথা জানিয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ।
এদিকে গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম ও পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা কক্সবাজারে সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে।
আর চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি বলেন, কোনো রোহিঙ্গা বা সন্ত্রাসীকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।আজকের পত্রিকা
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com