ডেস্ক রির্পোট:- আধুনিকতার ছোঁয়ায় আর মানুষের রুচিবোধে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হচ্ছে পারিপার্শ্বিক পরিবর্তন। এতে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। যার ফলে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রায় বিলুপ্তর পথে গ্রামীণ ঐতিহ্য মাটির তৈরি ঘর। অথচ এক সময় এ অঞ্চলের মানুষের বসবাসের জন্য জনপ্রিয় ছিল এ মাটির ঘর। এখন অধিকাংশ বাড়ি কাঠ ও টিন দিয়ে তৈরি। যারা অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল তারা তৈরি করেছেন ইট-সিমেন্টের পাকা বাড়ি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ উপজেলায় একযুগ আগেও অহরহ এসব ঘরের দেখা মিলতো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে দ্রুত বদলেছে সামাজিক পরিবেশ। প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা গ্রামীণ ঐতিহ্যের নিদর্শন মাটির ঘরের জায়গায় এখন শোভা পাচ্ছে ইট-সুড়কির দালানকোঠা ও কাঠ টিনের তৈরি ঘর। এখন আর কেউ মাটি দিয়ে ঘর তৈরি করতে আগ্রহী হচ্ছে না। যার ফলে গ্রামীণ পরিবেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে পড়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, গ্রামীণ পরিবেশে মাটির ঘর ছিল এক সময়ের রাজপ্রাসাদের মতো। এসব ঘর তৈরি হতো অল্প খরচেই। পরিবারের লোকজন মিলে অল্প কয়েক দিনেই এই ঘর তৈরি করত। কোদাল দিয়ে এঁটেল মাটি ভালোমতো কুপিয়ে ঝুরঝুরে করে নেওয়া হতো। তারপর এই ঝুরঝুরে মাটিতে পরিমাণ মতো পানি মিশিয়ে মাটির খামির তৈরি করা হতো। এই খামির দিয়ে পর্যায়ক্রমে তৈরি হতো দৃষ্টিনন্দন মাটির ঘর। এই ঘর তৈরিতে শ্রম ও সময় কম লাগতো এবং ব্যয়ও হতো কম। মাটির ঘরে শীতকালে কম শীত ও গ্রীষ্মকালে কম গরম লাগতো।
উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের প্রবীণ বাসিন্দা মন্তু মিয়া বলেন, মাটির ঘর তো এখন দেখিই না। আমরা ছোটবেলায়ও দেখেছি প্রতিটি বাড়িতেই দু-একটা মাটির ঘর ছিল। সময় খুব দ্রুতই বদলে যাচ্ছে। মাটির ঘরের স্থান এখন দখল করে নিয়েছে ইট সুড়কির দালানকোঠা আর টিনের তৈরি ঘর।
উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এক সময় অধিকাংশ বাড়িতেই মাটির ঘর ছিল। সে সময় কাদামাটি দিয়ে তৈরি মাটির ঘরে শীত-গ্রীষ্মে বসবাস করায় স্বস্তি ছিল। বর্তমানে এই জনপদের মানুষ তৈরি করছেন টিনের ঘর ও দালানকোঠা। যার ফলে গ্রামীণ পরিবেশ থেকে প্রায় হারিয়ে গেছে গ্রামবাংলার চির চেনা ঐতিহ্য মাটির ঘর।
সম্পাদক : এসএম শামসুল আলম।
ফোন:- ০১৫৫০৬০৯৩০৬, ০১৮২৮৯৫২৬২৬ ইমেইল:- smshamsul.cht@gmail.com
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com